ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড মেনে ঘটনাটির দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক এ তথ্য জানান।
ব্রিফিংয়ে স্টিফেন দুজারিক বলেন, ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জাতিসংঘের নজরে এসেছে। এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে মহাসচিব নিহতের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি তুলে ধরে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে উত্তেজনা বাড়ছে। এ অবস্থায় সব পক্ষকে সহিংসতা পরিহার করার আহ্বান জানান তিনি। মহাসচিবের মতে, উত্তেজনা প্রশমিত করা ও সহিংসতা এড়াতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করতে হবে, যাতে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ বজায় থাকে।
এর আগে ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দেয় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন। বিবৃতিতে বাংলাদেশ সরকারকে হত্যাকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে দ্রুত, নিরপেক্ষ, পুঙ্খানুপুঙ্খ ও স্বচ্ছ তদন্ত পরিচালনার আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে ঘটনার জন্য দায়ীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার ফলকার তুর্ক।
এদিকে, শরিফ ওসমান হাদির জানাজা জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় সম্পন্ন হয়েছে। হাদির জানাজার নামাজ পড়ান তার বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক। তার দাফন হবে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশেই।
শহীদ ওসমান হাদির মরদেহের ময়নাতদন্ত আজ বেলা পৌনে ১১টার দিকে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে সম্পন্ন হয়। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ নেওয়া হয় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে। সেখানে গোসলের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজার উদ্দেশ্যে মরদেহ নেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গণসংযোগে অংশ নিতে গেলে চলন্ত একটি মোটরসাইকেল থেকে গুলিবিদ্ধ হন হাদি। গুলিটি তার মাথায় লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর তাকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর রাতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
এরপর ১৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৩ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে শহীদ হাদির মরদেহ সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে। একই দিন সন্ধ্যা ৫টা ৪৯ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মরদেহ বহনকারী ফ্লাইটটি অবতরণ করে।
সাননিউজ/আরপি