পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ঢাকার পরিবহন ও নগর পরিকল্পনার বর্তমান অবস্থা নিয়ে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, শহরের প্রায় সব বাসই “টক্সিক”, অর্থাৎ বিপজ্জনক কালো ধোঁয়া ছড়াচ্ছে, যা নগরের বায়ুদূষণ বৃদ্ধিতে প্রধান কারণ হিসেবে কাজ করছে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব থাকা সত্ত্বেও গণপরিবহন ব্যবস্থার দুরাবস্থা এতটাই চরম যে বাসগুলো ব্যবহারযোগ্য নেই।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, স্মার্ট পরিবহন নীতি কার্যকরভাবে দেখা যায়নি। এর ফলে ঢাকার বায়ুদূষণ নভেম্বর-ডিসেম্বরে বিশ্বের শীর্ষে পৌঁছে যায়। তিনি প্রতিদিন বাসগুলোকে ‘চলন্ত দূষণ-কারখানা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
একই সঙ্গে তিনি মেট্রো স্টেশনের জন্য পার্ক বা উন্মুক্ত স্থান দখল অগ্রহণযোগ্য বলেও সতর্ক করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, উন্মুক্ত স্থান রক্ষা করা বাধ্যতামূলক, কারণ ভূমিকম্প বা অন্যান্য দুর্যোগের সময় আশ্রয় নেওয়ার জায়গা খুবই সীমিত। আনোয়ারা পার্ক ও পান্থকুঞ্জ পার্কে মেট্রো নির্মাণের পরিকল্পনা এই নীতির বিরুদ্ধ।
রিজওয়ানা হাসান টিওডি (Transit-Oriented Development) প্রকল্পকে গুরুত্বপূর্ণ হলেও স্মার্ট পরিবহন নীতির একটি অংশ হিসেবে সীমাবদ্ধ হিসেবে দেখেছেন। তিনি বলেন, নতুন বাজার, স্টেশন বা অবকাঠামো পরিকল্পনার আগে মানুষের প্রয়োজন বোঝা অপরিহার্য। ঢাকার বাজারে বিশৃঙ্খলা ও পার্কিং-চাপ এই প্রকল্পের জটিলতা আরও বাড়ায়।
তিনি বায়ুদূষণ, উন্মুক্ত স্থান সংকট এবং দুর্বল শাসনব্যবস্থার কারণে শহরের নিরাপত্তা ও স্বচ্ছ পরিবেশ বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। রিজওয়ানা হাসান জানিয়েছেন, নিমতলী ও চকবাজারের আগুনের মতো দুর্ঘটনা শিক্ষা দেয়নি এবং রাসায়নিক গুদাম সরানোর প্রকল্পগুলোও ব্যর্থ হচ্ছে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী ও দুর্বল প্রশাসনজনিত কারণে।
পরিচ্ছন্নতা ও সবুজায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, বর্ষায় গাছ লাগালে রক্ষণাবেক্ষণের ঝুঁকি কমে এবং কমিউনিটি অংশগ্রহণ নিশ্চিত হলে প্রকল্পগুলো টেকসই হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, জাইকা ও রাজউকের অংশীদারিত্ব ঢাকার জন্য আরও নিরাপদ গণপরিবহন, খোলা জায়গা ও সবুজায়ন নিশ্চিত করবে।
সাননিউজ/এও