বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (৪৭ বিজিবি) কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ পৃথক দুটি বিওপির আয়োজনে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (০৩ ডিসেম্বর) তেতুলবাড়ী বিওপির আয়োজনে তেতুলবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এবং রংমহল বিওপির আয়োজনে খাসমহল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে পৃথক দুটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের (৪৭ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশেদ কামাল রনি এ দুটি সীমান্তে বসবাসরত বাংলাদেশী নাগরিকদের সাথে মতবিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে প্রায় ৪৫০–৪৬০ জন স্থানীয় জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন। দুটি সভাতেই স্থানীয়রা স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করেন।
মতবিনিময় সভায় কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক বলেন, বর্তমানে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতে এসআইআর (SIR: Special Intensive Revision) কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ প্রেক্ষিতে বিএসএফ কর্তৃক সীমান্ত দিয়ে পুশ-ইন করার সম্ভাবনা রয়েছে। সীমান্ত দিয়ে বিএসএফ যাতে পুশ-ইন না করতে পারে সে বিষয়ে তিনি আনসার-ভিডিপিসহ স্থানীয় জনগণের সতর্কতা এবং সহযোগিতার আহবান জানান। পুশ-ইন সম্পর্কে সজাগ থাকা, বিএসএফের গেইট পাহারা দেয়া, সীমান্তের ওপারের আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে বিজিবিকে জানানো এবং পুশ-ইন মোকাবেলায় সকলকে বিজিবির সাথে থাকার জন্য তিনি উদাত্ত আহবান জানান।
এছাড়াও সীমান্ত সুরক্ষায় স্থানীয় জনগণের অপরিহার্য ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, সীমান্ত আইন মেনে চলা এবং যেকোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপ তাৎক্ষণিকভাবে বিজিবিকে জানানো প্রত্যেক নাগরিকের দায়িত্ব।
তিনি আরও বলেন, সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের আইনি জটিলতা, সামাজিক ক্ষতি এবং মাদক চোরাচালানের ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। মাদক, অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ চোরাচালান কিভাবে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে—তাও তিনি বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেন। এসব অপরাধ থেকে দূরে থাকতে এবং অন্যদের সচেতন করতে তিনি স্থানীয়দের প্রতি আহ্বান জানান।
অর্থাৎ শুন্য লাইন অতিক্রম না করা, সন্ধ্যার পর শূন্য লাইনে গমন কিংবা অবস্থান না করা, সকল প্রকার চোরাকারবারীদের (মাদক, স্বর্ণ, গরু, মানুষ ও শিশু পাচারকারী ইত্যাদি) সামাজিকভাবে প্রতিহত করা, মাদককে সামাজিকভাবে বয়কট করা, চোরাকারবারী কিংবা মানব পাচারকারীদের সম্পর্কে বিজিবিকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করা, সীমান্ত দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সকলকে আরো সচেতন হওয়া, শুন্য লাইন বরাবর গবাদি পশু না চড়ানো, সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের মধ্যে ঘাস কাটতে না যাওয়া, ভারতীয় জমি লিজ না নেওয়া কিংবা চাষ না করা এবং অহেতুক সীমান্ত এলাকায় গমন না করার জন্য তিনি সকলকে আহবান জানান।
ভবিষ্যতেও এ ধরনের জনসচেতনতামূলক সভা ও কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে তিনি সকলকে অবহিত করেন এবং বলেন, এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিজিবি ও সাধারণ জনগণের পারস্পরিক সমন্বয় অপরিহার্য।
সাননিউজ/আরপি