একটি ইজিবাইক, কয়েকটি কিস্তি, আর তীব্র অভাব—এই নিয়েই চলছিল জরিনা ও আল আমিনের সংসার। শেষমেশ ভালোবাসা ও বিষাদের এক মর্মান্তিক পরিণতিতে শেষ হলো তাদের জীবনের গল্প।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর এলাকার আল আমিন (২৫) ও তার স্ত্রী জরিনা বেগম (২০) রাতে একসাথে ‘কেরির ট্যাবলেট’ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
রবিবার (২৫ মে) রাত ১০টার দিকে পরিবারের লোকজন দুজনকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরিনা জরুরি বিভাগেই মারা যান। কিছুটা সময় লড়ে সোমবার রাত ১টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন আল আমিন।
তাদের সংসারে রয়েছে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে শিশু। এখন তারা মা বাবার স্নেহ থেকে শুধু বঞ্চিতই নয়, সারা জীবনের জন্য এতিমও হলেন।
জরিনার ভাই আনোয়ার হোসেন জানান, অভাব-অনটন ও সংসারের টানাপোড়েন তাদের প্রতিনিয়ত পুড়িয়ে দিচ্ছিল। কিস্তিতে কেনা ইজিবাইকটি কয়েক দিন আগে আল আমিন বিক্রি করে দেন। এরপর শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। এই দুঃখ, রাগ ও অপ্রাপ্তির হতাশা থেকেই তারা একসাথে আত্মহননের পথ বেছে নেন।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, “অভাব-অনটন ও মানসিক কষ্ট থেকেই এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তাদের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।”
তাদের মৃত্যুতে এলাকায় এবং পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কান্নায় আশপাশের পরিবেশ ভারি হয়ে গেছে। প্রতিবেশীরা বলছেন, এমন মৃত্যু দেখতে হবে ভাবতেই পারছেন না তারা। জীবনযুদ্ধে হেরে গেছেন এক দম্পতি, রেখে গেছেন শোক, অভাব আর দুটি অনাথ শিশু।
সাননিউজ/ইউকে