বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে দশ বছর ধরে পরিত্যক্ত পুটিখালী কমিউনিটি ক্লিনিকে চলছে কার্যক্রম। ভবন ধ্বংসের আতঙ্ক নিয়ে সেবা নিচ্ছেন রোগীরা। স্থানীয়দের দাবি—নতুন ভবন নির্মাণ করে গ্রামীণ জনপদের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার পুটিখালী ইউনিয়নের গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে পুটিখালী কমিউনিটি ক্লিনিক কেন্দ্রটির ভবন ১৯৯৭ সালে নির্মিত হয়ে সেখানে চলছে প্রত্যন্ত গ্রামের সাধারণ মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম।
জনগুরুত্বপূর্ণ এ কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে পুটিখালীর সীমান্তবর্তী দৈবজ্ঞহাটি ও বলইবুনিয়া—৩টি ইউনিয়নের ৮ গ্রামের প্রায় ৮/১০ হাজার মানুষ এখান থেকে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করে থাকে।
বিগত ১০ বছর ধরে ক্লিনিকের ভবনটি জরাজীর্ণ অবস্থায়; মূল ভবনের পলেস্তারা খসে পড়ে বেরিয়ে আছে পিলারের কংক্রিটের রড। ছাদে বড় বড় ফাটল ধরে সামান্য বৃষ্টিতে পানি পড়ে কেন্দ্র পরিচালক সিএইচসিপির অফিস কক্ষসহ রোগীসেবা কক্ষগুলো পানিতে তলিয়ে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসা শিশু, বৃদ্ধ ও নারীরা। মূল ভবনটি এখন নিজেই রোগাক্রান্ত হয়ে কোনো মতে দাঁড়িয়ে রয়েছে জীর্ণশীর্ণভাবে। রোগীরা কেন্দ্রে সেবা নিতে এসে থাকছেন সার্বক্ষণিক ভবন ধ্বংসের আতঙ্কে। কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিএইচসিপি তিনিও ঝুঁকি নিয়ে এ কেন্দ্রে সেবা দিচ্ছেন।
মঙ্গলবার এ কেন্দ্রে সেবা নিতে আসা পুটিখালী গ্রামের বৃদ্ধ বেলায়েত মাঝি, হারুন হাওলাদার, মিরাজ শেখসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, বিগত ১০ বছর ধরে ভবনটির এরকম দুরবস্থা—এর কি কোনো পরিবর্তন হবে না? এগুলো দেখার কি কেউ নেই? সরকারের কাছে দাবি—এখানে একটি নতুন ভবন নির্মাণ করে গ্রামের মানুষ যেন স্বাচ্ছন্দ্যে স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারে, তার ব্যবস্থা করা।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাসুদ আলম হাওলাদার, সাবেক মেম্বার বাচ্চু সেখ, কবির আহম্মেদ ও পুটিখালী ইউনিয়ন ইসলামী আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মান্নান খান বলেন, এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবনটি যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে—এর আগে স্বাস্থ্য দপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নজরদারিতে নিয়ে এখানে নতুন ভবন নির্মাণ করে জনগুরুত্বপূর্ণ এ কেন্দ্রটি সচল রাখার জোর দাবি জানাচ্ছি।
পুটিখালী কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিএইচসিপি আল আমীন হাওলাদার বলেন, কেন্দ্রটিতে রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় থাকি। নিজ অর্থায়নে একবার কোনো রকম সংস্কার করে কিছুদিন মূল কক্ষে বসে রোগী দেখেছি। এখন বারান্দায় বসে কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামাল হোসেন মুফতি বলেন, পুটিখালী কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবনটি দীর্ঘদিন জরাজীর্ণ ও পরিত্যক্ত—এ বিষয়টি ইতিমধ্যে জেলা সিভিল সার্জন ও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন দপ্তরে লিখিত চিঠির মাধ্যমে অবহিত করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের পরবর্তী ব্যবস্থার অপেক্ষায় আছি।
সাননিউজ/আরপি