বর্তমানে খুবই পরিচিত নাম বিটরুট। প্রতিদিন সকালে বিটরুটের রস খেলে তা শরীরের জন্য বিস্ময়কর কাজ করতে পারে। গবেষণা অনুসারে, বিটরুটের রসে থাকা নাইট্রেট পেশীতে অক্সিজেন সরবরাহ উন্নত করে, সহনশীলতা বৃদ্ধি করে এবং ব্যায়ামের সময় ক্লান্তি কমায়। বিটরুটের রস খেলে ক্রীড়াবিদদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। বিটরুটের রসে বিটালাইন থাকে, যা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি শরীরের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। এই যৌগগুলো নির্দিষ্ট ক্যান্সার এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগসহ দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমায়।
বিটরুটের জুস কীভাবে তৈরি করবেন
১টি ছোট বিটরুট ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে নিন। ছোট ছোট কিউব করে কেটে একটি ব্লেন্ডার জারে ১/২ ইঞ্চি আদা, ১ চা চামচ লেবুর রস এবং ১/২ কাপ পানি দিন। মসৃণ না হওয়া পর্যন্ত ব্লেন্ড করুন। মিশ্রণটি ছেঁকে নিন। এবার সেই রসে এক চিমটি ব্ল্যাক সল্ট মিশিয়ে পান করুন। তৈরির প্রক্রিয়া তো জানলেন, এবার তবে জেনে নিন প্রতিদিন সকালে বিটরুটের জুস খেলে কী হয়-
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
বিটরুট প্রাকৃতিক নাইট্রেট সমৃদ্ধ, যা শরীর নাইট্রিক অক্সাইডে রূপান্তরিত করে। এটি একটি যৌগ যা রক্তনালীকে শিথিল এবং প্রশস্ত করতে সাহায্য করে। এই প্রক্রিয়াটি রক্ত প্রবাহকে উন্নত করে এবং রক্তচাপের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সকালের তাজা বিটরুটের রস খেলে হৃদরোগ থেকে বাঁচতে সাহায্য করে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার একটি সহজ ও প্রাকৃতিক উপায়।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে
বিটরুটের শটে ক্যালোরি কম থাকে এবং এতে কোনো চর্বি থাকে না। সুতরাং, এটি সকালে পান করার জন্য একটি দুর্দান্ত সংযোজন হতে পারে। সকালে বিটরুটের জুস খেলে তা যথেষ্ট পুষ্টি শরীরে পৌঁছে দেয়, যা শক্তি বৃদ্ধি করে।
পটাশিয়াম সমৃদ্ধ
বিটরুট পটাশিয়াম, খনিজ পদার্থ এবং ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ। যা স্নায়ু এবং পেশীকে সঠিকভাবে কাজ করতে সহায়তা করে। তাই শরীরে পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণের জন্য বিটরুটের জুস খেতে পারেন।
লিভারের জন্য ভালো
বিটরুট তার ডিটক্সিফাইং বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। এতে বিটালাইন এবং বিটেইন রয়েছে। এগুলো এক ধরনের যৌগ যা লিভারকে ভালোভাবে বিষাক্ত পদার্থ প্রক্রিয়া করতে সহায়তা করে। বিটরুট লিভার এনজাইমের কার্যকলাপ বৃদ্ধি করে এবং পিত্ত উৎপাদনে সহায়তা করে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে
বিটরুটে ভিটামিন সি, ফোলেট এবং শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এই পুষ্টিগুলো অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করে ও সুস্থ রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে। সেইসঙ্গে ত্বকের প্রাকৃতিক মেরামত প্রক্রিয়ায়ও সহায়তা করে। যার ফলে ত্বক উজ্জ্বল হয়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
বিটরুট ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, আয়রন এবং জিঙ্কের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থে ভরপুর। যার সবই একটি সুস্থ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এর উজ্জ্বল লাল রঙ আসে বিটালাইন থেকে, যা প্রদাহ কমাতে এবং সামগ্রিক সুস্থতায় সহায়তা করার জন্য পরিচিত শক্তিশালী উদ্ভিদ যৌগ।
হজম উন্নত করে
বিটরুট খাদ্যতালিকাগত ফাইবার এবং নাইট্রেট সমৃদ্ধ, যা সুস্থ হজম এবং অন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করতে পারে। এর প্রাকৃতিক যৌগ পিত্ত প্রবাহকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করে, লিভারকে চর্বি ভাঙতে এবং বর্জ্য অপসারণে সহায়তা করে। এছাড়াও ফাইবার পাচনতন্ত্রকে নিয়মিত এবং সুষম রাখতে সাহায্য করে।
সাননিউজ/ইউকে