জাতীয়
ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ১৬তম বার্ষিকী

ভয়াল ২১শে আগস্ট আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ভয়াল-বিভীষিকাময় ২১শে আগস্ট আজ। রাজনৈতিক ইতিহাসে ২১ আগস্ট একটি কলঙ্কময় দিন। মৃত্যু-ধ্বংস-রক্তস্রোতের নারকীয় গ্রেনেড হামলার ১৬তম বার্ষিকী। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের ‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিবিরোধী’ সমাবেশে অকল্পনীয় এক নারকীয় গ্রেনেড হামলার ঘটনা বাংলাদেশে এক কলঙ্কময় অধ্যায়ের জন্ম দেয়।

আজ শুক্রবার (২১ আগস্ট) শ্রদ্ধাবনত চিত্তে ইতিহাসের ভয়াবহতম গ্রেনেড হামলার ১৬তম বার্ষিকী পালন করবে পুরো জাতি।

অভিযোগ রয়েছে, মূলত আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করতে বিএনপি-জামায়াত তথা চার দলীয় জোট সরকার রাষ্টযন্ত্র ব্যবহার করে নৃশংসতম গ্রেনেড হামলা চালায়।

গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করতে সেদিন শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল ঘাতকচক্র। ঘাতকের গ্রেনেড হামলায় রীতিমতো রক্তগঙ্গা বইয়ে গিয়েছিল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের প্রাঙ্গণ। সন্ত্রাসবিরোধী আওয়ামী লীগের শান্তির সমাবেশকে ঘিরে কোলাহলপূর্ণ বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউ মুহূর্তেই পরিণত হয়েছিল বীভৎস মৃত্যুপুরীতে। সুপরিকল্পিত ও ঘৃণ্য এই গ্রেনেড হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত ও শোকাবহ আগস্টে আরেকটি ১৫ আগস্ট সৃষ্টির অপচেষ্টা করেছিল পরাজিত ঘাতকচক্র। তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে হায়েনাদের হামলার ধরনও ছিল রক্তাক্ত ১৫ আগস্টের মতোই।

ভয়াল সেই হামলায় প্রাণে বেঁচে গেলেও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দু’কানের স্বাভাবিক শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সেদিনের গ্রেনেড হামলায় আহত সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানকেও ওইদিন তাঁর প্রিয়পত্নী আইভি রহমানকে হারানোর শোক নিয়েই এ পৃথিবী থেকে চলে যেতে হয়েছে না ফেরার দেশে। আহত ৫ শতাধিক নেতাকর্মী দেহে স্প্লিন্টার নিয়ে, হাত-পা-চোখ হারিয়ে জীবন্মৃত অবস্থায় অভিশপ্ত জীবন কাটাচ্ছেন। অসংখ্য নেতাকর্মীকে চিরদিনের জন্য বরণ করতে হয়েছে পঙ্গুত্ব, অন্ধত্ব। তাদের কেউ কেউ আর স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাননি।

বীভৎস ওই হামলার ঘটনায় দেশে-বিদেশে গভীর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করলেও বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে মামলাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে এবং আলামত নষ্ট করার নানা চক্রান্ত হয়।

এই লোমহর্ষক গ্রেনেড হামলার ঘটনা ধামাচাপা, ভিন্ন খাতে প্রবাহিত ও আলামত নষ্টসহ হেন কোন কাজ নেই যা করে যায়নি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার। হাওয়া ভবনে বসে তখন জজ মিয়ার নাটক সাজানোর ঘটনা এখন দেশবাসীর মুখে মুখে। বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসে ২১ আগস্ট মামলা অধিকতর তদন্ত শেষ করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, এই হামলায় ব্যবহৃত গ্রেনেডের উৎসের সন্ধান পেয়েছে তারা। তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের অনেক রাঘববোয়ালদের জড়িত থাকার প্রমাণও তাদের হাতে।

দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহন করেছে।

সেদিন যা ঘটেছিল

সেদিনটি ছিল শনিবার। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও তত্কালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা। বিকাল ৪টার দিকে সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশের পর সারাদেশে বোমা হামলায় নিহতদের স্মরণে শোক মিছিলের কর্মসূচি ছিল। বিকাল সাড়ে ৪টা নাগাদ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ এলাকা পরিণত হয় জনসমুদ্রে। শেখ হাসিনা বিকাল ৫টার দিকে সমাবেশস্থলে পৌঁছান। বুলেটপ্রুফ মার্সিডিজ বেঞ্জ জিপ থেকে নেমে নিরাপত্তা কর্মী বেষ্টিত অবস্থায় তিনি দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে একটি ট্রাকের ওপর তৈরি অস্থায়ী মঞ্চে উঠে বক্তৃতা শুরু করেন। বক্তৃতায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী দেশব্যাপী অব্যাহত বোমা হামলার বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। ২০ মিনিটের বক্তৃতা শেষে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ উচ্চারণ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তার হাতে থাকা একটি কাগজ ভাঁজ করতে করতে এগোচ্ছিলের মঞ্চ ট্রাক থেকে নামার সিঁড়ির কাছে। সঙ্গে সঙ্গে দক্ষিণ দিক থেকে মঞ্চকে লক্ষ্য করে একটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়। ঘড়ির কাঁটায় তখন ৫টা ২২ মিনিট। গ্রেনেডটি মঞ্চের পাশে রাস্তার ওপর পড়ে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। এরপর একে একে আরো ১২টি গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয়। মুহূর্তের মধ্যে পুরো এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। আতঙ্কে মানুষ দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করে।

গ্রেনেডের আঘাতে মঞ্চের নিচে রাস্তার ওপরে বসা বেগম আইভি রহমানসহ অসংখ্য মানুষ লুটিয়ে পড়েন। ঘাতকদের প্রধান লক্ষ্যই ছিল শেখ হাসিনা। পরিস্থিতির তাত্পর্য বুঝতে পেরে মঞ্চে উপস্থিত ঢাকার মেয়র মোহাম্মদ হানিফ এবং শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত দেহরক্ষী তাত্ক্ষণিকভাবে এক মানবঢাল তৈরি করে শেখ হাসিনাকে গ্রেনেডের হাত থেকে রক্ষা করেন। তবে নিক্ষিপ্ত তিনটি গ্রেনেড অবিস্ফোরিত থেকে যায়। মেয়র হানিফের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়ায় অস্ত্রোপচার করার কথা থাকলেও গ্রেনেডের স্প্লিন্টার শরীরে থাকার কারণে তার অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হয়নি। পরে তিনি ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা যান।

সান নিউজ/ কেবিএ

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

গজারিয়ায় পুলিশ-সাংবাদিককে মারধর

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: উপজে...

ধানের বাম্পার ফলনেও শঙ্কায় কৃষক

রংপুর ব্যুরো: নানা প্রতিকূলতার মধ...

এবার গ্লোবাল রাউন্ডে ইন্টারন্যাশনাল স্কুল

নিজস্ব প্রতিবেদক: আঞ্চলিক রাউন্ডে...

ডাস্ট অ্যালার্জির লক্ষণ 

লাইফস্টাইল ডেস্ক: ডাস্ট অ্যালার্জি অতি পরিচিত একটি সমস্যা। প...

টিভিতে আজকের খেলা

স্পোর্টস ডেস্ক: প্রতিদিনের মতো আজ বুধবার (৮ মে) বেশ কিছু খেল...

বজ্রপাতে ৮ গরুর মৃত্যু

জেলা প্রতিনিধি : রাজশাহীর পবা উপজেলায় বজ্রপাতে আটটি গরুর মৃত...

ইসলামী ব্যাংকের হজ বুথ উদ্বোধন

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি হজযাত্রীদের...

উপজেলা নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবি...

সড়কে যান চলাচলে নির্দেশিকা জারি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সড়কে দুর্ঘটনা ক...

বিএনপির নির্বাচন বর্জন আত্মহননমূলক

নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো বিএনপির...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা