সম্প্রতি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক বিতর্কিত মন্তব্য নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তিনি ঘোষণা করেছেন, "আমি এখন আমেরিকা চালাই, পৃথিবীও চালাই।"
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের ১০০ দিন পূর্ণ হয়েছে। এই সময়টিকে বিশ্লেষকরা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক গোলযোগের সময় বলে অভিহিত করলেও ট্রাম্প সময়টুকু পুরোপুরি উপভোগ করেছেন বলেও জানিয়েছেন।
সম্প্রতি ১০০ দিন পূর্তির মাহেন্দ্রক্ষণে আটলান্টিক ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, 'প্রথমবার, আমাকে দুটি কাজ করতে হয়েছিল—দেশ পরিচালনা করা ও টিকে থাকা; আমার চারপাশে তখন অসংখ্য দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষ ছিল।'
ট্রাম্প বরাবরই দাবি করে এসেছেন, প্রথম মেয়াদে তার উপদেষ্টা ও মন্ত্রিসভার সদস্যরা হয় অযোগ্য ছিলেন আর নয়তো তার প্রতি বিশ্বস্ত ছিলেন না। এই বক্তব্যে সেই ধারণার প্রতিফল ঘটেছে বলে বিশ্লেষকরা মত দিয়েছেন।
ট্রাম্প বরাবরই নিজস্ব ঢঙে, সরাসরি এবং অনেক সময় অতিরঞ্জিত ভাষায় কথা বলেন। তাঁর "পৃথিবী চালানোর" দাবি আদতে আমেরিকার বিশ্ব রাজনীতিতে প্রভাব বজায় রাখার উচ্চাকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন। তিনি নিজের সময়কালে 'আমেরিকা ফার্স্ট' নীতির প্রবক্তা ছিলেন — যেখানে আমেরিকার স্বার্থকে সর্বাগ্রে রাখা হয়েছে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উপরে। তাঁর সাম্প্রতিক বক্তব্য সেই পুরনো অবস্থানকেই যেন আবার সামনে এনে দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের মন্তব্য মার্কিন অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে তাঁর সমর্থকদের মধ্যে উত্সাহ জাগিয়ে তুললেও বৈশ্বিক মঞ্চে সমালোচনার জন্ম দিতে পারে। আজকের বহুধাবিভক্ত বিশ্বে "পৃথিবী চালানো"র মতো উচ্চাভিলাষী ভাষা আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও কূটনৈতিক ভারসাম্যের ক্ষেত্রে প্রশ্ন তুলতে বাধ্য। বিশেষ করে যখন বিশ্ব রাজনীতি এখন বহু কেন্দ্রিকতার দিকে এগোচ্ছে — যেখানে চীন, রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারতসহ বহু দেশ বৈশ্বিক নেতৃত্বে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করছে।
তবে ট্রাম্পের এই মন্তব্য শুধুই কৌশলী রাজনৈতিক প্রচারণা কিনা, নাকি তাঁর ভবিষ্যৎ ভূমিকায় কিছু গভীর সংকেত লুকিয়ে আছে, তা সময়ই বলবে। যুক্তরাষ্ট্রে আসন্ন নির্বাচনে তাঁর এই ধরনের উগ্র আত্মবিশ্বাসী বক্তব্য কতটা প্রভাব ফেলবে, সেটাও দেখার বিষয়।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘আমি পৃথিবী চালাই’ ধরনের বক্তব্য বিশ্ব রাজনীতির বর্তমান বাস্তবতার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও, তাঁর চরিত্র এবং রাজনীতির ধরন সম্পর্কে আরেকবার স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়: তিনি সংঘাত এড়িয়ে নয়, আলোড়ন সৃষ্টি করেই নেতৃত্ব দিতে অভ্যস্ত।
সাননিউজ/ইউকে