আজ ভয়াল ২৯ এপ্রিল
পরিবেশ
উপকূল এখনো অরক্ষিত

আজ ভয়াল ২৯ এপ্রিল

সান নিউজ ডেস্ক : আজ দেশের উপকূলবাসীর স্বজন হারানোর সেই ভয়াল ২৯ এপ্রিল। ১৯৯১ সালের এই দিনে এক মহাপ্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় উপকূলীয় পুরো দক্ষিণ চট্টগ্রাম। দুঃসহ স্মৃতিবিজড়িত সেই ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ৩২ বছর পূর্ণ হলো আজ। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম ঘনিয়ে এলেই উপকূলবাসী আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে উঠেন।

আরও পড়ুন : প্রস্তুত হচ্ছে জাতীয় ঈদগাহ

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) ২ হাজার ৩৬০ কোটি টাকার উপকূল সুরক্ষায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। অন্যদিকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের অরক্ষিত বিস্তীর্ণ উপকূল সুরক্ষায় ৩ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুনভাবে প্রণয়নকৃত প্রকল্পের কাজ চলছে ধীরগতিতে। যার ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিস্তৃর্ণ উপকূল আজও রয়ে গেছে অরক্ষিত।

মহাপ্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ের সেই দিনের তাণ্ডবে বঙ্গোপসাগর, কর্ণফুলী ও শঙ্খনদীর উপকূলীয় বাঁশখালী, আনোয়ারা, পটিয়া, বোয়ালখালী, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগাড়াসহ ৭ উপজেলার অন্তত ৫০ হাজার নারী-পুরুষসহ কয়েক লাখ গবাদি পশু মারা যায়।

এছাড়া কয়েক লাখ ঘরবাড়ি, গাছপালা উপড়ে যায়। ওই রাতের তাণ্ডবে কয়েক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়। ২৯ এপ্রিল রাতের সেই বিভীষিকা স্মরণ করে আজও শিউরে ওঠে উপকূলের মানুষ। স্বজন হারানোর বেদনায় তাড়িত হয় তারা।

আরও পড়ুন : এবার ঈদের সড়ক পরিস্থিতি অতীতের চেয়ে ভালো

বাঁশখালীর ছনুয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল হক চৌধুরী জানান, সেই দিনের মহাপ্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে বাঁশখালীর নারী-শিশুসহ প্রায় ৪০ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। আনোয়ারার রায়পুরের সাবেক চেয়ারম্যান আবু ছৈয়দ ও জুইদন্ডির সাবেক চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক হোসাইনি জানান, সেই রাতে আনোয়ারা উপকূল লণ্ডভণ্ড হয়ে ১৬ হাজারের অধিক নারী-পুরুষ মারা গিয়েছিল।

সেই মহাপ্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে বঙ্গোপসাগর, কর্ণফুলী ও শঙ্খনদী বেষ্টিত দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী থেকে বোয়ালখালী হয়ে পূর্ব কালুরঘাট পর্যন্ত প্রায় দু’শত কিলোমিটার উপকূলীয় এলাকা হয়ে পড়ে সম্পূর্ণ অরক্ষিত। ওই সময় থেকে ২০১৪ পর্যন্ত উপকূল সুরক্ষায় বাপাউবো কাজ করলেও দৃশ্যত উপকূল ছিল অরক্ষিতই।

২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নিবার্চনের পরেই দক্ষিণ চট্টগ্রামের উপকূল সুরক্ষায় শত শত কোটি টাকার প্রকল্প প্রণয়ন করে বাপাউবো। ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদে (একনেক) উপকূল সুরক্ষায় দক্ষিণ চট্টগ্রামে বিভিন্ন প্যাকেজের কাজ অনুমোদন লাভ করে।

আরও পড়ুন : ইউক্রেনকে ৩ হাজার কোটি ডলার দিলেন বাইডেন

বর্তমানে দক্ষিণ চট্টগ্রামে ভাঙন ও জলোচ্ছ্বাস ঠেকাতে অনুমোদন পাওয়া ২ হাজার ৩৬০ কোটি টাকার টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। যার ফলে নতুন করে আশার আলো দেখছেন আতঙ্কিত উপকূলবাসী।

স্থানীয়রা জানায়, প্রায় ৩২ বছর পরে এখন টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ চলছে। এতে আমাদের মাঝে বেঁচে থাকার স্বপ্ন নতুন করে জেগে উঠেছে। অপরদিকে যেসব এলাকা আজও অরক্ষিত সেসব এলাকার মানুষ সাগর ও নদীর ভাঙনে আতঙ্কিত রয়েছেন।

ভাঙন প্রতিরোধে ২ হাজার ৩৬০ কোটি টাকার টেকসই বেড়িবাঁধ স্থাপনের কর্মযজ্ঞের মধ্যে বাঁশখালীতে ২ শত ৯৩ কোটি টাকার, সাতকানিয়া লোহাগাড়া ও চন্দনাইশে নদী ড্রেজিংসহ ৩ শত ৩৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকার, আনোয়ারায় ৫ শত ৭৪ কোটি টাকার ও পটিয়ায় চলছে ১ হাজার ১৫৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন সেচ প্রকল্পের কাজ চলছে।

আরও পড়ুন : পাটুরিয়া ঘাটে ফেরি পেতে দীর্ঘ অপেক্ষা

অপরদিকে, বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের চলমান টেকসই কাজের পাশাপাশি অরক্ষিত উপকূল সুরক্ষায় চট্টগ্রাম জুড়ে প্রায় ৩ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে বেড়িবাঁধ, নদী ড্রেজিং ও অবকাঠামোগত নির্মাণের বেশ কিছু প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়। যা এখনো যাচাই-বাছাই পর্যায়েই রয়ে গেছে বলে জানা গেছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির কারণে অরক্ষিত উপকূলবাসী এখনো রয়েছেন উৎকণ্ঠায়।

পাউবো সূত্রে জানা গেছে, ৩ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বোয়ালখালী চন্দনাইশ আনোয়ারা বাঁশখালী ও খাগড়াছড়ি জেলার উপকূল সুরক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ড গৃহীত নতুন প্রকল্প প্রোফাইল (ডিপিপি) এখন পরিকল্পনা কমিশনে পানি উন্নয়ন বোর্ডর সদর দফতরে রয়েছে। এটি নিয়ে যাচাই-বাছাই চলছে।

আরও পড়ুন : জাতিসংঘ মহাসচিবের সফর চলাকালে কিয়েভে হামলা

এ প্রসঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ জামান বলেন, পুরো বাশঁখালীতে এখন টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। চলতি বছরের জুনের মধ্যে বেড়িবাঁধ স্থাপনের সম্পূর্ণ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

এছাড়াও পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-১-এর অনুপম দাশ ও অপু দেব জানিয়েছেন, উপকূল সুরক্ষা ও নদী ড্রেজিং কাজ সন্তোষজনকভাবে এগিয়ে চলছে।

সান নিউজ/এইচএন

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

কোচিং সেন্টারে মিলল বিপুল অস্ত্র-বিস্ফোরক

রাজশাহী নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় একটি বাড়ি থেকে অস্ত্র ও বিস্ফোরক তৈরি সরঞ্জাম...

সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের জামিন ও মামলা বাতিলের আবেদনের শুনানি পেছাল

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে যুবদলকর্মী আবদুল কাইয়ুম হত্য...

কোনো চাঁদাবাজকে বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

কোনো চাঁদাবাজকে বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র...

খাতিরের ঠিকাদারকে কাজ দিতে ডিএনসিসির দরপত্রে ‘কারসাজি’

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) বাতি স্থাপনের কাজ ‘খাতিরের’...

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মালয়েশিয়ার প্রভাব কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ

দীর্ঘদিনের রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা...

চিকিৎসক নেতা নারায়ণ হত্যায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বা...

ভরাডুবির ভয়ে কিছু খুচরা পার্টি নির্বাচন চাচ্ছে না: দুদু

নির্বাচন হলে যাদের ভরাডুবি হবে তারাই নির্বাচন চাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন বি...

রিকশাচালককে কীসের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার, ধানমন্ডি থানার ওসির ব্যাখ্যা তলব

রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ থেকে রিকশাচালক আজিজুর রহমানকে কীসের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার ক...

প্রধান উপদেষ্টা নিজে ক্লিয়ার করেছেন, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে: রিজওয়ানা

নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা...

জুলাই সনদে ‘ধর্মনিরপেক্ষতার’ অবস্থান অস্পষ্ট: ডেভিড বার্গম্যান

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই জাতীয় সনদের সমন্বিত খসড়া পাঠিয়...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা