আগামীকাল ২৫ ডিসেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরছেন। দীর্ঘ ১৮ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটতে যাচ্ছে তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে। এ উপলক্ষে রাজধানীর পূর্বাচল ৩০০ ফিট এলাকায় ‘স্বদেশ প্রত্যাবর্তন’ অনুষ্ঠানে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।
তার দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। এর ব্যতিক্রম নয় উত্তরাঞ্চলের জেলা রংপুরও। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রংপুর মহানগরীসহ জেলার আট উপজেলা থেকে অন্তত ৫০ হাজার নেতাকর্মী ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
বাস, মাইক্রোবাস, ট্রেন ও ব্যক্তিগত পরিবহনে তারা ঢাকায় যাবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
বুধবার বিকেলে নগরীর আলমনগর সমবায় মাঠ থেকে রংপুর সদর-৩ আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামুর নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা ঢাকার পথে যাত্রা শুরু করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্পেন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকিরুল ইসলাম জাকি, মহানগর বিএনপির সদস্য সালেকুজ্জামান সালেক, রেজাউল ইসলাম লাবলু, জামিল খান, ইঞ্জিনিয়ার আশিকুর রহমান তুহিন, রফিকুল ইসলাম, কাজী পেনন, জেলা যুবদলের সভাপতি নাজমুল আলম নাজু, জেলা বিএনপির সদস্য হারুন উর রশিদ হারুন, মাসুক জালাল রাহাত, আবু হানিফ, অ্যাডভোকেট শফি কামাল, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহ মাসুদ রানা, সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন সরকারসহ মহানগর ও জেলা বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী।
দলীয় সূত্র জানায়, মহানগর, জেলা ও সদর উপজেলা বিএনপি এবং যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল, তাঁতি দল, ওলামা দল, মহিলা দল, শ্রমিক দল ও জাসাসসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অর্ধশতাধিক বাসযোগে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। আরও কিছু নেতাকর্মী রাতের মধ্যে ঢাকায় যাওয়ার কথা রয়েছে।
নেতারা জানান, গত সোমবার ও মঙ্গলবার কয়েক হাজার নেতাকর্মী আগেভাগেই ঢাকায় পৌঁছে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়েছেন।
রংপুর মহানগর ও জেলা বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনের মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীরা প্রত্যেকে কমপক্ষে পাঁচ হাজার করে নেতাকর্মী ও সমর্থক নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। দু’দিন আগ থেকেই বিভিন্ন উপজেলা থেকে বাস, ট্রেন ও মাইক্রোবাসে করে নেতাকর্মীরা ঢাকায় যেতে শুরু করেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে যাওয়া নেতাকর্মীদের বেশির ভাগই দলবদ্ধভাবে যাচ্ছেন। ঢাকায় অবস্থান ও অন্যান্য ব্যয়ভার বহন করছেন দলের শীর্ষ নেতারা। কেউ কেউ আবার ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিজস্ব পরিবহনে ঢাকায় যাচ্ছেন।
তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে রংপুরের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিনই মিছিল ও সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শহর থেকে গ্রামগঞ্জ—সবখানেই উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
রংপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব নুর হাসান সুমন বলেন, “তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে দেশের চলমান সংকট থেকে জনগণের মুক্তির পথ তৈরি হবে। এ কারণে শুধু দলীয় নেতাকর্মী নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যেও ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে।”
স্পেন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকিরুল ইসলাম জাকি বলেন, “রিকশাচালক, ভ্যানচালক, সাধারণ ব্যবসায়ীসহ রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নন—এমন অনেক মানুষও তারেক রহমানকে একনজর দেখতে আমাদের সঙ্গে ঢাকায় যেতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।”
এদিকে রংপুর বাসস্ট্যান্ড ও রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ঢাকাগামী অধিকাংশ বাস ও ট্রেনের অগ্রিম টিকিট ইতোমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে।
রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিম বারী রাজ বলেন, “আমাদের সমিতি থেকে ২৫টি বাস রিজার্ভ করা হয়েছে। এখন খালি পরিবহন পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়েছে।”
রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু বলেন, “তারেক রহমানকে রাজকীয় সংবর্ধনা জানাতে ঢাকায় জনস্রোত নামবে। মহানগর থেকে অন্তত ১০ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছি। ইতোমধ্যে ২৫টি বাস রিজার্ভ করা হয়েছে।”
সাননিউজ/এসএ