ফিচার

গর্ভবতী নারীর মমি আবিষ্কার!

ফিচার ডেস্ক: বয়স তার ২০০ বছর। আর ২০০ বছর আগে আবিষ্কৃত একটি মমির পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হচ্ছিল। এটি ছিল একজন নারীর মমি। যা প্রায় ২০০০ বছরের পুরনো। মমিটি শরীরে এক্স-রে এবং স্ক্যান করার পর গবেষকরা খানিকটা অবাক হন। কেননা এই নারী মৃত্যুর সময় ছিলেন গর্ভবতী। ২০০০ বছর ধরে অনাগত সন্তানের সঙ্গেই মমি হয়ে আছেন তিনি।

প্রাচীন সভ্যতার সূতিকাগার মিশরের সবচেয়ে রহস্যময় ব্যাপার হচ্ছে এই মমি। পাঁচ হাজার বছর আগে কীভাবে মিশরীয়রা এই আধুনিক ব্যবস্থা আয়ত্ত করেছিল, সেই রহস্যের জাল খোলেনি আজো। প্রায় ২০০ বছর ধরে চলছে মিশর গবেষণা। এর মধ্যে আছে মিশরের পিরামিড এবং মমি। এখন পর্যন্ত প্রায় হাজারেরও বেশ মমি আবিষ্কৃত হয়েছে মিশরের পিরামিড ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায়। গবেষকরা রাত-দিন পার করছে এসব মমি গবেষণায়।

মমি গবেষণায় উঠে এসেছে নানান চমকপ্রদ তথ্য। প্রাচীন মিশরীয়দের খাদ্যাভ্যাস, পোশাক, রোগ-ব্যাধি প্রায় অনেক কিছুই জানা গেছে মমি গবেষণায়। এই প্রথম কোনো গর্ভবতী নারীর মমি পাওয়া গেল। প্রত্নতাত্ত্বিক বিজ্ঞানের জার্নালে আবিষ্কারের বিষয়ে একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, মমিটিকে এক্স-রে এবং সিটি স্ক্যান করে দেখা যায় ওই নারী ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী ছিলেন।

তিনি কত সপ্তাহের গর্ভাবস্থায় ছিলেন তা নির্ধারণের জন্য ভ্রূণের মাথাটি পরিমাপ করা হয়। দেখা যায় যে, মারা যাওয়ার সময় তিনি ২৬ থেকে ৩০ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভবতী ছিলেন।

এটিই প্রথম কোনো গর্ভবতী নারীর মমি। এর আগে তুতানখামুনের সমাধিতে শিশুদের মমি পাওয়া গেছে। তবে মমিকৃত কোনো গর্ভবতী নারীর সমাধি পাওয়া যায়নি। সন্তানকে মায়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করা হয়। তখনও এই ভাবনা এবং আবেগ ছিল মানুষের মধ্যে।

তাই নারীর মৃত্যু হলে তার সঙ্গে অনাগত সন্তানকেও মমি করে মায়ের সঙ্গে রাখা হয়। এছাড়াও মিশরীয়রা মৃত্যুর পরের জীবনে বিশ্বাস করত। তাদের বিশ্বাস ছিল, মৃত্যুর পর মানুষের আরেক জীবন শুরু হয়। যেখানে তারা এখনকার মতোই সুখ শান্তি ভোগ করতে পারবে। সেখানেও তাদের পরিবার হবে।

মমির শরীর স্ক্যান করার পর ভ্রূণের সন্ধান পান গবেষকরা

ধারণা করা হয় এই মমি প্রাচীন শহর থিবসের রয়েল সমাধি থেকে এসেছিল। এই নারী সমাজের একজন অভিজাত সদস্য ছিলেন। গবেষকদের মতে তার মমিযুক্ত শরীরটি যত্ন সহকারে কাপড়ের মধ্যে আবৃত ছিল। কফিন ছিল সূর্যের দেবতা হোরাসের চার পুত্রের ছবিযুক্ত।

১৮০০ সালের দিকে এই মমিটি থেবসে আবিষ্কার করা হয়েছিল। খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতাব্দীতে থিবস ছিল একটি সমৃদ্ধ শহর। এরপর মমিটি ১৮২৬ সালে ওয়ারশায় আনা হয় এবং বর্তমানে এটি জাতীয় জাদুঘরের প্রাচীন শিল্প গ্যালারীটিতে প্রদর্শিত হচ্ছে।

কী কারণে ওই নারী মারা গিয়েছেন তা জানার জন্য গবেষণা করছেন গবেষকরা

এই মমিটি গবেষণায় কেন এতো সময় লাগলো। এমন প্রশ্নের জবাবে গবেষকরা বলছেন, মমিটির কফিনের উপরের লেখা পড়ে জানা যায় এটি একজন পুরোহিতের মমি। এছাড়াও মমিটির কোনো লিঙ্গ ছিল না। তখন এটি একটি পুরুষের মমি হিসেবেই রাখা হয়। তবে পরবর্তিতে এক সময় দেখা যায় মমিটির স্তন এবং লম্বা চুল রয়েছে।

এরপরের ধাপ অর্থাৎ সিটি স্ক্যান এবং এক্স-রের পর জানা যায় এটি আসলে একজন গর্ভবতী নারীর মমি। তার পেটের ভেতর কাপড়ের মধ্যে কিছু একটা ছিল যার ছোট্ট একটি পা বেরিয়ে ছিল। এটি আসলে ছিল ভ্রূণের। তবে ওই নারীর মৃত্যুর কারণ এবং তার সঠিক পরিচয় এখনও জানা সম্ভব হয়নি। এই গবেষণাটি করছেন পোল্যান্ডের একদল অভিজ্ঞ গবেষক।

আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, এই নারীর কফিনের উপর লেখা ছিল এটি একজন পুরোহিতের মমি

ধারণা করা হয়, গর্ভাবস্তার কোনো জটিলতার কারণে তিনি মারা গিয়েছিলেন। কেননা অতীতে এবং বর্তমানেও গর্ভাবস্থায় নারীদের মৃত্যুর সংখ্যা মোটামুটি। আর সেসময় গর্ভবতী নারীদের কেমন ধরনের চিকিৎসা দেয়া হত তা নিয়েও চলছে গবেষণা। আশা করা যায় খুব শীঘ্রই জানা যাবে এই সব রহস্যের কারণ।

সূত্র: অ্যানসাইন্ট অরিজিন

সাননিউজ/এএসএম

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ঢাকায় এলেন, সফরের কর্মসূচী 

পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার দুই দিনের সফরে আজ শন...

ফুটবল বিশ্বকাপের ড্রয়ের তারিখ ঘোষণা করলেন ট্রাম্প 

ছেলেদের ২০২৬ বিশ্বকাপ ফুটবলে গ্রুপ পর্বের ড্র অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৫ ডিসেম্বর য...

মাইলস্টোনে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের এক মাস পর তাসনিয়ার মৃত্যু

রাজধানী উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের...

জনগণ নির্বাচনমুখী হলে কোনো ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জনগণ নির্বাচনমুখী হলে কোনো ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্...

ডাকসু নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হলে সব বলে দেব : ঢাবি উপাচার্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে...

জীবন থেকে কলম: বিভুরঞ্জনের অসমাপ্ত গল্প

বিভুরঞ্জনকে আমি তার শৈশবকাল থেকেই চিনি। আমাদের বামপন্থী আন্দোলনের একটি শক্তিশ...

যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম বাংলাদেশি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরিফুল

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীতে পদোন্নতি পেয়ে ব্রিগেডিয়া...

সংবিধানে পিআর পদ্ধতি নেই, সংবিধানের বাইরে যেতে পারি না : সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছেন, আনুপাতিক পদ্ধতি...

ইসরায়েলি হামলা বাড়ছে, গাজায় আরও ৭১ ফিলিস্তিনি নিহত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের লাগাতার হামলায় নতুন করে আরও অন্তত...

মাইলস্টোনে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের এক মাস পর তাসনিয়ার মৃত্যু

রাজধানী উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা