শওকত জামান, জামালপুর: জামালপুরের মেলান্দহে ধর্ষণের শিকার হয়ে দশম শ্রেণির এক ছাত্রী ও মাদকাসক্ত ভাইয়ের মারধরের শিকার হয়ে অষ্টম শ্রেণির আরেক ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন: মধ্যবিত্ত মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে
মেলান্দহ পৌর এলাকার শাহজাতপুরের দশম শ্রেণির ছাত্রী আশা মনিকে (২০) রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যায় তামিম আহমেদ খান স্বপন ও তার সাঙ্গ পাঙ্গরা। পরে তারা একটি রুমে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষণের পর ভিডিও স্যোসাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয় ধর্ষকরা। মান-সন্মানের ভয়ে ওই স্কুল ছাত্রী নিজ বাড়িতে ঘরের ধর্ণার সাথে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
শুক্রবার (১১ মার্চ) সকালে মেলান্দহের পৌর এলাকার শাহজাতপুর থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার মেলান্দহ থানা পুলিশ। পরে নিহতের মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহত আশা মনি শাহজাতপুর গ্রামের আবু মিয়ার মেয়ে। সে মালঞ্চ এম এ গফুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। ধর্ষক স্বপন মেলান্দহের চর বসন্ত গ্রামের খোকা মিয়ার ছেলে।
আরও পড়ুন: ফের ইউক্রেনের পরমাণু কেন্দ্রে হামলা
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আশা মনি স্কুলে আশা যাওয়ার পথে স্বপন ও তার সঙ্গী-সাথীরা উত্তক্ত করতো। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) স্কুলে যাওয়ার পথে আশা মনিকে তুলে নিয়ে একটি রুমে শারীরিক নির্যাতনের পর ধর্ষণ করে স্বপন। ধর্ষণের ঘটনা মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে ধর্ষকরা। ধর্ষনের ঘটনা জানাজানি করলে ভিডিও স্যোসাল মিডিয়ায় ভাইরাল করা হবে আশা মনিকে হুমকি দেয় স্বপন। পরে মান-সন্মানের ভয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ঘরের ধর্ণার সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।
আরও পড়ুন: দাম বেশি নিলে কল করুন ১৬১২১-এ
মেলান্দহ থানার ওসি মোঃ মাঈদুল ইসলাম জানান, নিহতের বাবা আবু মিয়া বাদী হয়ে সম্ভ্রমহানির অভিযোগে তামিম আহমেদ খান স্বপনকে আসামি করে মেলান্দহ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে স্বপন পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে, জামালপুরের ঝিনাই ব্রিজ এলাকা থেকে ট্রেনে কাটা জিহিন খাতুন (১৮) নামে এক যুবতীর মরদেহ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় উদ্ধার করেছে জিআরপি থানা পুলিশ।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে রুশ বিমান হামলায় নিহত ৩
জিহিন মেলান্দহ উপজেলার চরবানিপাকুরিয়া ইউনিয়নের চরপলিশা উত্তরপাড়া গ্রামের মো. জিন্নাহ মন্ডলের মেয়ে। সে সাধুপুর জেএম উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী।
শুক্রবার (১১ মার্চ) সকালে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভোজ্যতেলের ভ্যাট প্রত্যাহার
এ ঘটনায় স্থানীয়রা বলছে, ভাইয়ের সঙ্গে ঝগড়া করে অভিমানে আত্মহত্যা করেছে ওই যুবতী। অপরদিকে, পরিবারের দাবি, বেশ কয়েক বছর ধরে জিহিন মানসিক ভারসাম্যহীন।
পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভোরে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয় জিহিন। কিছুক্ষণ পর বাড়ির অদূরে ঝিনাই ব্রিজ এলাকায় রেল লাইনের উপর লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: সরকার চেতনার ক্ষুরধার বাহক
তবে এলাকার অনেকেই বলেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মাদকাসক্ত আনিস তার বোন জিহিনের কাছে তার মার রেখে যাওয়া ট্রাংকের চাবি দিতে বলে। চাবি না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে তার ভাই জিহিনকে বেদম মারধর করে। মার খেয়ে রাগে ক্ষোভে আমার মুখ আর দেখতে পারবে না বলে রাতেই তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় জিহিন। সকালে ঝিনাই ব্রিজ এলাকায় তার ট্রেনে কাটা মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা জিআরপি থানায় খবর দেয়।
জামালপুর জিআরপি থানার এসআই মিলন জানিয়েছে, সকালে ঢাকাগামী আন্তঃনগর ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে ওই যুবতীর মৃত্যু হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সান নিউজ/এমকেএইচ