সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দেশের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন রোগীদের ৪১ শতাংশের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক কার্যকারিতা হারাচ্ছে। অতিরিক্ত ও ভুল ব্যবহারের কারণে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সর্বশেষ ‘জাতীয় অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স সার্ভিলেন্স’ প্রতিবেদনে ২০২৪ সালের জুলাই থেকে গত জুন পর্যন্ত ৯৬,৪৭৭ রোগীর নমুনা পরীক্ষা করে এই তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আইসিইউতে ভর্তি রোগীদের মধ্যে পাঁচ ধরনের জীবাণুর বিরুদ্ধে ৭১টি অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হলে মাত্র ৫টির কার্যকারিতা ৮০ শতাংশের বেশি ছিল। এছাড়া ৪১ শতাংশ রোগীর শরীরে প্যান-ড্রাগ-রেজিস্ট্যান্স (পিডিআর) উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
ওয়াচ গ্রুপের অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার ৭৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯১ শতাংশে পৌঁছেছে। এই গ্রুপের ওষুধ অতিরিক্ত ব্যবহারে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স বাড়ার ঝুঁকি রয়েছে। অধ্যাপক জাকির হোসেন হাবিব বলেন, এটি আইসিইউতে বড় ধরনের হুমকি। এছাড়া মাল্টিড্রাগ-রেজিস্ট্যান্ট (এমডিআর) জীবাণু আইসিইউ রোগীদের মধ্যে ৮৯ শতাংশে পাওয়া গেছে।
আইইডিসিআর পরামর্শ দিয়েছে, অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার আগে অবশ্যই কালচার ও সংবেদনশীলতা পরীক্ষা করা এবং সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ জোরদার করতে হবে। এছাড়া ওষুধ ব্যবস্থাপনায় কঠোরতা বাড়ানো এবং হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা অপরিহার্য
বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক শেখ ছাইদুল হক জানান, অনেক মানুষ নিজেরাই ওষুধ খাচ্ছেন এবং অদক্ষ চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনে অ্যান্টিবায়োটিক নিচ্ছেন, যা সমস্যা আরও বাড়াচ্ছে। ডিজিএইচএসের হাসপাতাল পরিচালক আবু হোসেন মঈনুল আহসান বলেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চাপ থাকলেও পরিস্থিতির উন্নয়নে কাজ চলছে।
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স বাড়লে রোগীদের চিকিৎসায় ব্যর্থতার হার, মৃত্যুঝুঁকি এবং চিকিৎসা ব্যয়ও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে।
সাননিউজ/এও