শুক্রবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন নিউ ইয়র্ক সিটির নতুন মেয়র জোহরান মামদানী। ট্রাম্প তাকে ডেমোক্র্যাট দলের শক্তিশালী মহলের থেকেও উষ্ণ অভ্যর্থনা দিয়েছেন। এক বামপন্থী সমাজতন্ত্রবাদী মেয়র এবং প্রতিক্রিয়াশীল ডানপন্থী প্রেসিডেন্টের মধ্যে এই সাক্ষাৎ মার্কিন রাজনীতির একটি বিরল এবং পরাবাস্তব ঘটনা হিসেবে ধরা হচ্ছে।
নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনের সময় ট্রাম্প মামদানিকে ‘শতভাগ উন্মাদ কমিউনিস্ট’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন এবং তার বিরুদ্ধে ন্যাশনাল গার্ড পাঠানোর হুমকি দিয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের পর ট্রাম্প শতভাগ সমর্থন দিয়ে তাকে ‘যুক্তিবাদী ব্যক্তি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। ট্রাম্প বলেছেন, “আমি আপনার পাশে থাকব। আমাদের একটি সাক্ষাৎ হয়েছে যা আমাকে অবাক করেছে। আমি তাকে সাহায্য করার আশা করি, আঘাত করার নয়। আমি চাই নিউ ইয়র্ক শহরটি যেন দুর্দান্ত হয়।”
মামদানির রাজনৈতিক কৌশল এবং বাস্তববাদের প্রকাশ পাওয়ায় প্রশাসনও হতবাক। নির্বাচনের পরের দিন তিনি জানান, তার ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যবস্থাপনা মূলত পূর্ববর্তী প্রশাসনের অভিজ্ঞদের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। নিয়োগপ্রাপ্ত পাঁচজন কর্মকর্তার মধ্যে চারজন ইতিপূর্বে অন্যান্য মেয়রের অধীনে কাজ করেছেন।
মেয়র মামদানির দলের বৈশিষ্ট্য হলো তারা কট্টর সমাজতন্ত্রবাদী বা বহিরাগত নয়। বরং তারা এমন ব্যক্তিত্ব যারা নিউ ইয়র্কের রাজনীতিতে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা এবং শহরের আমলাতন্ত্র পরিচালনার দক্ষতা অর্জন করেছেন। ২০১৩ সালের মেয়র ডি ব্লাসিওর ক্ষমতা হস্তান্তর দলের নেত্রী জেনিফার জোন্স অস্টিন বলেছেন, “যা গুরুত্বপূর্ণ হবে, তা হলো রূপান্তরমূলক নেতৃত্ব এবং লেনদেনমূলক নেতৃত্বের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য তৈরি করা।”
মামদানির প্রশাসন যুবশক্তি ও বৈচিত্র্যকে গুরুত্ব দিচ্ছে। তার দলের মুখপাত্র মনিকা ক্লেইন বলেন, “দিন অতিবাহিত করার জন্য আমার একটি জেন জি অভিধান প্রয়োজন।” নির্বাচনের পর থেকে ৬২ হাজারেরও বেশি মানুষ মামদানির প্রশাসনে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, যাদের গড় বয়স মাত্র ২৮ বছর। এই আগ্রহ শুধু মামদানির জনপ্রিয়তারই নয়, বরং ভোটারদের উচ্চ বেকারত্বের সময়ে প্রশাসনের প্রতি প্রত্যাশার প্রতিফলন।
মামদানির এই কৌশল এবং তার দলের বৈচিত্র্য মার্কিন রাজনীতিতে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, বাস্তববাদ এবং প্রতিক্রিয়াশীল প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রতি আকর্ষণশীলতা—এই তিনটি বৈশিষ্ট্য মিলিয়ে মামদানির প্রশাসনকে ‘পরাবাস্তব সাফল্য’ হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে।
সাননিউজ/এও