নিজস্ব প্রতিবেদক: ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ১৯৬ জন রোগী দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এতে শুধু ঢাকাতেই ১৯৪ জন রোগী হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে জুলাই মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ২ হাজার ২৮৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
শনিবার (৩১ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এ তথ্য জানায়।
শুক্রবার (৩০ জুলাই) সকাল ৮ হতে শনিবার (৩১ জুলাই) সকাল ৮টা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে এসব রোগী ভর্তি হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে শনিবার (৩১ জুলাই) পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৬৫৮ জন। এর মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ৭৭৭ জন আজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে ৭৪৭ জনই আছে রাজধানীর ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে। আর বাকি ৩০ রোগী ভর্তি আছে অন্যান্য জেলায়।
ডেঙ্গু সন্দেহে মারা যাওয়া চারজন রোগীর তথ্য পর্যালোচনার জন্য সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়েছে। তবে চলতি বছর ডেঙ্গুতে এখন পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেনি আইইডিসিআর।
গত জুন মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে দৈনিক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ছিল ১০০ জন। জুন মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয় ২৭২ জন। জুলাই মাসে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে।
দুই দশকের বেশি সময় ধরে ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব চললেও ২০১৯ সালে ঢাকায় ব্যাপকভাবে এ রোগ ছড়ায়। সে সময় সরকারি হিসাবে দেশে লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত ও দেড় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। এরপর সমালোচনার মুখে দুই বছর ঢাকায় মশকনিধনে ব্যাপক কার্যক্রম চালায় দুই সিটি করপোরেশন। এবার করোনা মহামারির মধ্যে আবার সেই ডেঙ্গু নতুন দুশ্চিন্তা হয়ে দেখা দিয়েছে।
এদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় এডিস মশা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া বিস্তার রোধকল্পে মোবাইল কোর্টে ৩৫টি মামলায় সর্বমোট ৬ লাখ ৭৬ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা আদায় করেছে।
শনিবার (৩১ জুলাই) ডিএনসিসির ১ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুলকার নায়ন পরিচালিত মোবাইল কোর্টে ৫টি মামলায় ৬৫ হাজার টাকা, ২ নম্বর অঞ্চলে ৩টি মামলায় ১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা, ৩ নম্বর অঞ্চলে ৭টি মামলায় ৬০ হাজার টাকা, ৪ নম্বর অঞ্চলে ৪টি মামলায় ১০ হাজার টাকা, ৫ নম্বর অঞ্চলে ৩টি মামলায় ৫৫ হাজার টাকা, ৬ নম্বর অঞ্চলে ৩টি মামলায় ৩ লক্ষ ১৬ হাজার ৩০০ টাকা, ৮ নম্বর অঞ্চলে ৮টি মামলায় ৫ হাজার টাকা এবং ৯ নম্বর অঞ্চলে ২টি মামলায় ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এভাবে মোট ৩৫টি মামলায় আদায়কৃত জরিমানার সর্বমোট পরিমাণ ৬ লক্ষ ৭৬ হাজার ৩০০ টাকা।
এ সময় সিটি করপোরেশন এলাকায় মাইকিং করে জনসচেতনতামূলক বার্তা প্রচার করা হয়। পাশাপাশি সকলকে এডিস মশা এবং ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে ডিএনসিসি মেয়রের আহবান “তিন দিনে এক দিন, জমা পানি ফেলে দিন” মানার পরামর্শ দেওয়া হয়। সাথে সাথে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশনাসহ স্বাস্থ্যবিধিসমূহ যথাযথভাবে মেনে চলার পরামর্শ দেয়া হয়।
সান নিউজ/এফএআর