জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও বিচারের রোডম্যাপ চূড়ান্ত না হলে নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, “জুলাই সনদ এবং বিচারের রোডম্যাপের ভিত্তিতে নির্বাচনের দিকে যেতে হবে।”
বুধবার বিকেলে রংপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নাহিদ বলেন, “আমরা দ্রুত নির্বাচন চাই। দেশে নির্বাচিত সরকার দরকার, স্থিতিশীলতা দরকার, আস্থা দরকার। এজন্য দ্রুত সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের পর জনগণের অনেক প্রত্যাশা ছিল, সরকারের কাছ থেকেও, আমাদের দিক থেকেও। মানুষ পরিবর্তন চায়। কিন্তু এখন মানুষ আশঙ্কায় আছে, সবকিছু কি আবার আগের মতো হয়ে যাচ্ছে না? নতুন করে কোনো ফ্যাসিবাদ বা স্বৈরতন্ত্র ফিরে আসছে না তো?”
নাহিদ অভিযোগ করেন, “৫ আগস্টের পর দেশে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্ব আবার শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে সামাজিক ফ্যাসিবাদের উত্থানও দেখা যাচ্ছে। পতিত স্বৈরাচারী শক্তি ও কিছু বৈদেশিক প্রভাব মিলে নানা ষড়যন্ত্র করছে। ফলে জাতীয় ঐক্য যেমন জরুরি, তেমনি রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ বিভেদও কাটাতে হবে।”
তিনি বলেন, “এককভাবে কেউ নেতৃত্ব দেবে বা সরকার গঠন করবে, এটা বাস্তবসম্মত নয়। ঐক্য ছাড়া কোনো সরকার বা সংসদ টিকবে না।”
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “সংস্কার ও বিচার বাস্তবায়ন ছাড়া নির্বাচনের দিকে গেলে সেটি টেকসই হবে না। আমরা সংবিধানের কিছু জায়গায় ন্যূনতম একমত হয়েছি। কিন্তু যদি সরকার সংস্কার প্রক্রিয়ায় গড়িমসি করে, তাহলে তাদের জনগণের মুখোমুখি হতে হবে।”
নির্বাচনে জোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এনসিপি স্বাধীনভাবে সাংগঠনিক ও নির্বাচনী প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে জাতীয় স্বার্থে বা কৌশলগত কারণে সমঝোতা প্রয়োজন হলে আমরা উন্মুক্ত। কিন্তু পুরোনো দলগুলোর প্রতি জনগণের অনীহা আছে, তারা দুর্নীতি, স্বৈরতন্ত্র ও ব্যর্থতার দায় বহন করছে। জনগণ এখন নতুন রাজনীতির আকাঙ্ক্ষা করছে।”
বিএনপি, জামায়াতসহ পুরোনো দলগুলোর সমালোচনা করে নাহিদ বলেন, “বিএনপির অতীত শাসন নিয়ে সমালোচনা আছে, জামায়াতেরও ঐতিহাসিক দায় রয়েছে। তাই এই দলগুলোর সঙ্গে জোটের প্রশ্নে আমাদের ভাবতে হবে।”
নীতিগত অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, “জুলাই সনদ, বিচার, গণঅভ্যুত্থান ও নতুন বাংলাদেশের প্রশ্নে যার অবস্থান আমাদের কাছাকাছি, আমরা সেই জায়গায় ভাবব।”
নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে নাহিদ ইসলাম বলেন, “শাপলা প্রতীক না দিলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। একটি নবগঠিত দলের সঙ্গে যদি তারা বেইনসাফি করে, তাহলে কমিশনের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। তারা যদি আগের কমিশনগুলোর মতো আচরণ করে, তাহলে নিজেদেরও সেই পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে।”
সাননিউজ/এও