এস. এম শাহাদাৎ হোসাইন, গাইবান্ধা: গাইবান্ধার চরাঞ্চলে সবুজ ভুট্রার ক্ষেতের মধ্যে উঁকি দিচ্ছে লাল ও সবুজ মরিচ। কৃষকগণ মরিচ ক্ষেত থেকে বেছে বেছে লাল পাকা মরিচ তুলছেন। ক্ষেত থেকে তোলার পর রোদে শুকানোর জন্য বালির মধ্যে নেট জালের উপর মরিচগুলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন। মরিচের সেই লাল আভা ছড়িয়ে পড়ছে সাদা বালুচরে। দুর থেকে দেখলে মনে হবে বালুতে কেউ লাল গালিচা পেতে রেখেছেন। ফুলছড়ি উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় বছরের পর বছর ধরে মরিচ চাষ হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
গাইবান্ধার সাত উপজেলায় কমবেশি মরিচ চাষ করলেও উৎপাদনের অর্ধেকের বেশি আসে ফুলছড়ি উপজেলার দুর্গম চর থেকে। গাইবান্ধা জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ফুলছড়ি উপজেলার চরাঞ্চলে ১ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে মরিচের চাষ করা হয়েছে। আর গাইবান্ধা জেলায় মরিচের চাষ করা হয়েছে ১ হাজার ৯শত হেক্টর জমিতে। প্রতি বছরের মতো এবারও মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে।
ফুলছড়ি উপজেলার এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়নের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, মার্চ মাসে শুরু হয়েছে মরিচ তোলা। এ সময় কাঁচা মরিচ বিক্রয়ের পর পাকা মরিচগুলো বালিতে নেট জাল বিছিয়ে তার উপর শুকানো হয়। শুকনো মরিচ সংরক্ষণ করে বছরের যেকোনো সময় বিক্রি করা যায়। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় উৎপাদিত পণ্য হাটে নিয়ে বিক্রয় করতে সমস্যায় পড়তে হয়। ফলে চরে আসা ব্যাপারিদের কাছে কমদামে মরিচ বিক্রয় করেন। এতে করে তাদের বেশি লাভ হয় না।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার মোল্লারচর, ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া, এরেন্ডাবাড়ির সন্যাসীর চর, আনন্দের চর, ভাটিয়া পাড়া, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর এবং সাঘাটা উপজেলার হলদিয়ার চরসহ ৫০টির বেশি চরে মরিচের চাষ বেশি করা হয়। কম পুঁজিতে বেশি লাভের কারণে চরাঞ্চলে মরিচ চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ৩ থেকে ৪ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করতে পারলে, পরিবারের সারা বছরের সব ধরণের খরচের টাকা জোগান দেয়া সম্ভব।
আরও পড়ুন: সয়াবিন ও সূর্যমুখী চাষের নির্দেশ
ফুলছড়ি উপজেলার ভাটিয়া পাড়া গ্রামের কৃষক হাকিম উদ্দিন বলেন, অনেক কষ্ট করে চাষ করি। রাস্তাঘাট না থাকায় সহজে হাটে বিক্রি করতে পারি না। এক বিঘা জমিতে মরিচের চাষে খরচ হয় ১৪/১৫ হাজার টাকা। ফলন ভাল হলে শুকনো মরিচ হবে ৬/৭ মণ। প্রতি মণ শুকানো ৭ হাজার টাকা করে বিক্রয় করা যায়। সরাসরি বড় কোম্পানিকে দিতে পারলে প্রতি মণ মরিচ ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রয় হয়।