দারফুরে সহিংসতায় নারী, শিশু ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নির্বিচার হামলার নিন্দা জানিয়ে পোপ লিও বিশ্ব সম্প্রদায়কে পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন
সুদানে চলমান গৃহযুদ্ধে সহিংসতার মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় পোপ চতুর্দশ লিও দেশটিতে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি মানবিক করিডর খোলারও দাবি করেছেন, যাতে নিরীহ মানুষ ত্রাণ ও নিরাপত্তা পেতে পারে।
পোপ সোমবার সেইন্ট পিটার্স স্কোয়ারে দেওয়া অ্যাঞ্জেলাস প্রার্থনায় বলেন, “সুদানের, বিশেষত উত্তর দারফুরের এল-ফাশ শহরের মর্মান্তিক খবরগুলো আমি অত্যন্ত বেদনার সঙ্গে অনুসরণ করছি।” তিনি নারী ও শিশুদের ওপর নির্বিচার সহিংসতা, নিরস্ত্র বেসামরিক মানুষের ওপর হামলা এবং মানবিক উদ্যোগে বাধা দেওয়ার ঘটনা তীব্রভাবে নিন্দা জানান।
গত কয়েক দিনে বিদ্রোহী আধা-সামরিক বাহিনী আরএসএফের সদস্যরা এল-ফাশ শহর দখল করেছে। খবর পাওয়া গেছে, জেনারেল হামদান দাগালোর নেতৃত্বাধীন আরএসএফের সেনারা শহর দখলের সময় নির্বিচার হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। এর ফলে দারফুরের শেষ সেনা ঘাঁটিটি আর সরকারি বাহিনীর হাতে নেই।
পোপ বলেন, আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই গৃহযুদ্ধ সুদানবাসীকে অবর্ণনীয় দুর্দশার মধ্যে ফেলে দিয়েছে, যা গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে নতুন করে যুদ্ধবিরতিতে আসার আহ্বান জানান এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তৎপর হয়ে মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় কূটনৈতিক উদ্যোগ বাড়ানোর পরামর্শ দেন।
নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, সুদানের গৃহযুদ্ধে ইতোমধ্যে দেড় লাখ মানুষ নিহত হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, এক কোটি ৩০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। বহু মানুষ চরম দুর্দশার মধ্যে রয়েছে, যেখানে খাদ্য সংকট এবং ত্রাণের অভাব বিরাজ করছে।
সেপ্টেম্বরে পোপ ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও ক্যাথলিক চার্চকে এই ‘মানবিক বিপর্যয়’ দূর করার জন্য কূটনৈতিক উদ্যোগ ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে, অদ্যাবধি স্বেচ্ছাসেবী ও আন্তর্জাতিক উদ্যোগ সাফল্যজনক হয়নি।
অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে আরএসএফ এল-ফাশ দখল করার পর শহরে নির্বিচার হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট ও অপহরণের খবর পাওয়া গেছে। এ সময় এল-ফাশের শহরের সঙ্গে বহির্বিশ্বের যোগাযোগও কার্যত বন্ধ।
সাননিউজ/এও