কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে টানাপড়েন চলছে। কয়েকটি রাজ্যকে আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে মহড়ার নির্দেশ দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণাল। আগামী ৭ মে বুধবার মহড়া চালাতে বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে।
গত সপ্তাহে নৌ বাহিনী এবং বিমান বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিভিন্ন সরকারি সূত্রে দাবি, হামলাকারীদের প্রত্যাঘাতের প্রস্তুতি হিসাবেই প্রতিরক্ষা বৈঠক করছেন প্রধানমন্ত্রী। ঘটনাচক্রে, তার পরেই কয়েকটি রাজ্যকে মহড়ার নির্দেশ দিল অমিত শাহ মন্ত্রণালয়।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে যে বিষয়ে মহড়া দিতে বলেছে, তার মধ্যে রয়েছে বিমান হামলার সতর্কতা সাইরেন ব্যবস্থাকে সক্রিয় করা, নাগরিকদের সুরক্ষার স্বার্থে সাধারণ মানুষ, বিশেষত পড়ুয়াদের ভূমিকা কী হবে, হঠাৎ ব্ল্যাকআউট হলে কী করণীয় এবং জরুরি পরিস্থিতিতে কী ভাবে দ্রুত উদ্ধারকাজ চালানো হবে।
রবিবার রাত ৯টার দিকে পাঞ্জাবের ফিরোজপুর ক্যান্টনমেন্টে সব আলো নিভিয়ে ‘ব্ল্যাকআউট ড্রিল’ করেছে ভারতের সেনাবাহিনী। স্থানীয় বাসিন্দাদের আগে থেকেই এ নিয়ে সতর্ক করে বলা হয়েছিল, তারা যেন আলোকিত বা দূর থেকে চোখে পড়ে এমন কোনও বস্তু বা আলো ব্যবহার না করেন ওই সময়ে। সাধারণত যুদ্ধের সময় বিপক্ষের নজর এড়াতে বা বিপক্ষের বিমান বাহিনীকে বিভ্রান্ত করতে বিস্তীর্ণ এলাকার আলো নিভিয়ে ‘ব্ল্যাকআউট’ করে দেওয়া হয়। এমনিতেই গত ২২ এপ্রিল থেকে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। রবিবার রাতে ‘ব্ল্যাকআউট’ ড্রিলের পরে বাসিন্দারা স্বাভাবিক ভাবেই আরও সতর্ক হয়ে গিয়েছেন।
পেহেলগাম কাণ্ডের পর শুধু হামলাকারী নয় যারা সন্ত্রাসবাদের মদত দেয় তাদেরও চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি। তাঁর কথায়, যারা বন্দুকের ট্রিগার চেপেছিল এবং যারা সেই ষড়যন্ত্রে শামিল ছিল কাউকে ছাড় দেয়া হবে না! তিনি এও বলেছেন, ‘‘এই হামলার কঠোর জবাব দেবে ভারত। আমার বিশ্বাস পেহেলগামের ঘটনা দেখে প্রত্যেক ভারতীয়ের রক্ত ফুটছে।
পেহেলগামের হামলার জবাব কড়া ভাবেই দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহও। রবিবার দিল্লিতে আয়োজিত সংস্কৃতি জাগরণ মহোৎসব অনুষ্ঠানে রাজনাথ সিংহ বলেন, আপনারা আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে জানেন, তার কাজের ধরন ও দৃঢ়তার সঙ্গেও সকলে পরিচিত। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে যা আপনারা চাইছেন, তা নিশ্চিত ভাবেই হবে।’
পাশাপাশি প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে পেহেলগাম হামলার কড়া জবাব দেওয়া তার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে বলেও দাবি করেছেন রাজনাথ। তিনি বলেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে আমার দায়িত্ব হল সেনার সঙ্গে মিলে সীমান্তকে সুরক্ষিত রাখা এবং যারা আমাদের দেশে হামলা করার সাহস দেখায়, তাদের যোগ্য জবাব দেওয়া।
সাননিউজ/ইউকে