সান নিউজ ডেস্ক: রাশিয়াকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী সংগঠন’ বলে দাবি করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ইউক্রেনের মধ্যাঞ্চলীয় শহর ক্রেমেনচুকের একটি জনবহুল শপিংমলে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর এই মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুর টোলপ্লাজা ফাঁকা
ক্রেমেনচুকের ওই শপিংমলে সোমবার (২৭ জুন) রাশিয়ার চালানো হামলায় ১৬ জন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২৮ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
রাশিয়ার হামলার জবাবে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনের ক্রেমেনচুকের ওই শপিংমলে রাশিয়ার হামলা ‘ইউরোপীয় ইতিহাসে সবচেয়ে বিদ্বেষপূর্ণ সন্ত্রাসী হামলার একটি’। তিনি আরও বলেন, ‘শুধুমাত্র সম্পূর্ণ উন্মাদ সন্ত্রাসীরা, যাদের পৃথিবীতে কোনো স্থান থাকা উচিত নয়, তারাই এমন একটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করতে পারে।’
তার ভাষায়, ‘‘আক্রমণটি ‘অলক্ষ্যে’ চালানো হয়নি বরং তা ছিল ‘পরিকল্পিত আঘাত’।’’
সোমবার ইউক্রেনের মধ্যাঞ্চলীয় শহর ক্রেমেনচুকের একটি জনবহুল শপিং মলে রুশ বাহিনীর ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করে। হামলার সময় ওই শপিং মলটিতে ১ হাজারেরও বেশি মানুষ ছিলেন। প্রাথমিকভাবে হতাহতের তথ্য জানা না গেলেও পরে জানানো হয়, রুশ এই হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত এবং ৪০ জন আহত হয়েছেন।
তবে সময় গড়ানোর সাথে সাথে হতাহতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পায়। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, শপিংমলে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ জনে। মূলত শপিংমলের মতো জায়গায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও এর জেরে হওয়া হতাহতের ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন জেলেনস্কি।
আরও পড়ুন: বেড়েছে মৃত্যু ও শনাক্ত
ইউক্রেনের এই প্রেসিডেন্ট বলেছেন, রাশিয়াকে ‘সন্ত্রাসবাদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষক’ হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। মূলত গত শুক্রবার মার্কিন সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটিতে এই ধরনের একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ‘রাশিয়ান রাষ্ট্র বিশ্বের বৃহত্তম সন্ত্রাসী সংগঠনে পরিণত হয়েছে। এবং এটিই সত্য ও বাস্তবতা। এটিকে আইনিভাবেও বৈধতা দিতে হবে।’
তার ভাষায়, ‘বিশ্বের প্রত্যেককে অবশ্যই জানতে হবে যে, রাশিয়ান তেল কেনা বা পরিবহন করা, রাশিয়ান ব্যাংকগুলোর সাথে যোগাযোগ বজায় রাখা, রাশিয়াকে ট্যাক্স এবং শুল্ক প্রদানের মানে হচ্ছে সন্ত্রাসীদের অর্থ প্রদান করা।’
এদিকে ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবার প্রধান বলেছেন, ক্রেমেনচুক শহরের শপিংমলে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ জনে। এঘটনায় আরও ৫৯ জন আহত হয়েছেন।
সেরহি ক্রুক নামের ইউক্রেনীয় এই কর্মকর্তা টেলিগ্রামে বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত, আমরা ১৬ জন নিহত এবং ৫৯ জন আহতের কথা জানি। আহতদের মধ্যে ২৫ জন হাসপাতালে ভর্তি। হতাহতের এই তথ্য নিয়মিত আপডেট করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: সড়কের পাশে মিলল ২০ কেজি গাঁজা
প্রসঙ্গত, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি বিদ্রোহীদের দুই রাষ্ট্র ‘দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক’ ও ‘লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক’কে স্বীকৃতি দিয়ে শান্তি রক্ষায় ওই অঞ্চলে সেনাবাহিনী পাঠায় রাশিয়া।
পরে ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশপন্থী বিদ্রোহীদের সহায়তার লক্ষ্যে মস্কো স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীকে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার অভিযানের নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত সংঘাত অব্যাহত রয়েছে।
সান নিউজ/এনকে