দীর্ঘ শাসনামলে টিএফআই-জেআইসি সেলে বিরোধী মতাদর্শের লোকদের গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেডআই খান পান্না। একইসঙ্গে এই দুই মামলায় পলাতক আসামিদের পক্ষেও স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
রোববার (২৩ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বিচারিক প্যানেল জেডআই খান পান্নার আবেদন মঞ্জুর করে এই নিয়োগ দেন। অন্যান্য সদস্য ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
একই দিনে বেলা সাড়ে ১১টার পর গুমের দুই মামলার শুনানি শুরু হয়। ট্রাইব্যুনাল টিএফআই সেলে গুমের মামলায় ১৭ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানির জন্য আগামী ৩ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করেন। অপর মামলায় ১৩ আসামির বিরুদ্ধে শুনানি হবে ৭ ডিসেম্বর।
বর্তমানে গ্রেপ্তার রয়েছেন ১৩ সেনা কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে রয়েছেন র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজাহার সিদ্দিকী।
শুনানির দিন সকাল থেকে ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ ঘিরে বাড়ানো হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা। পুলিশ ও বিজিবি-র্যাব সদস্যরা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছেন।
গত ৮ অক্টোবর পৃথক দুই মামলায় মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। পরে অভিযোগ আমলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ট্রাইব্যুনাল এ মামলাগুলোর শুনানি পরিচালনার মাধ্যমে রাষ্ট্র ও আদালতের স্বার্থে গ্রেপ্তারকৃত এবং পলাতক আসামিদের ন্যায়বিচারের আওতায় আনার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।
সাননিউজ/এও