সুদানে জাতিসংঘের (ইউএন) শান্তিরক্ষা মিশনের ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ছয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর মধ্যে একজন হলেন লন্ড্রি কর্মচারী মো. সবুজ মিয়া। তার বাড়ি গাইবান্ধার পলাশবাড়ি উপজেলায়। নিহত সবুজ মিয়া পলাশবাড়ি উপজেলার মহদিপুর ইউনিয়নের আমলাগাছি (ছোট ভগবানপুর) গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমান ও ছকিনা বেগমের ছেলে। ছোট বেলায় বাবাকে হারান সবুজ মিয়া।
উপজেলার মহদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফিরোজ আকন্দ বলেন, প্রায় ৭/৮ বছর আগে সবুজ মিয়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে লন্ড্রি কর্মচারী হিসেবে যোগদান করেন। ভাই বোনের মধ্যে সবুজ মিয়া ছোট। তার বড়ো বোনের বিয়ে হয়েছে। তিনি এক বছর আগে নাটোর জেলায় বিয়ে করেন। তার স্ত্রী ও মা বর্তমানে বাড়িতে অবস্থান করছেন। তিন মাস আগে ছুটিতে বাড়িতে এসে পুনরায় কর্মস্থলে যোগ দেন তিনি। সবুজ মিয়ার মৃত্যুর খবরে তার মা, স্ত্রীসহ স্বজনদের মাঝে শোকের মাতম চলছে। একই সঙ্গে পুরো গ্রামজুড়েই নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
সবুজের মা শাকিনা বেগম বলেন, একটাই ছল হামার, তাকেও মারি ফেলল। তাড়াতাড়ি হামার ছলেক ফেরত চাই।
নিহতের স্ত্রী নূপুর আক্তার আর্তনাদ করে বলেন, বিয়ের মাত্র এক বছর আট মাস, তাতেই স্বামীকে হারালাম। আমার জীবনটাই শেষ হয়ে গেল। দ্রুত আমি আমার স্বামীর লাশটি ফেরত চাই।
পলাশবাড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাবের আহমেদ বলেন, নিহতের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। দ্রুত এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
উল্লেখ্য, সেনাবাহিনীতে সবুজ যোগদান করেছেন ২০১০ সালে। সুদানের আবেই অঞ্চলে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেসে গত ১৩ ডিসেম্বর শনিবার স্থানীয় সময় ৩টা ৪০ মিনিট থেকে ৩টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী ড্রোন হামলা চালায়। এতে দায়িত্ব পালনরত ছয়জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হন। এসময় আরও আটজন আহত হন।
সাননিউজ/আরপি