মতামত
নদ-নদী

ব্রহ্মপুত্র: সময় গেলে সাধন হবে না

শেখ রোকন

চীনের 'সুপার ড্যাম' নির্মাণের খবর থিতিয়ে যেতে না যেতেই ভারতের পক্ষে ব্রহ্মপুত্রের প্রবাহ ঘুরিয়ে দেওয়ার খবর সংবাদমাধ্যমে সাড়া ফেলেছে। জুলাইয়ের শেষ রোববার ভারতের আসাম প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা প্রতিবেশী রাজ্য মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, তার রাজ্যে 'বন্যা মোকাবিলা' করতে শিগগিরই এ সংক্রান্ত একটি 'পাইলট প্রকল্প' শুরু হতে যাচ্ছে।

শিলংয়ে অবস্থিত 'নেসাক' (নর্থ ইস্টার্ন স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার) সদর দপ্তরে তিনি যে 'বিশেষ' সভায় যোগ দিতে গিয়েছিলেন, তাতে আরও উপস্থিত ছিলেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়েছে, আসামের ধেমাজি জেলায় ৫ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত বিভিন্ন জলাভূমির দিকে বর্ষাকালে ব্রহ্মপুত্রের 'উদ্বৃত্ত' প্রবাহ ঘুরিয়ে দেওয়া হবে, যাতে ভাটির অংশে বন্যার প্রকোপ কমে।

এ ছাড়া একই উদ্দেশ্যে ব্রহ্মপুত্রের আরও কিছু উপনদীর গভীরতা বাড়ানো হবে। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা 'ইসরো' এবং 'নেসাক' যৌথভাবে ইতোমধ্যে এসব 'জলাধার' চিহ্নিত করার কাজ সম্পন্ন করেছে। (এনডিটিভি অনলাইন, ২৫ জুলাই, ২০২১)।

যে কোনো নদী সঙ্গে উপনদী বা বিল-ঝিলের মতো জলাভূমির যোগাযোগ সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। প্রাকৃতিকভাবে বর্ষাকালে এগুলো নদীর উদ্বৃত্ত প্রবাহ ধারণ করে এবং শুকনো মৌসুমজুড়ে সেগুলো ক্রমেই নদীতে ফিরে যায়। ব্রহ্মপুত্রের মতো বিস্তৃত ও বিনুনীপ্রবাহে নদী ও জলাভূমির মধ্যে লেনা-দেনার এই সম্পর্ক আরও প্রাকৃতিক ও স্বাভাবিক। কিন্তু ধেমাজি জেলাটি ব্রহ্মপুত্রের ডান তীরে অরুণাচলের পার্বত্যাঞ্চলের পাদদেশে ঢালু ভূমিতে অবস্থিত।

এ ছাড়া ডান বা বাম তীরের উপনদীগুলোর বেশিরভাগই পার্বত্য নদী এবং ভৌগোলিকভাবেই সেগুলোর নদী-খাত ঢালু ও খরস্রোতা। এমন একটি এলাকায় জলাধার নির্মাণ মানে বিপুল ইট-পাথর ও কংক্রিটের বিপুল কর্মযজ্ঞ। তারপরও এসব জলাধারে বর্ষাকালে বিপুল ব্রহ্মপুত্রের কমবেশি ১৩ লাখ কিউসেক প্রবাহের কতটুকু ধারণ করতে পারবে- তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

এ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা-অসম্ভাব্যতার মতো কারিগরি দিকগুলো অবশ্য বাংলাদেশের দিক থেকে মূল প্রশ্ন হতে পারে না। আমাদের প্রশ্ন নিছক নীতিগত- এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে 'ভাটির দেশ' হিসেবে বাংলাদেশের অধিকার সংরক্ষিত হচ্ছে কি-না। কারণ ব্রহ্মপুত্র শুধু চীন বা ভারতের একার নদী নয়। তিব্বত অঞ্চলে উৎপন্ন এই নদী ভারতের অরুণাচল ও আসাম এবং বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে পদ্মা ও মেঘনা হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে।

গতিপথ বিবেচনায় ব্রহ্মপুত্র একটি ত্রিদেশীয় এবং অববাহিকা বিবেচনায় ভুটানসহ চতুর্দেশীয় নদ। দুর্ভাগ্য হচ্ছে, তিব্বত এলকায় ড্যাম নির্মাণ করতে গিয়ে বেইজিং যেমন দুই ভাটির দেশ ভারত ও বাংলাদেশের কথা ভাবেনি; তেমনই আসামে আসন্ন জলাধার নির্মাণ করতে গিয়ে ভারতও অপর ভাটির দেশ বাংলাদেশের কথা ভাবছে না।
এ বিষয়ে আমার অভিজ্ঞতার কথা বলি।

আসামের মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরের সপ্তাহেই, গত সোমবার 'ভারত ও চীনের মধ্যে আন্তঃসীমান্ত পানিসম্পদ বিষয়ক সহযোগিতা' শীর্ষক একটি ওয়েবিনার ছিল। আয়োজক ভারতের কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত 'ন্যাশনাল ওয়াটার একাডেমি'। মুখ্য আলোচক ছিলেন ব্রহ্মপুত্র ও বরাক বোর্ডের একজন কমিশনার। আলোচনা শেষে প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালে জানতে চেয়েছিলাম- ভারত-চীন নদী-সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রেক্ষিত নিয়ে তাদের বক্তব্য কী? আসামের মুখ্যমন্ত্রী যে জলাধার নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন, তাতে ভাটির দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে কি-না। কিন্তু এর সদুত্তর পাইনি।

গত কয়েক বছর ধরে ব্রহ্মপুত্রে চীনা ড্যাম নিয়ে যখন কথাবার্তা চলছে, তখন নদী নিয়ে তৎপর ভারতীয় বন্ধুরা প্রায়শ এ বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে 'ভাটির দেশের অধিকার' রক্ষার ব্যাপারে তাগিদ দিতেন। যদিও তার আগের বছর ও দশকগুলোতে আমরা যখন গঙ্গা বা তিস্তার ক্ষেত্রে ভাটির দেশের অধিকারের কথা বলতাম, তাতে খুব একটা সাড়া মিলত না। এখন যখন ভারত নিজেই ব্রহ্মপুত্রে জলাধার নির্মাণ করতে যাচ্ছে, তখন যেন আগের সেই দিনগুলো ফিরে এসেছে।

অথচ ব্রহ্মপুত্রে বাংলাদেশের অধিকার কোনোভাবেই চীন বা ভারতের চেয়ে কম নয়। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বহু মানদণ্ডে বরং বেশি। যেমন চীনের মোট জনসংখ্যার ১ শতাংশ মাত্র ব্রহ্মপুত্র তথা ইয়ারলুং সাংপো অববাহিকায় বাস করে।

আর ভারতের মোট জসংখ্যার মাত্র ৩ শতাংশ বাস করে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায়। অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা অববাহিকায় বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৭০ শতাংশের বাস। ভূখণ্ডের দিক থেকে দেখলে, চীনের মোট আয়তনের ৩ শতাংশজুড়ে বিস্তৃত ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা।

ভারতের মোট আয়তনের ৬ শতাংশ পড়েছে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায়। অন্যদিকে বাংলাদেশের মোট আয়তনের ২৭ শতাংশজুড়ে রয়েছে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা। (সিএনএ অ্যানালাইসিস অ্যান্ড সল্যুশন, ২০১৬, ওয়াশিংটন ডিসি, যুক্তরাষ্ট্র)।
প্রতিবেশগত দিক থেকেও ব্রহ্মপুত্র বাংলাদেশের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটা বোঝা যায় বাংলাদেশর আন্তঃসীমান্ত বা অভিন্ন নদীর মোট প্রবাহের হিসাব থেকে। অনেকেই জানেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দাপ্তরিকভাবে স্বীকৃত ৫৪টি আন্তঃসীমান্ত নদী রয়েছে। এর মধ্যে প্রবাহের দিক থেকে গঙ্গা, তিস্তাসহ বাকি ৫৩টি নদী একত্রে যতখানি; এক ব্রহ্মপুত্রের ভাগ তার চেয়ে বেশি।

সীমান্তের বাইরে থেকে যে প্রবাহ বাংলাদেশে প্রবেশ করে, তার ৬৫ শতাংশই আসে ব্রহ্মপুত্র দিয়ে। এটা সারাবছরের গড় হিসাব। শুকনো মৌসুমের হিসাব ধরলে বাংলাদেশের নদী ব্যবস্থায় ব্রহ্মপুত্রের অবদান আরও বেশি- কমবেশি ৭৫ শতাংশ প্রবাহ বাংলাদেশে প্রবেশ করে এই নদ দিয়ে। (সিএনএ অ্যানালাইসিস অ্যান্ড সল্যুশন, ২০১৬, ওয়াশিংটন ডিসি, যুক্তরাষ্ট্র)। তার মানে, আক্ষরিক অর্থেই একদিকে ব্রহ্মপুত্র, অন্যদিকে বাকি সব অভিন্ন নদী।

বলা বাহুল্য, প্রবাহের এই বিপুল অনুপাতের কারণেই নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রতিবেশ ব্যবস্থায় ব্রহ্মপুত্রের অবদান সচেয়ে বেশি। দেশের প্রায় সব নদীই প্রবাহস্বল্পতায় ভোগার পরও আমাদের প্রতিবেশ ব্যবস্থা যে এখনও সচল, তার কারণ ব্রহ্মপুত্র।

এমনকি গঙ্গায় প্রবাহস্বল্পতার কারণে লবণাক্ততা যতদূর বিস্তৃত হওয়ার আশঙ্কা ছিল, শুধু ব্রহ্মপুত্রের প্রবাহের কারণেই ততদূর হয়নি। কৃষিপ্রধান উত্তরবঙ্গে সেচ কাজে বছরভর যে মাত্রায় ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করা হয়; তার বড় অংশ পুনর্ভরণ ঘটায় বর্ষাকালের ব্রহ্মপুত্র। দুর্ভাগ্যের বিষয়, ব্রহ্মপুত্র নিয়েই যেন বাংলাদেশের মাথাব্যথা সবচেয়ে কম। অথচ, উজানের দেশ চীন ও ভারত যখন এ নদ ঘিরে একতরফা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে, তখন বাংলাদেশেরই সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন ও উচ্চকণ্ঠ হওয়া উচিত ছিল।

আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান ও অভিজ্ঞতায় অন্তত দুই দশক ধরে ক্রমাগত বলে আসছি, গঙ্গা বা তিস্তার চেয়ে ব্রহ্মপুত্রের দিকে আমাদের নজর দেওয়া উচিত। যে আন্তঃসীমান্ত বা অভিন্ন নদ দিয়ে সবেচেয়ে বেশি, বিপুল অধিকাংশ প্রবাহ আসে, সেটাতে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবার আগে মনোযোগী হতে হবে- এই সরল অঙ্ক বোঝার জন্য বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই।

শুধু তাই নয়, এখন পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র কারিগরিভাবে 'ইনট্যাক্ট' নদী। গঙ্গা বা তিস্তায় যেমন পানি প্রত্যাহারের জন্য ব্যারাজের মতো স্থাপনা রয়েছে; ব্রহ্মপুত্রে সেটা এখন পর্যন্ত নেই। কারণ চীনা যে ড্যাম, তা মূলত জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য। এতে প্রবাহ খুব একটা কমবে না। আসামে যে জলাধার নির্মাণের কথা বলা হচ্ছে, সেটাও বর্ষাকালের পানি ধরে রাখার জন্য। যদিও শুকনো মৌসুমেও এতে পানি ধরে রাখা হবে না- সেটা দিব্যি দিয়ে বলা যায় না।

একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। চলতি বছর মার্চের শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পর ৬২ দফা যৌথ ঘোষণা প্রকাশিত হয়েছে। প্রত্যাশা করেছিলাম, চীনের 'সুপার ড্যাম' নির্মাণের তোড়জোড়ের কারণেও হলেও সেখানে ব্রহ্মপুত্র ইস্যু স্থান পাবে।

কিন্তু দেখা যাচ্ছে, গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি নবায়ন, তিস্তার ঝুলে থাকা চুক্তি, ফেনী চুক্তির বাস্তবায়ন, এমনকি আরও সাত নদী (ধরলা, দুধকুমার, মনু, খোয়াই, কুশিয়ারা, গোমতী ও মুহুরী) নিয়ে আলোচনা হলেও ব্রহ্মপুত্রের প্রসঙ্গ নেই।

বিলম্বে হলেও ব্রহ্মপুত্র নিয়ে আমাদের বোধোদয় হোক। এ ক্ষেত্রে সবকিছুর আগে জরুরি নীতিগত অবস্থান- পরিমাণ ও গুণগত দিক থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ নদে বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

কিন্তু নদটি যদি আলোচনার টেবিলেই না আসে, তাহলে অভিন্ন নদে অভিন্ন অধিকার প্রতিষ্ঠার পথ জটিল ও দীর্ঘ পথ আমরা পাড়ি দেব কীভাবে? ফকির লালন শাহ বলে গেছেন- 'সময় গেলে সাধন হবে না।' সময় বয়ে যাচ্ছে।


লেখক ও গবেষক; মহাসচিব, রিভারাইন পিপল

[email protected]

সান নিউজ/এমএম

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ভূমি অফিসে ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল, নীরব প্রশাসন; ফুঁসছে জনগন!

মুন্সীগঞ্জ শহরের উপকণ্ঠ পঞ্চসার ইউনিয়ন ভূমি অফিসের জারিকারক লুৎফা আক্তার (৪৫)...

প্রাকৃতিক উদ্ভিদে নিরাপদ খাদ্যের উৎস !

পার্বত্য চট্টগ্রামের উঁচু–নিচু পাহাড়ে বা সাধারণত জমির আশেপাশে সবজি ক্ষে...

ছাত্রলীগ সভাপতির বসতঘরে আগুন

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার গালুয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি মাছুম বিল্লাহ বাপ্পির...

রামগড়ে অবৈধ ইন্টারনেট সরঞ্জামসহ তিনজন আটক

খাগড়াছড়ির রামগড়ে খান কমপ্লেক্সের চতুর্থ তলার একটি কক্ষ থেকে অবৈধ ইন্টারনেট...

আজ সেই ভয়াল ১৫ নভেম্বর, ১৮ বছরেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি উপকূলবাসী

২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর—দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবনে এক বিভীষিকাময় রাত। ভয়...

মধুখালীতে ৬৫ পিস ইয়াবাসহ আটক যুবক

ফরিদপুরের মধুখালীর কুখ্যাত ডাকাত ও একাধিক মামলার পলাতক আসামি মোঃ রানা (২৬) কে...

হাতের অপারেশন করাতে গিয়ে প্রাণ গেল নারীর

নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীর প্রাইম হসপিটালে ভুল চিকিৎসায় রাবেয়া বেগম (৪৮) নামে...

মাদারীপুরে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সদস্য আটক

মাদারীপুর সরকারি কলেজের নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুস সো...

প্রাকৃতিক উদ্ভিদে নিরাপদ খাদ্যের উৎস !

পার্বত্য চট্টগ্রামের উঁচু–নিচু পাহাড়ে বা সাধারণত জমির আশেপাশে সবজি ক্ষে...

লকডাউনের আজাহার দিনে বিএনপি, রাতে আ. লীগ

মাদারীপুরে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে আওয়ামী লীগের ডাকা ১৩ নভেম্বরের লকডাউন স...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা