জাতীয়

চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডির দুই বছর আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার দুই বছর পূর্ণ হলো আজ। ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সেখানকার ওয়াহেদ ম্যানশন থেকে আশপাশে আগুন ছড়িয়ে ৭১ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল। দুই বছর আগের এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড থেকে বেঁচে যাওয়া মানুষগুলোর এখনো দিন কাটে সেই রাতের বিভীষিকা মাথায় নিয়ে।

ঘটনার দুইবছর পার হলেও পুলিশ তদন্ত শেষ করতে পারেনি। চার্জশিট দিতে পারেনি। এদিকে, জামিনে বের হয়ে ওয়াহেদ ম্যানশনের দুই মালিক সংস্কার কাজ করছেন সেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া ভবনের। তবে এখনো বিচার ও ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ নিহতের স্বজনরা।

চুড়িহাট্টায় ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে হঠাৎ বিকট শব্দে সিলিন্ডারের বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ওয়াহেদ ম্যানশনসহ আশপাশের ভবনে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ওয়াহেদ ম্যানশনে থাকা অবৈধ কেমিক্যালের কারণে আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এ আগুনে যানজটে আটকে থাকা পিকআপ, প্রাইভেট কার, রিকশা, ঠেলাগাড়ি, মোটরসাইকেলসহ শতাধিক যানবাহন পুড়ে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই যানজটে আটকে থাকা অর্ধশতাধিক মানুষ প্রাণ হারান। নিমেষে চুড়িহাট্টা মোড় হয়ে ওঠে মৃত্যুকূপ। আগুন লাগার ১৪ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। ঘটনাস্থলেই লাশ হন ৬৭ জন। পরে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭১ জনে।

এ ঘটনার পরদিন এলাকার বাসিন্দা মো. আসিফ চকবাজার থানায় মামলা করেন। মামলায় ওয়াহেদ ম্যানশনের দুই মালিকে মো. হাসান ও সোহেল ওরফে শহীদসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়। ওই বছরের ৭ এপ্রিল হাসান ও শহীদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে অবশ্য তারা জামিনে মুক্তি পান।

এদিকে, ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দায়ী কেমিক্যাল গোডাউনের (গুদাম) মালিকদের দুই বছরেও শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ বলছে, ভুল নাম-ঠিকানা দিয়ে চুড়িহাট্টার হাজি ওয়াহেদ ম্যানশন ভাড়া নিয়ে কেমিক্যালের গোডাউন স্থাপন করা হয়েছিল। সঠিক নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় তদন্ত শেষ করা যায়নি। অভিযোগপত্রও জমা দেওয়া সম্ভব হয়নি। যাদের গাফিলতিতে এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে তাদের বিচার হবে কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। তাদের মধ্যে হতাশাও বিরাজ করছে।

এর আগে ২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে কেমিক্যালের গুদামে ভয়াবহ আগুনের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ১২৪ জনের মৃত্যু হয়। বারবার ভয়াবহ দুর্ঘটনার পরও তেমন বদলায়নি পুরান ঢাকার দৃশ্যপট। ঘনবসতিপূর্ণ আর ঘিঞ্জি এলাকার অনেক বাসাবাড়ির নিচে এখনো ঝুঁকিপূর্ণভাবে নানা ধরনের কেমিক্যাল সামগ্রী তৈরি করা হচ্ছে।

অনেক বাসার নিচে গুদামও রয়েছে। অনেকেই বলছেন, দ্রুত দৃশ্যপট না বদলালে হয়তো বারবার এমন কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। ২০১৯ সালের চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের পর পুরান ঢাকার বিভিন্ন অংশ থেকে রাসায়নিকের গুদাম ও কারখানা সরানোর দাবি নতুন করে আলোচনায় আসে। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থা থেকে কয়েকটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়।

কমিটিগুলোর সুপারিশের মধ্যে রয়েছে- আবাসিক এলাকা থেকে গুদাম ও কারখানা সরিয়ে নেয়া এবং অনুমোদনহীন কারখানার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া। কিন্তু সব সময় প্রধান বাধা আসে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকেই। নানা যুক্তি দেখিয়ে তারা সেখান থেকে কারখানা সরাতে চান না।

সান নিউজ/এসএম

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

বিএনপি বলছে অসংগতি, জামায়াত দেখছে ইতিবাচকতা

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য...

আওয়ামী লীগ এখন ‘মরা হাতি’, যে ইচ্ছা লাথি দিতে পারে: হাসনাত

আওয়ামী লীগকে ‘মরা হাতি’ আখ্যা দিয়ে জাত...

শিবচরে কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ

মাদারীপুরের শিবচরে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ও প্রা...

বাংলাদেশের বাস্তবতায় জুলাই সনদের হিসাব–নিকাশ

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জুলাই স...

উপদেষ্টা থেকে প্রার্থী: ডিসেম্বরেই মাঠে মাহফুজ ও আসিফ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ আগামী ফেব্র...

২০৩৪ সালের ট্রিলিয়ন ডলারের লক্ষ্য অর্জনে নারীই চালিকাশক্তি: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি স...

বিশ্ববাণিজ্যে শান্তির হাওয়া: ট্রাম্প–শি বৈঠকে নতুন যুগের সূচনা

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠককে &ldquo...

ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই নেই, থাকব ভারতেই: শেখ হাসিনা

গণঅভ্যুত্থানে প্রায় ১ হাজার ৪০০ জন নিহতের ঘটনায় ক্...

ব্রাজিলে মাদকচক্রবিরোধী অভিযানে ৪ পুলিশসহ ১১৯ জন নিহত

ব্রাজিলে মাদকচক্রের বিরুদ্ধে এক বড় পুলিশি অভিযানে...

সংস্কার ও বিচারের রোডম্যাপ ছাড়া নির্বাচন নয়: নাহিদ ইসলাম

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও বিচারের রোডম্যাপ চূড়ান্ত না হলে নির্বাচনের কোনো সুযোগ ন...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা