স্পোর্টস ডেস্ক : আর মাত্র দুই দিন পরই পর্দা উঠছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) নারীদের আসরের। ফ্র্যাঞ্জাইজি ভিত্তিক জনপ্রিয় টুর্নামেন্টটিতে প্রথমবারের মতো খেলছেন সালমা খাতুন। তার দলের নাম ট্রেইলব্লেজার।
বিদেশি দল, আরব আমিরাতে খেলা- যে ভেন্যুতে আগে কখনোই খেলেননি তিনি। নতুন দল, নতুন ভেন্যু, নতুন পরিবেশ। এত নতুনের মধ্যেও নিজেকে দারুণভাবে মানিয়ে নিতে পেরেছেন মূলত নিজের প্রিয় ভাষায় কথা বলতে পেরে।
তার দলের দুই সদস্য ঝুলন গোস্বামী ও রিচা ঘোষ বাঙ্গালি। এই দুজনের সঙ্গে প্রাণখুলে বাংলায় কথা বলতে পারছেন বাংলাদেশি এই অলরাউন্ডার। মাঠের ক্রিকেটে নামার আগে সেই ‘সুবিধার’ কথাও বলছিলেন সালমা- ‘এই দুজনের সঙ্গে আমার আগে থেকেই পরিচয় আছে। মন খুলে তাদের সঙ্গে বাংলায় কথা বলতে পারছি, যখনই দেখা হচ্ছে আমরা বাংলায় কথাবার্তা বলছি। দলে দারুণ সময় কাটছে।’
শারজায় ৪ নভেম্বর থেকে নারীদের তিন দলের এই টুর্নামেন্ট শুরু হচ্ছে। সালমা খাতুনের দল ট্রেইলব্লেজার ৫ নভেম্বর লড়বে ভেলোসিটির বিরুদ্ধে। ভেলেসিটিতে গতবারের মতো এবারো খেলছেন আরেক বাংলাদেশি ক্রিকেটার জাহানারা আলম।
বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটারদের মধ্যে প্রথম প্রজন্মের ক্রিকেটার সালমা খাতুন। অভিজ্ঞতার কোন ঘাটতি নেই। বাংলাদেশ নারী দলের হয়ে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে খেলেছেন। দেশের হয়ে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচের অধিনায়কও ছিলেন তিনি। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৪ উইকেটে জয়ী সেই ম্যাচের সেরা পারফর্মারও ছিলেন সালমা খাতুন। তার ১ উইকেট এবং ৪১ রানের ঝলমলো ইনিংস বাংলাদেশকে ম্যাচ জেতায়। আরো আছে।
তার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ নারী দল প্রথমবারের মতো কোন আন্তর্জাতিক জাতিক ট্রফি জেতে। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপের ফাইনালে হারায় শক্তিশালী ভারতকে। বাংলাদেশ নারী দল এখন পর্যন্ত ১১৩ টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে।
যার ১০৮টি ম্যাচে খেলেছেন সালমা। নেতৃত্ব দিয়েছেন ৮৩টি ম্যাচে। দেশের হয়ে জিতেছেন ২৭টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। আইসিসি’র টি-টোয়েন্টির অলরাউন্ডার র্যাঙ্কিংয়ে নাম্বার ওয়ানও হয়েছিলেন একসময়।
৩০ বছর বয়সী সালমা খাতুন ক্রিকেট মাঠে নিজেই নিজেকে গড়ে তুলেছেন। ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে উঠার সেই সময়ের বর্ণনায় সালমা ক্রিকেটের ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোকে বলছিলেন- ‘ছোটবেলা থেকেই আমি ক্রিকেট ভালবাসি।
নিজেকে বলতাম, ছেলেরা পারলে আমি কেন পারবো না? কেউ আমাকে ব্যাট বল ধরা শেখায়নি। শুরুর দিনে আমি ফাস্ট বোলিং, স্পিন সবই করতাম। এমনকি উইকেটকিপিং করতাম। সালোয়ার-কামিজ পরেই আমি চাচাতো-মামাতো ভাইবোনদের সঙ্গে অথবা মহল্লার বাচ্চাদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলতাম। তারপর আন্তঃজেলা টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ এলো।
খুলনায় কোচ শেখ সালাউদ্দিন আমাকে শুরুর সেই সময় অনেক সহযোগিতা করেছেন। আমাকে খেলার জন্য টি-শার্ট, ট্রাউজার, জুতো কিনে দিয়েছিলেন তার নিজের দোকান থেকে। ২০০৭ সালে মালয়েশিয়া সফরের জন্য প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে আমি সুযোগ পাই। সেই থেকে এখনো খেলে যাচ্ছি।’
সান নিউজ/এম
#আইপিএল #সালমা #সালমা