তৃণমূল পর্যায়ে জনগণের সেবা নিশ্চিত করে জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সরাসরি ভূমিকা রাখে স্থানীয় সরকার, তথা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি)। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব হলো স্থানীয় সেবা প্রদান, যেমন বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা এবং মাতৃত্বকালীন ভাতা বিতরণ। এছাড়া জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন, ওয়ারিশ সনদ এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সেবা প্রদানেও তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার ১৫ নং মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নে গত ২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে চেয়ারম্যান অনুপস্থিত থাকার কারণে সেবা প্রত্যাশী ইউনিয়নবাসী চরম বিপাকে পড়েছেন। আগের ইউপি সদস্যকে অপসারণের পর এই কার্যক্রমগুলো স্থবির হয়ে পড়েছে। ফলে তৃণমূলের জনগণ বিভিন্ন সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত ও হয়রানির শিকার হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভুক্তভোগী সেবা প্রত্যাশী বলেন, এখানে টাকার বিনিময়ে সকল সেবা পাওয়া যায়, এবং তার জন্য যথেষ্ট অর্থ ও সময় অতিবাহিত করতে হয়। তারপরও কোনো কাজের সমাধান হয় না। জন্ম নিবন্ধন সনদ, মৃত্যুর নিবন্ধন সনদ, ওয়ারিশ সনদ, ট্রেড লাইসেন্স, বিভিন্ন ধরনের প্রত্যয়ন পত্র সহ গ্রাম আদালতের সালিশ ব্যবস্থা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য সেবা প্রত্যাশী জনগণ ইউনিয়ন পরিষদের দ্বারস্থ হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর ও অন্যান্য কাজের জন্য ইউনিয়নবাসী প্রতিনিয়ত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে এবং তাদের গুরুত্বপূর্ণ কাজের বিঘ্ন ঘটছে।
একজন ভুক্তভোগী বলেন, টাকার বিনিময়ে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর পাওয়া যায়। সাধারণত ৫ থেকে ৭ দিন অপেক্ষা করতে হয়। আর টাকার পরিমাণ বেশি দিলে ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর সম্বলিত যেকোনো ধরনের সনদ পাওয়া যায়।
জানা গেছে, স্থানীয় সরকার কাঠামোর নিম্ন স্তর হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ। এখান থেকেই সাধারণ জনগণ সকল প্রকার নাগরিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকে। সাধারণ সেবা প্রত্যাশী ইউনিয়নবাসী সেবার নামে দিনের পর দিন আর্থিক ও মানসিকভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে। গরীব এবং সাধারণ সেবা প্রত্যাশী মানুষ যারা অর্থভাবে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর সম্বলিত সনদ নিতে সক্ষম নয়, তারা দিনের পর দিন ইউনিয়ন পরিষদের বারান্দায় ঘুরছেন।
এমত অবস্থায় স্থানীয়দের মতে, দ্রুত সদর ইউনিয়নের জন্য একজন প্রশাসক (অ্যাডমিনিস্ট্রেটর) নিয়োগ দিলে ইউনিয়নবাসীর দীর্ঘদিনের কষ্ট লাঘব হবে।
স্থানীয়দের দাবি, ইউনিয়নবাসীর ভোগান্তি নিরসনে দ্রুত একজন প্রশাসক নিয়োগ করা প্রয়োজন। এতে ইউনিয়নের প্রশাসনিক কার্যক্রম সচল হবে এবং সাধারণ মানুষ আবারও নাগরিক সেবায় প্রবেশাধিকার পাবেন।
সাননিউজ/আরপি