নিজস্ব প্রতিনিধি, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) : ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় আইন অমান্য করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতা তার ফসলি জমির মাটি বিক্রি করছেন বিভিন্ন ইটভাটায়। তিনি প্রায় দুই একর ফসলি জমি কেটে বিশাল দীঘি খনন করছেন।
শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফরিদপুর জেলা পরিষদের সদস্য ও বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়ন আ'লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাফর সিদ্দিকী আইন না মেনে বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের হাটুভাঙ্গা মীরেরচর মাঠের তার মালিকানাধীন ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে দীঘি খনন করছেন। এতে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ফসলি জমির শ্রেণি পরিবর্তন করা হচ্ছে। এছাড়া খননকৃত ওই দীঘির চারপাশেই ফসলি জমি। এর ফলে খননকৃত মাটি আনা নেয়ার কাজে নিয়োজিত ট্রাকগুলো চলাচলের ফলে একপাশের বিস্তীর্ণ ফসলি জমিও নষ্ট হয়েছে।
এক্সকেভেটর (ভেকু) চালক মামুন শেখ বলেন, গত আড়াই মাস যাবত ঘণ্টা চুক্তিতে এখানে মাটি কাটছি।
মাটি কাটার কাজ তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত ময়না ইউনিয়নের বান্দুগ্রাম নিবাসী আমীর হোসেন জানান, জাফর সিদ্দিকী এখানে ২শ ১৯ শতাংশ জায়গায় পুকুর খনন করে উত্তোলিত মাটি আশপাশের বিভিন্ন ভাটায় বিক্রি করছেন। প্রতি ট্রাক মাটি ৯শ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিদিন এ মাটি টানার কাজে ৭-৮টি ট্রাক নিয়োজিত। নিজের ইটের ভাটায়ও ওই মাটি নিচ্ছেন।
সূত্র মতে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী পুকুর, খাল-বিল, নদ-নদী, চরাঞ্চল, পতিত ও আবাদী জমি থেকে মাটি কাটা নিষিদ্ধ। এছাড়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে নির্মিত উপজেলা, ইউনিয়ন বা গ্রামীণ সড়ক ব্যবহার করে কোন ভারী যানবাহন দিয়ে ইট বা ইটভাটার কাঁচামাল আনা নেয়া নিষিদ্ধ। কিন্তু এর কোন নিয়মই মানছেন না স্থানীয় ওই প্রভাবশালী আ'লীগ নেতা।
এ ব্যাপারে জাফর সিদ্দিকী বলেন, ওই জমিতে ভালো ফসল হয় না। তাই এ ব্যাপারে পুকুর খননের জন্য জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করেছিলাম। তিনি ওই জমির শ্রেণি পরিবর্তন করার জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)র নিকট আবেদন করতে বলেছেন। আবেদন জমা দিয়ে পুকুর খনন করছি।
এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে বোয়ালমারী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারিয়া হকের মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ বলেন, বিষয়টি জানতে পেতে তহশিলদারকে পাঠিয়েছি। তিনি রিপোর্ট দেয়ার পর রিপোর্টের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সান নিউজ/কেএস/কেটি