নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ : জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করার মুন্সীগঞ্জ শহরতলী থেকে যাত্রী নিয়ে যাওয়া আসা করা এক মাত্র বাস সার্ভিস দিঘীরপাড় পরিবহন লিঃ শনিবার (৬ আগষ্ট) সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে। এদিকে দূরপাল্লার বাস ভাড়া বৃদ্ধি করায় পাওয়া যাচ্ছে না দূরপাল্লার যাত্রী। এতে বন্ধ হওয়ার পথে সেসব পরিবহন গুলোও।
আরও পড়ুন : ডিজেল-গ্যাসের দাম কমালো শ্রীলঙ্কা
শনিবার সকাল ১০ টার দিকে মুন্সীগঞ্জ শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে এলাকায় গিয়ে দেখা যায় দিঘীরপাড় পরিবহনের টিকিট কাউন্টার বন্ধ। যাত্রীরা এসে ফেরত যাচ্ছেন।
এ সময় আশরাফ হোসেন নামে এক যাত্রী বলেন, প্রতিদিন ব্যবসায়ীক কাজে বাসে ঢাকা যাতায়াত করি। সকালে এসে দেখি বাস বন্ধ। তেলের দাম রাতে বাড়লো। বাস বন্ধ হলো, এটাতো কোন সমাধান নয়।
শহরের হাটলক্ষীগঞ্জ এলাকায় (লঞ্চঘাট রোড) দিঘীরপাড় পরিবহনের বাস গুলো তালাবদ্ধ করে সারি করে, বসিয়ে রাখা হয়েছে।
এসময় পরিবহনটির চালক মুরাদ হোসেন বলেন, মুন্সীগঞ্জ-গুলিস্থান সড়ক পথে তাদের ৫০ টি বাস চলাচর করে। ভাড়া ছিল ৭০ টাকা। রাতে হঠাৎ তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। আমরা ভাড়া বাড়াতে পারেনি। ভাড়া বেশি চাইলেই যাত্রীদের সাথে তর্কে জড়াতে হবে।এমনকি হাতাহাতিও হতে পারে। তাই আজকে মুন্সীগঞ্জ থেকে আমাদের একটি বাস ছেড়ে যায়নি। পরিবহন মালিক সমিতির সিদ্ধান্ত ছাড়া বাস চলাচল করবে না।
রুমার স্পেশাল দিয়ে মুন্সীগঞ্জ থেকে রংপুর, কুঁড়িগ্রামে যাত্রী আনা দেওয়া করা হয়। বাসটি ৪০ সিটের। বাস থাকলেও ছিলনা কোন যাত্রী।
এখানকার দায়িত্বে থাকা স্থানীয় প্রতিনিধি মো. কবির হোসেন বলেন, তেলের দাম ৪০-৫০ ভাগের মত বাড়ালো। সরকার বাসের ভাড়া বৃদ্ধি করলোনা। এপথে পথে আগে ভাড়া ৫০০- সাড়ে ৫০০ টাকা নেওয়া হতো। এখন সেটি সাড়ে ৭০০ টাকা করা হয়েছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত টিকিট বিক্রি নেই। আজ গাড়ি ছাড়ার সম্ভবনা কম।
তিশা এন্টারপ্রাইজের মুন্সীগঞ্জের দায়িত্বে থাকা মোহাম্মদ হোসেন বলেন, তাদের বাস মুক্তারপুর থেকে কু্ঁড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী পর্যন্ত যায়। বাসের ভাড়া ৫০০ টাকা ছিল। আজকে পর্যন্ত এ ভাড়ায় রয়েছে। সকাল থেকে কোনো যাত্রী নেই তাদের।
নদী পরিবহনের ব্যবস্থাপক মো. রতন বলেন সকাল থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত প্রতিদিন তারা অন্তত ২৫ টি টিকিট বিক্রি করেন। আজকে একটি টিকিট বিক্রি হয়নি।
এর কারণ হিসেবে তিনি জানান, আগে মুন্সিগঞ্জ থেকে রংপুরে ভাড়া ছিল ৫০০ থেকে সাড়ে ৫০০ টাকা। আজকে ৭০০ টাকা চাওয়া হয়। যাত্রীরা ভাড়া জিজ্ঞেস করেই চলে যাচ্ছেন।
এদিকে সদরের মুক্তারপুরে স্ট্যান্ডে লেগুনায় ভাড়া বাড়েনি, যাত্রী তোলা হচ্ছে বেশি। মুন্সীগঞ্জ থেকে নারায়ণগঞ্জ এ যাওয়ার জন্য, মুক্তারপুর স্ট্যান্ডে ৫১ টি লেগুনা রয়েছে। এসব লেগুনার ভাড়া আগের মতই ৪০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। সিটের তুলনায় যাত্রী বেশি নেওয়া হচ্ছে।
মুক্তারপুর লেগুনায় স্ট্যান্ডার সুপারভাইজার সেন্টু মোল্লা বলেন, আমরা ভাড়া বাড়াই নি। ভাড়া বাড়াতে গেলেই যাত্রীদের সাথে তর্ক বিতর্কে জড়াতে হবে। তবে ৫ জনের সিটে ৬ জন করে নিচ্ছি।তাতেই নানা ধরনের কথা শুনতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন : ঢাকায় মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সঙ্কায় সিএনজি চালকরা, গণপরিবহন গুলো বন্ধ থাকায় যাত্রী চাপ পড়েছে সিএনজি চালিত রিকশার উপর। মুন্সীগঞ্জ থেকে ঢাকা -নারায়ণগঞ্জ সড়কপথে সিএনজি করে যাতায়াত করছেন যাত্রীরা। যাত্রী বেশি থাকায় খুশি সিএনজি চালকরা। তবে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
সিএনজি চালক মোহাম্মদ হালিম বলেন, বাস বন্ধ। অন্য দিনের তুলনায় আজকে যাত্রী সংখ্যা বেশি। তবে তিনি বলেন, তেলের দাম বাড়ায় বাসের মালিক এবং চালকরা এখন যেমন চিন্তিত রয়েছে। আমরা চিন্তিত, কবে জানি আমাদের গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দেয়।
দিঘীরপাড় পরিবহনে লি: সাধারণ সম্পাদক মো. নুর হোসেন বেপারীকে বাস বন্ধের বিষয়ে একাধিক তার ব্যবহত মোবাইল ফোনে কল করলে রিসিভ করেন নি। আবারও করলে, তিনি ফোন কেটে দেন।
সান নিউজ/এমআর