সারাদেশ

স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ!

মো: মনির হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার: ময়মনসিংহের ত্রিশালের আমীরাবাড়ী ইউনিয়নের কাঁঠালীবন্দ গ্রামে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের অদূরে নামমাত্র মূল্যে কেনা স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের প্রায় ১৮৫ বিঘা জমি এক যুগ ধরে পতিত অবস্থায় রয়েছে।

আরও পড়ুন: চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ

গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীর জন্য নামমাত্র মূল্যে জমি কিনে পতিত রাখায় এলাকাবাসীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জমিদাতা ও স্থানীয় এলাকাবাসী। অন্যদিকে স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ১৫ বিঘা জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে। বাউন্ডারী করে সেসব জমি দখল করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগীরা।

এ নিয়ে জমির মালিকরা পুলিশ সুপার বরাবর আবেদন দিলেও কোন সুরাহা মিলেনি। শুধু ফসলী জমি নয় কবরস্থান দখল করে নেওয়ায় সেখানেও পূর্বপুরুষদের কবর জিয়ারত করতে যেতে পারছেন না স্বজন না। কবরের নির্দিষ্ট চিহ্ন সমূহও নষ্ট করে ফেলা হচ্ছে। কবর স্থানে বার বার সাইনবোর্ড দেওয়া হলেও সাইনবোর্ড তুলে ফেলার অভিযোগ কোম্পানীর বিরুদ্ধে।

আরও পড়ুন: চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ

এ ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটিতে একজন ঠিকাদার ৩ কোটি ৩৫লাখ টাকার বালু সরবরাহ করলে স্ট্যান্ডার্ড কোম্পানীর মেসবাহ উদ্দিন নামের একজন কর্মকর্তা সে টাকা তুলে আত্মসাৎ করায় ওই ঠিকাদার টাকা উত্তোলনের জন্য আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ত্রিশালের আমীরাবাড়ী ইউনিয়নের কাঁঠালীবন্দ গ্রামে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের অদূরে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী স্থাপনের জন্য ২০০৮ সাল থেকে নামমাত্র মূল্যে স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপ কৃষি জমি ক্রয় শুরু করে। ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রায় দেড়শ বিঘা জমি ক্রয় সম্পন্ন করে বাউন্ডারীর কাজ শুরু করেন। এলাকাবাসী মনে করেছিল বাউন্ডারীর কাজ শেষে শুরু হবে কোম্পানীর ফ্যাক্টরীর কাজ। কিন্তু ২০২২সাল পর্যন্ত এভাবেই পড়ে আছে এই জমি। এতে ক্ষুদ্ধ জমিদাতারা। তিন ফসলী এই জমি পতিত থাকায় বছরে হাজার হাজার মন ধান উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে।

আরও পড়ুন: আইনের বাইরে কোনো কাজ করি না

স্থানীয় আব্দুর রহমান জানান,আমরা তিন ভাই মিলে এই কোম্পানীতে ২০ একর জমি দিয়েছি শুধু গার্মেন্টস করবে এ জন্য। একটি গার্মেন্টস হলে এলাকার হাজার হাজার বেকারের

কর্মসংস্থান হবে, আমাদের এলাকা উন্নত হবে। আমরা ভিটেমাটি এমনকি পাকা ঘর বাড়ীও এই কোম্পানীকে দিয়ে অন্যত্র নতুন বাড়ী করেছি। এ কোম্পানী আমাদের ঘরবাড়ী দখল করে নিয়েছে। সেগুলোর ক্ষতিপূরণ দেয়নি। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে জমিগুলো পতিত রেখেছে।

স্থানীয় মকবুল হোসেন জানান,কোম্পানী আমাদের প্রায় ১৫ বিঘা জমি অবৈধভাবে দখল করে নিয়েছে। আমাদেরকে কোন টাকা দেয়নি,আমরা কোন দলিল দেয়নি। এখন আমাদের জমিতে গেলে আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা ও পুলিশ দিয়ে হয়রানী করে।

বুলবুল জানান, আমার ২০শতাংশ জমি জোর করে দখল করে নিয়েছে। আমি গরীব মানুষ। এর বিচার চাই।

রফিকুল আলম জানান, আমার ১৩শতাংশ জমি কোম্পানী জোর করে দখল করে নিয়েছে। কিছু বললে পুলিশ দিয়ে হয়রানী করে। কবরের জমিতেও আমাদের যেতে দেয় না। আমরা খুব কষ্টের মধ্যে আছি।

আরও পড়ুন: আইনের বাইরে কোনো কাজ করি না

স্থানীরা জানান, ২০১৪ সাল থেকে শুরু হয় সীমানা প্রাচীর নিমাণ কাজ। সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজে ইট, বালু, ও কাঠ সরবরাহের কার্যাদেশ পান স্থানীয় জে কে এন্টারপ্রাইজ। চুক্তি অনুযায়ী মালামাল সররাহ করা হয়, নিয়মিত বিল প্রাপ্ত হয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জে কে এন্টার প্রাইজ স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপ অব কোম্পানীর ভিটি বালু দিয়ে মাটি ভরাটের কার্যাদেশটিও পায়। চুক্তি অনুযায়ী ১৪ টাকা ফুট দরে ২৩ লাখ ৯৫ হাজার ৬ শত ৯৭ ফুট বালু সরবরাহ করা হয়। মোট ৩৪টি ভাউচার এর মাধ্যমে ৩ কোটি ৩৫ লাখ ৩৯ হাজার টাকার বিল কোম্পানীতে পাঠায় জে কে এন্টারপ্রাইজ। কোম্পানীর দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা মেসবাহ উদ্দিন কোম্পানী থেকে জাল স্বাক্ষর করে সুকৌশলে গত ৮/০১/২০১৬ তারিখে জে.কে এন্টারপ্রাইজের বিলটি উত্তোলন করেন।

বিলের খোঁজ নিতে গিয়ে জে কে এন্টারপ্রাইজের মালিক খলিলুর রহমান জানতে পারেন তার স্বাক্ষর জাল করে তার বিল উত্তোলন করে নিয়েছেন কোম্পানীর দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা মেসবাহ উদ্দিন। এরপর তিনি কোম্পানীর দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা মেসবাহ উদ্দিনকে কোম্পানী বিষয়টি জানালে তিনি বিল উত্তোলনের কথা স্বীকার করেন এবং একাধিকবার বিল দেওয়ার তারিখ করেও জে কে এন্টারপ্রাইজ এর সত্বাধিকারী খলিলুর রহমানকে টাকা না দিয়ে টালবাহানা শুরু করেন।

এ ব্যাপারে জে কে এন্টারপ্রাইজের মালিক খলিলুর রহমান জানান, বিল প্রদান না করায় গত ৫ জুলাই/২০১৮ তারিখে ত্রিশাল থানায় একটি জিডি করি। যার জিডি নং ২৭৭। সর্বশেষ গত ৩ সেপ্টেম্বর, মেজবাহ উদ্দিন ত্রিশালের আমীরাবাড়ি ইউনিয়নের কাঠালীবন্ধ গ্রামে প্রজেক্ট এলাকায় আসলে আমি বিলের টাকার জন্য চাপ দিলে সে আমার সাথে দুর্ব্যবহার করে এবং এক পার্যায়ে মেসবাহ উদিন টাকা দিতে অস্বীকার করে ও আমাকে হত্যার হুমকি দেয়।

এ ব্যাপরে গত ২০ সেপ্টেম্বর আমি বাদী হয়ে মেজবাহ উদ্দিনসহ ৬ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করি। আদালত মামলাটি সিআইডিকে তদন্ত করার নিদের্শ দিয়েছেন। এ বিষয়ে জানার জন্য মেজবাহ উদ্দিনকে ফোন দিলে বারবার ফোন কেটে দেন একপর্যায়ে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আক্তারুজ্জামান জানান ,এ বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ অভিযোগ করলে আমি ব্যবস্থা নেব। ইন্ড্রাষ্টির জন্য জমি কেনা জমিতে ইন্ড্রাষ্টি হবে। না হলে সেখানে কোন ফসল করা যায় কিনা কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

সান নিউজ/এনকে

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ভোলায় অনুষ্ঠিত হলো প্রাণী প্রদর্শনী মেলা

ভোলা প্রতিনিধি: ‘প্রাণিসম্পদে ভরবো দেশ, গড়বো স্মার্ট ব...

সম্মিলনী বিদ্যালয়ের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ

কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) : ফরিদপুর জেলার সদর ইউনিয়...

বাংলাদেশ স্কাউট দিবস ২০২৪ পালিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটে অনুষ্...

হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয়

লাইফস্টাইল ডেস্ক : দেশে তাপপ্রবাহ বাড়ছে। আর এই গরমে সবচেয়ে ব...

ভাসানচরে এক রোহিঙ্গাকে গলা কেটে হত্যা

নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যা...

মৃত্যুহীন দিনে শনাক্ত ১৬

নিজস্ব প্রতিবেদক : সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৬ জনের শরীরে ক...

সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা

জেলা প্রতিনিধি : চুয়াডাঙ্গায় টানা চতুর্থ দিনের মতো দেশের ও...

ধানের দাম নির্ধারণ করা হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারিভাবে মন্ত্রণালয়ে সভা করে ধানের দাম...

সবজির বাজারে আগুন

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঈদের আমেজ শেষ হ...

শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা শিশু হাসপা...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা