সান নিউজ ডেস্ক: আবারও ইউক্রেনের একটি পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে রুশ সেনারা বলে অভিযোগ করেছে পূর্ব ইউরোপের দেশটি। শুক্রবার (১১ মার্চ) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। একইসঙ্গে মস্কো পারমাণবিক সন্ত্রাস চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছে দেশটি।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে ৬ হাজার রুশ সেনা নিহত
ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক নিয়ন্ত্রক পরিদর্শক সংস্থা জানিয়েছে, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর খারকিভে অবস্থিত ওই পারমাণবিক স্থাপনায় বৃহস্পতিবার রাতে হামলা চালায় রুশ সামরিক বাহিনী। রুশ সেনাদের কামানের গোলাবর্ষণের কারণে পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রটির বিদুৎ চলে যায় এবং এতে করে সেটি বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রে সর্বশেষ এই হামলার ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর এখনও পাওয়া যায়নি এবং রাশিয়াও এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে এই ইস্যুতে কোনো মন্তব্য করেনি।
এর আগে গত ৩ মার্চ দক্ষিণ-পূর্ব ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক কেন্দ্র রুশ সামরিক দখল করে নেয়। দখলের আগে রুশ সেনাদের হামলায় পরমাণু কেন্দ্রটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে অভিযোগ ওঠে।
এছাড়াও বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইএইএ বলেছে, রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর দখল করে নেওয়া ইউক্রেনের চেরনোবিল পরমাণু কেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় বর্জ্য সুবিধার সাথে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলে তাদের জানানো হয়েছে।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ১৯৮৬ সালেল ২৬ এপ্রিল ভয়াবহ পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটে। ওই দিনটি ‘চেরনোবিলের বিপর্যয়’ হিসেবে পরিচিত। সোভিয়েতের পতনের পর চেরনোবিল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বর্তমান ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্ত হয়। এই পারমাণবিক দুর্ঘটনাকে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ও বিপর্যয় হিসেবে মনে করা হয়ে থাকে।
এদিকে, ইউক্রেনে রাসায়নিক অস্ত্র তৈরির দাবি অযৌক্তিক জানিয়ে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেন, রাশিয়ার এসব প্রচারণায় সমর্থন দিচ্ছে চীন।
আরও পড়ুন: আমিরাতের বড় বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বিষয়টি নিয়ে বলেন, মার্কিন জীবাণু অস্ত্র গবেষণাগার ও ইউক্রেনের রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি নিয়ে রুশ দাবি অযৌক্তিক। রাশিয়া এখন এসব মিথ্যা দাবি করছে। আর মস্কোর এসব প্রচারণায় সমর্থন দিচ্ছে চীন।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি বিদ্রোহীদের দুই রাষ্ট্র ‘দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক’ ও ‘লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক’কে স্বীকৃতি দিয়ে শান্তি রক্ষায় ওই অঞ্চলে সেনাবাহিনী পাঠায় রাশিয়া।
পরে ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশপন্থী বিদ্রোহীদের সহায়তার লক্ষ্যে মস্কো স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীকে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার অভিযানের নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
সান নিউজ/এনকে