সান নিউজ ডেস্ক: রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা রাবি শিক্ষার্থীদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করায় তাকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছে শিক্ষার্থীরা। শনিবার (২৩ অক্টোবর) রাতে ফজলে হোসেন বাদশার এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রাবি শিক্ষার্থীরা এই ঘোষণা দেয়।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত
এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী শাহরিয়ারের মৃত্যুর ঘটনায় রামেকের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মানববন্ধনে ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, আমরা হাসপাতালের পক্ষ থেকে বলতে চাই, যে ছেলেটি মারা গেছে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে, তার পালস ছিল না এটা প্রমাণিত হয়ে গেছে। এ জন্য কোনো ডাক্তারদের আর নতুন করে সার্টিফিকেট দেওয়ার দরকার নেই। হত্যা করে আপনারা এনেছিলেন। আর পরিবারকে হুমকি দিয়ে আপনারাই ডেডবডি নিয়ে গেছেন পোস্টমর্টেম ছাড়া। আমরা হাসপাতালের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করেছি। আমরা চাই, পোস্টমর্টেম হোক, কবর থেকে ডেডবডি তুলে পোস্টমর্টেম করা হোক।
আর পুলিশকে আমরা বলতে চাই, সেই রাতে কারা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসেছিল, তাদের ভিডিও বহু জায়গায় আছে। তাদের চিহ্নিত করা হোক। তারা কে? তাদের পরিচয় কী? তারা কোন উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছিল? কেন ইন্টার্ন ডাক্তারদের ওপর তারা হামলা চালিয়েছে? আমাদের এই হাসপাতাল শুধু রাজশাহী জেলার চিকিৎসা করে না, ১০টি জেলার সাধারণ মানুষের চিকিৎসা করে। আজ আমি আমাদের সকল সিনিয়র প্রফেসর, চিকিৎসক, নার্স, কলেজের প্রিন্সিপাল, ডিরেক্টর এবং পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে বলছি, যারা হামলা চালিয়েছে তাদের খুঁজে বের করার জন্য একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক পুলিশের পক্ষ থেকে, গোয়েন্দা বিভাগের পক্ষ থেকে। যাদের ছবি আছে তাদের বের করে নিয়ে এসে তাদের মুখ থেকে সেই স্বীকারোক্তি আদায় করা হোক।
আরও পড়ুন: মেরিন ইঞ্জিনিয়ারের মরদেহ উদ্ধার
ফজলে হোসেন বাদশার এমন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, রাবি শিক্ষার্থী শাহরিয়ারের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে ফজলে হোসেন বাদশার বক্তব্য উস্কানিমূলক। দায়িত্বশীল চেয়ারে বসে উনি সরাসরি শিক্ষার্থীদের খুনি বানিয়ে দিলেন। আমরাও চেয়েছিলাম ময়নাতদন্ত হোক কিন্তু শাহরিয়ারের পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার না করা হয়েছে। উনি না জেনেই এমন উস্কানিমূলক বক্তব্যে আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তার প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করছি। সেইসঙ্গে উস্কানিমূলক বক্তব্যের কারণে যতক্ষণ ক্ষমা না চাইবেন তাকে মতিহারের সবুজ চত্বরে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হলো।
এর আগে বুধবার রাত ৮টার দিকে রাবির শহীদ হবিবুর রহমান হলের তৃতীয় তলার বারান্দা থেকে পড়ে শিক্ষার্থী এমজিএম শাহরিয়ার গুরুতর আহত হন। তাকে রামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: সেতুর সঙ্গে লঞ্চের ধাক্কায় নিহত ৩
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, রামেকে নেওয়ার ৩৫ মিনিট পর বিনা চিকিৎসায় আহত শাহরিয়ারকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রামেক হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডের সামনে ও পরিচালক কক্ষের সামনে ভাঙচুর করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় ইন্টার্ন চিকিৎসক, হাসপাতাল স্টাফরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। হামলায় ৫ শিক্ষার্থী আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে একজনের মাথা ফেটে গেছে ও আরেকজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। অন্যদিকে ইটার্ন চিকিৎসকদের দাবি, রাবি শিক্ষার্থীরা তাদের লাঞ্ছিত করেছেন।
সান নিউজ/কেএমএল