জেলা প্রতিনিধি : উজানে ভারি বৃষ্টিপাত ও পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে লালমনিরহাটের ৫ উপজেলার হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন : শিক্ষার্থী-শিশুকে পিষে মারল ‘ভিক্টর’
শুক্রবার (১৪ জুলাই) সকাল ৬ টায় তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২.৫৫ সেন্টিমিটার। যা স্বাভাবিক ৫২.১৫ সেন্টিমিটারের চেয়ে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, শুক্রবার গভীর রাত থেকে তিস্তা নদীর পানি মারাত্বকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে শুক্রবার ও শনিবার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে। এ জন্য সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন : হত্যা মামলায় ৬ জনের যাবজ্জীবন
পাহাড়ি ঢলে তিস্তা, ধরলা, বুড়ি তিস্তা ও সানিয়াজান নদীর পানি বেড়ে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলাসহ জেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে বন্যা দেখা দিয়েছে। ফলে এসব এলাকার প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) নদীগুলোর পানি বাড়তে শুরু করে। এ দিন বিকেলে হাতীবান্ধায় অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজের দোয়ানী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে থাকে।
আরও পড়ুন : ডোবায় ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু
পাউবো সূত্রে জানা যায়, তিস্তা পাড়ের লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভারতের গজলডোবা ব্যারাজের অধিকাংশ গেট খুলে দেওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের দিকে পানি প্রচণ্ড গতিতে ধেয়ে আসছে। আরো কী পরিমাণ পানি আসবে, তা ধারণা করা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন : সংসদ বিলুপ্তের দাবি দুরভিসন্ধিমূলক
এদিকে পানির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারাজের অধিকাংশ গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে তিস্তার পানিতে পাটগ্রামে অবস্থিত বহুল আলোচিত বিলুপ্ত ছিটমহল আঙ্গরপোতা ও দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিঙ্গিমারী, সির্ন্দুনা, পাটিকাপাড়া ও ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের চর এলাকার ১০ গ্রামের প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
এছাড়া কয়েক হাজার একর আমন ধানের বীজতলাসহ অনেক ফসলি জমি পানিতে ডুবে গেছে। ইতিমধ্যে চর এলাকাগুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে গেছে।
আরও পড়ুন : সার্কের মহাসচিব গোলাম সারওয়ার
পানিবন্দী পরিবারগুলোর অভিযোগ, ২ দিন ধরে পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন তারা। এ পর্যন্ত তাদের মাঝে কোনো ত্রাণ বিতরণ করা হয়নি। কেউই তাদের খোঁজ করেনি।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা জানান, তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ কারণে দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ টি গেট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : ভিসানীতি কোনো দলকে টার্গেট করে হয়নি
২ দিন তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে থাকতে পারে বলেও জানান তিনি।
সান নিউজ/এনজে