স্পোর্টস ডেস্ক : লাল বলের খেলায় অর্থাৎ টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেকের পর ২২ বছর অতিক্রম করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু এখনো তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। যা নিয়ে চিন্তিত ক্রিকেটমহল।
আরও পড়ুন : সংক্রমণ রোধে সরকারের ৬ নির্দেশনা
সম্প্রতি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে শোচনীয় হার পেয়েছে লাল সবুজের পতাকাধারীরা। এমন অবস্থায় নতুন করে পুরোনো প্রশ্ন উঠেছে, টাইগাররা আদৌ টেস্ট খেলার যোগ্য?
বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এ নিয়ে সেন্ট লুসিয়ায় সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত কথা বলেছেন বলে সংবাদ প্রকাশ করেছে বিবিসি। কেন টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের এই হাল, এ থেকে উত্তরণের উপায় কি, আদৌ উত্তরণ করা সম্ভব?
সাকিব আল হাসান বলেন, ‘শুধু খেলোয়াড়দের দোষ দিলে হবে না, আমাদের দেশের সিস্টেমটাই এমন। আপনি কবে দেখছেন যে ৩০ হাজার দর্শক টেস্ট ম্যাচ দেখতেছে? ইংল্যান্ডে কিন্তু প্রতি ম্যাচেই এমন দেখা যায়। টেস্টের সংস্কৃতিটা আমাদের দেশে ছিল না কখনো, এখনো নেই। কিন্তু নাই বলে যে হবে না সেটাও না। ওই জিনিসটা চেঞ্জ করা আমাদের একটা বড় দায়িত্ব। সেটার জন্য সবাই মিলে একসঙ্গে যদি পরিকল্পনা করে এগোনো যায়, তাহলে কিছু হয়তো সম্ভব। তা না হলে আসলে খুব বেশিদূর আগানো সম্ভব হবে না। যেহেতু সংস্কৃতি নেই।’
আরও পড়ুন : বাইডেনের স্ত্রী ও মেয়ে রাশিয়ায় নিষিদ্ধ
এই অলরাউন্ডার বলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেটকে যে আমরা খুব বেশি মূল্যায়ণ করি তা আমি বলবো না। এটা হতে পারে যে আমরা রেজাল্টও ভালো করি না। এ কারণে মূল্যায়ণ পাইনি। কিন্তু একটার সঙ্গে আরেকটার সম্পর্ক আছে। দুইটাকে একসঙ্গে যোগসূত্র করতে হবে। তখন ভালো কিছু করা সম্ভব।’
‘এটা নিশ্চিত করতে হবে যেন আমরা দেশের মাটিতে আগে ভালো খেলি, ধারাবাহিকভাবে। আমাদের জন্য এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সবাই মিলে বসে যদি কোনো একটা পরিকল্পনা করে সামনের দিকে আগাই, তাহলে আমার ধারণা এক থেকে দেড় বছর সময় পেলে ধারাবাহিকভাবে ভালো রেজাল্ট করা সম্ভব। বলবো না যে টেস্ট ম্যাচ জিততেই হবে। পৃথিবীতে যদি দেখেন, যখনই কোনো দল অ্যাওয়ে সিরিজ খেলে, তারা কিন্তু আন্ডারডগ হিসেবেই খেলে। এখন নিউজিল্যান্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়ন। ওরাও বাইরের সিরিজগুলো খেলতে আসলে হেরে যায়। ইংল্যান্ডও যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজে আসছে হেরে যাচ্ছে এবং অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের ক্ষেত্রে একই। আবার ভারতে অন্য দল গেলে তারাও হারে,’ যোগ করেন টেস্ট অধিনায়ক।
আরও পড়ুন : জাপানের সঙ্গে ১১৪০০ কোটির ঋণচুক্তি
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যেন ঘরের মাঠে না হারি এটা নিশ্চিত করতে হবে। হয় জিতবো নয়তো ড্র করবো। এই উন্নতিটা হলে এটা আমাদের অনেক দূর নিয়ে যাবে বাইরের পারফরম্যান্সগুলাতে। তখন হয়তো আমরা নাও জিততে পারি। কিন্তু অন্তত প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটটা খেলবো। যেটা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়।’
সাকিব ঘাটতির বিষয়ে বলেন, ‘উন্নতি সব বিভাগেই করতে হবে। টেস্ট ম্যাচ জিততে হলে সব বিভাগেই উন্নতি করতে হবে। এটা ভালো যে সামনে বড় একটা গ্যাপ আছে (নভেম্বর পর্যন্ত)। টেস্টের জন্য আগ্রহী বা টেস্ট খেলতে চায় তাদের যার যার জায়গা থেকে এই উন্নতিগুলা করতে হবে। উন্নতি ছাড়া আর কোনো উপায় নেই আমাদের ভালো কিছু করার। এমন কোনো সেটাপ খেলোয়াড়ও নেই যে তাদের আনলে এসে ভালো করবে। যারা আছি, হয়তো বাইরে আরও ২-৪ জন আছি, সবাই মিলে যদি একসঙ্গে পরিকল্পনা করে আগাতে পারি, তাহলে হয়তো ভালো কিছু করা সম্ভব। তা না হলে এতদিন ধরে যা হয়ে আসছে, খুব বেশি পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা নেই।’
আরও পড়ুন : দেশে ২৩ লাখ শিশু অটিজমে ভুগছে
বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার এ ক্রিকেটার বলেন, ‘আমাদের বেশকিছু জায়গায় পরিবর্তন আনতে হবে। সেটার জন্য আমাদের নিজেদের চিন্তাগত পরিবর্তনটাও খুব জরুরি। সেই জায়গাগুলো নিয়ে আসলে কাজ করার আছে। যেহেতু আমাদের হাতে পাঁচ মাসের মতো একটা সময় আছে। সবাই বসে, কথাবার্তা বলে সিদ্ধান্তগুলা নেওয়া যাবে।’
সান নিউজ/এইচএন