ঢাকার বনানী এলাকার ‘সিসা বারে’ ছুরিকাঘাতে রাহাত হোসেন রাব্বি হত্যার অন্যতম ‘প্রধান আসামি’ আব্দুল মালেক মুন্না দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর হাকিম মাসুম মিয়া তার জবানবন্দি নথিবদ্ধ করেন।এরপর মুন্নাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই মোক্তার হোসেন।
বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ‘৩৬০ ডিগ্রি’ নামের ওই সিসা বার থেকে নামার সময় ভবনের সিঁড়িতে রাব্বিকে ছুরিকাঘাত করা হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
৩১ বছর বয়সী রাব্বি মহাখালী এলাকার বাসিন্দা। শুক্রবার মামলা করেন রাব্বির বাবা রবিউল আউয়াল। ওইদিনই ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র্যাব।
মঙ্গলবার চার আসামির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। এরা হলেন-মীর হোসেন (২২), ফজলে রাব্বি (২৪), সাব্বির আহমেদ সুমন (৩০) ও আরাফাত ইসলাম ফাহিম (২৭)। তাদের বনানী থেকে গ্রেপ্তারের পর কারগারে পাঠানো হয়েছিল।
এদিন রিমান্ড শেষে মুন্নাকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বনানী থানার এসআই আমজাদ শেখ।
আসামি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা নথিবদ্ধ করার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
কুমিল্লার বরুড়া থেকে গ্রেপ্তারের পর শনিবার মুন্নার তিন দিন এবং মাকসুদুর রহমান হামজা নামে আরেক আসামির এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। রিমান্ড শেষে হামজাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মুন্না ও হামজাকে গ্রেপ্তারের পর তাদের ‘প্রধান আসামি’ হিসেবে তুলে ধরে র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইন্টারনেট ব্যবসায়ী রাব্বি ও তার বন্ধু নুরুল ইসলাম খোকন ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সিসা বারের চতুর্থ তলা থেকে সিড়ি দিয়ে নেমে দ্বিতীয় তলায় আসার সময় এ দুজন পথরোধ করেন। তখন মুন্নাকে দেখে রাব্বি জানতে চান, ‘তুই এই সময় এখানে কেন?’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “ওই কথা বলা মাত্রই রাব্বির সঙ্গে মুন্না ও হামজার বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে মুন্না তার পাঞ্জাবির পকেটে থাকা চাকু বের করে রাব্বিকে উপর্যুপরি আঘাত করেন।”
রাব্বির সঙ্গে মুন্না ও হামজা দীর্ঘদিন ধরে ওই সিসা বারে যেতেন। সেখানে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে তাদের মধ্যে ‘দ্বন্দ্ব’ চলছিল। বুধবার রাত ১টার দিকে মুন্নাকে সিসা লাউঞ্জ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন রাব্বি। এ ঘটনার পাশাপাশি পূর্বশত্রুতার জেরে ভোরবেলা রাব্বিকে হত্যা করা হয় বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে বলেছে র্যাব।
ঘটনাস্থলের ভিডিওতে দেখা যায়, রাব্বি সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় প্রথমে তিনজন তাকে ঘিরে ধরে। এর মধ্যেই তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। রাব্বিকে কিছু একটা দিয়ে পেটাতেও দেখা গেছে।