আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের জারানওয়ালা শহরে ৫ টি চার্চ ও নিকটবর্তী কয়েক ডজন বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে এখন পর্যন্ত ১৪৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: ভারতের অ্যাপাচি তৈরি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে
কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাঞ্জাব প্রাদেশিক পুলিশের মহা-পরিদর্শক ওসমান আনোয়ার।
তিনি জানান, অপরাধী ও ইন্ধনদাতাদের ধরতে আমাদের অভিযান শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমরা আইনের আওতায় আনার জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
এর আগে গত বুধবার (১৬ আগস্ট) কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে পাকিস্তানের জারানওয়ালার খ্রিস্টান অধ্যুষিত ইসা নগরিতে একদল উন্মত্ত জনতা হামলা চালায়।
আরও পড়ুন: পরিস্থিতি ঘোলা করার চেষ্টা করেছে
এ সময় তারা শহরের বৃহত্তম গির্জা স্যালভেশন আর্মি চার্চসহ ঐ এলাকার ৫ টি গির্জা এবং খ্রিস্টানদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চালায়।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) পাঞ্জাব প্রাদেশিক সরকারের তথ্যমন্ত্রী আমির মির এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, সহিংসতার ঐ ঘটনার পর ইসা নগরির বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঐ এলাকায় কয়েক হাজার পুলিশ ও আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে।
এটা সম্পূর্ণ পূর্ব পরিকল্পিত এবং ষড়যন্ত্রমূলক একটি নাশকতা বলে উল্লেখ করে তিনি আরও জানান, সাধারণ মানুষকে উত্তেজিত করতেই এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা বলছে, টুইটারে এর বেশি আর কিছু বলেননি মির।
আরও পড়ুন: শুক্রবার রাজধানীতে বিএনপি’র গণমিছিল
একটি চার্চের কাছেই বসবাস করতেন জারানওয়ালায় হামলার শিকার খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ফারুক মাসিহ। ৪৭ বছর বয়সী মাসিহর পেশা ট্রাকে রং করা। ইসা নগরির অন্য অনেকের মতো তার বাড়িও পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
মাসিহ জানান, আমার পুরো বাড়ি সম্পূর্ণ জ্বালিয়ে দিয়েছে তারা, কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। এমনকি বসার মতো একটি চেয়ারও নেই, সব ছাই হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, আমি ও আমার ৩ ভাইসহ পরিবারের মোট ১৯ জন সদস্য বাড়িটিতে থাকতাম। এখন আমরা কী করব, কোথায় যাব, কিছুই জানি না। খোদার ওপর ভরসা করা ছাড়া এখন আর কিছুই করার নেই।
আরও পড়ুন: মানবদেহে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন
পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার উল হক টুইটারে জানান, জারানওয়ালার ঘটনায় আমি বাকরুদ্ধ। যারা ধর্মীয় সংখ্যা লঘুদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার ঘৃণ্য চেষ্টা চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে পাকিস্তানে এ নাশকতার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বৃহস্পতিবার দেশটির রাজধানী ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মন্ত্রণালয়ের মুখাপাত্র বেদান্ত প্যাটেল জানান, পাকিস্তানে কোরআন অবমাননার গুজবের জেরে গির্জা ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘর পোড়ানোর ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
সান নিউজ/এনজে