জাতীয়

‘স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়’

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন ছাড়া দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, আমরা স্বাস্থ্যখাতকে গুরুত্ব দেইনি, অবহেলা করেছি। যার ফলাফল আমরা করোনায় পেয়েছি। করোনা মহামারিতে আমরা কতটা অসহায়, সেটা দেখেছি। শুধু আমরাই নই, পৃথিবীর কোনো দেশই স্বাস্থ্যখাতকে গুরুত্ব দেয়নি।

বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) বেলা ১১টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শহীদ ডা. মিল্টন হলে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। বিএসএমএমইউর ২৪তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নের জন্য আমাদের আরও বেশি এগিয়ে আসা দরকার। করোনা আমাদের দেখিয়েছে স্বাস্থ্যসেবার যদি বিপর্যয় ঘটে, তাহলে মানুষের কী অবস্থা হয়। দেশের সব উন্নয়ন থেমে যায়, দেশে শান্তি থাকে না, সামাজিক অশান্তি সৃষ্টি হয়।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্যখাতে আমাদের বাজেট জিডিপির মাত্র ০.৯%। আমরা কাজ করছি জিডিপিতে এটাকে ৯/১০ শতাংশ করতে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে খুবই আন্তরিক। স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে আমরা কাজ করছি। করোনা মোকাবিলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ও ভালো কাজ করছে। তারা আলাদা করে বড় একটি করোনা ইউনিট স্থাপন করেছে। এখানে টিকা কার্যক্রমও সফলতার সঙ্গে চলছে।

জাহিদ মালেক বলেন, করোনার প্রথম ঢেউ আমরা যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে সামলে নিয়েছিলাম। বর্তমান সময়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণ সম্পর্কে আমরা সচেতন না হলে সামনে আবার করোনার তৃতীয় ঢেউ চলে আসতে পারে। তখন অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়ে দেখা দিতে পারে। এ কারণে করোনার হাত থেকে বাঁচতে চাইলে দেশের প্রতিটি মানুষকে করোনা নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

মন্ত্রী আরও বলেন, ফেব্রুয়ারিতে যখন করোনায় মৃত্যু তিন-চার জনে নেমেছিল, তখন মানুষ ভেবেছিল করোনা দেশ থেকে চলে গেছে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে মানুষ অনীহা দেখাচ্ছিল। কক্সবাজার, সিলেটসহ পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ২৫ থেকে ৩০ লাখ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই ভ্রমণ করেছে। অধিক হারে বিয়ের অনুষ্ঠান, পিকনিকসহ নানা রকম সামাজিক অনুষ্ঠান করা হয়েছে। এসব কারণেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। দিনে প্রায় শত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। সময় মতো সরকার ‘লকডাউন’ ঘোষণা করায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাব হয়ত সামনেই কমে যাবে।

টিকা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আমরা শুরুতে খুব ভালোভাবেই টিকা কার্যক্রম শুরু করেছিলাম। কিন্তু মাঝ পথে ভারত টিকা বন্ধ করে দেওয়ায় আমাদের থেমে যেতে হয়েছে। আপনারা জানেন আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি, তবু বিকল্প হিসেবে আমরা রাশিয়ার টিকা অনুমোদন দিয়েছি, যেন আমাদের টিকা কার্যক্রমকে আরও বেগবান করতে পারি। এছাড়া কেউ যদি দেশে টিকা বানাতে চায়, সে সুযোগও আমরা দিচ্ছি। আমরা বলেছি, যে কেউ টিকা বানালে আমরা তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব। আমাদের দেশে কয়েকটি ফ্যাক্টরি রয়েছে, যেখানে তারা টিকা তৈরি করতে পারে। আমরা চাই তারা টিকা বানিয়ে আমাদের দেশের মানুষকেও দিক এবং দেশের বাইরেও রফতানি করুক।

বিএসএমএমইউ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে স্বাস্থ্যশিক্ষা এবং চিকিৎসা গবেষণায় যতগুলো প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তার অন্যতম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। আমরা জানি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর শিক্ষা হয়, হাজার হাজার শিক্ষার্থী এখানে উচ্চশিক্ষা লাভ করে ডাক্তার হয়। এখান থেকে চিকিৎসক হয়ে সারা দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা ও চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশেই নয়, এই প্রতিষ্ঠানটিতে পাস করে চিকিৎসকরা বিভিন্ন দেশে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। সম্মানজনক অবস্থায় তারা কাজ করছেন। আমরা গর্বিত এ প্রতিষ্ঠানের জন্য। বিভিন্ন দেশ থেকে এসে আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা নিচ্ছেন অনেকে। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চিকিৎসা বিষয়ক গবেষণা আরও উন্নত পর্যায়ে পৌঁছে যাক। যতো ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা লাগে আমরা করব।

বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এছাড়া অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক, প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম. ইকবাল আর্সলান, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ।

সান নিউজ/এসএম

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

কোচিং সেন্টারে মিলল বিপুল অস্ত্র-বিস্ফোরক

রাজশাহী নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় একটি বাড়ি থেকে অস্ত্র ও বিস্ফোরক তৈরি সরঞ্জাম...

কোনো চাঁদাবাজকে বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

কোনো চাঁদাবাজকে বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র...

আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক শেষ, যুদ্ধ স্থগিতের ঘোষণা নেই

যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট...

‘গোপন রাজনীতি’, ছাত্রশিবির ও ডাকসু নির্বাচন নিয়ে উত্তপ্ত ঢাবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গেস্টরুম সংস্কৃতি এবং এই কেন্দ্রিক নির্যাতন গত ১৫ বছরে ছি...

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মালয়েশিয়ার প্রভাব কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ

দীর্ঘদিনের রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা...

ফের ৯৮ বাংলাদেশিকে বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া

ফের কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হয়েছে ৯৮ বাংলাদেশিকে। বিম...

‘গোপন রাজনীতি’, ছাত্রশিবির ও ডাকসু নির্বাচন নিয়ে উত্তপ্ত ঢাবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গেস্টরুম সংস্কৃতি এবং এই কেন্দ্রিক নির্যাতন গত ১৫ বছরে ছি...

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মালয়েশিয়ার প্রভাব কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ

দীর্ঘদিনের রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা...

কোনো চাঁদাবাজকে বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

কোনো চাঁদাবাজকে বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র...

আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক শেষ, যুদ্ধ স্থগিতের ঘোষণা নেই

যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা