সারাদেশ

ভালুকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি

সাজ্জাদুল আলম খান, ভালুকা (ময়মনসিংহ): ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটেছে। এক মাসের ব্যবধানে উপজেলায় দুধর্ষ ডাকাতি সহ চুরির ঘটনা ঘটলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত কোন আসামী আটক করতে পারেনি।

আরও পড়ুন: ঢাকাবাসী পরিবারকে সময় দিতে পারে না

এছাড়া উপজেলা ব্যাপী চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ অপরাধ কর্মকান্ড যেন নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি রাতেই ঘটছে চুরি ডাকাতির ঘটনা। মহাসড়কে ঘটছে ছিনতাইয়ের ঘটনা। দেখার কেউ নেই। কারো গোয়ালের গরু নেই। ঘরের আসবারপত্র নেই। নেই স্বর্ণালঙ্কার। টাকা পয়সা যা পাচ্ছে তাই হাতিয়ে নিচ্ছে।

ভালুকা উপজেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দিন দিন অবনতি হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই এখন নিত্যদিনের ঘটনা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, চুরি-ডাকাতি রোধে পুলিশি তৎপরতা না থাকায় বেড়েছে এসব ঘটনা। প্রতি রাতেই উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ও বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে চলেছে। বেড়েছে চুরি ও ছিনতাই। ইদানীং থানা পুলিশের গাফিলতির কারনে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি এমনকি হত্যার মতাে জঘন্য ঘটনাও ঘটছে, যার কারণে উপজেলার মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে।

আরও পড়ুন: ইরাকি প্রধানমন্ত্রীর হুমকি

সর্বত্রই চলছে ওপেন চাঁদাবাজি ও অবৈধ দখলযজ্ঞ। এখানকার অভ্যন্তরীণ ও প্রধান সড়কে সরকার নিষিদ্ধ যানবাহন ও মাদকাসক্ত অপ্রাপ্তবয়স্ক-অদক্ষ চালকের দৌড়াত্ম্য বাড়ছেই। এদিকে ভালুকা মডেল পুলিশের ব্যাপক তৎপরতা থাকা সত্ত্বেও কমছে না মাদকের আগ্রাসনসহ নানা অপরাধ। এখানে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে মাদকসেবীর সংখ্যাও। তবে এলাকাবাসীসহ অভিজ্ঞমহলের অভিযোগ, এলাকার সর্বত্রই অপরাধ বৃদ্ধির কারণ পুলিশের বিরুদ্ধে অপরাধীদের মদদ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে, অন্যথায় পুলিশের সঙ্গে সখ্যতা ছাড়া এভাবে নিয়ন্ত্রণহীন দৃশ্যমান অপরাধ সংঘটিত হওয়ার কোনো অবকাশ নাই।

পৌর এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে প্রায়ই ঘটছে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা। গত ২০ জুলাই বুধবার সন্ধ্যা রাতে ভালুকা বাসস্ট্যান্ডের অদূরে শহীদ নাজিম উদ্দিন রোডে প্রদীব জুয়েলার্সের মালিক অধীর কর্মকারকে গুলি করে ও বোমা ফাটিয়ে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ লুট করে নিয়ে যায়। এতে মামলা হলেও কোনো আসামি গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ব্যবসায়িক নিরাপত্তার দাবিতে মানববন্ধন করা হয়। উল্লেখ্য, গত ২০ জুলাই রাতে পৌরসভার শহিদ নাজিম উদ্দিন রোডের প্রদীপ জুয়েলার্সে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় চার পাঁচজনের একটি সংঘবদ্ধ সশস্ত্র ডাকাতদল প্রাইভেটকারে এসে কয়েকটি ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে জুয়েলার্সে ঢুকে দোকান মালিক অধীর কর্মকার ও তার ভাই সুধীর কর্মকারকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। পরে দোকান মালিক অধীর কর্মকারের পায়ে গুলি ও মাথায় আঘাত করে কাউন্টারের শোকেসে থাকা বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ লুট করে নিয়ে যায়।

২২ জুলাই শুক্রবার দুপুরে যাত্রীবেশে চার পাঁচজন দুর্বৃত্ত ভালুকা বাসস্ট্যান্ড থেকে একটি অটোরিকশায় ওঠে। তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উপজেলার মেহেরাবাড়ি এলাকায় অটোচালককে চেতনানাশক ইনজেকশন অজ্ঞান করে জঙ্গলে ফেলে রেখে অটোরিকশাটি নিয়ে চলে যায়। পরে জানতে পেরে পুলিশ অটোচালক উপজেলার হবিরবাড়ি আমতলী এলাকার বাদল মিয়ার ছেলে রিফাতকে (২৬) আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথম ভালুকা সরকারি হাসপাতালে এবং পরে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

আরও পড়ুন: ফের গ্রেফতার সেই ঝুমন দাশ

গত ২১ জুলাই বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে ব্রুনাই প্রবাসী দুলাল উদ্দিনকে (৩৫) অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ব্রুনাইয়ের এক হাজার রিয়েল, বিকাশ থেকে ৩০ হাজার টাকা, নগদ পাঁচ হাজার টাকা, হাতঘড়ি ও মোবাইল সেট ছিনিয়ে নিয়ে চোখে মলম লাগিয়ে ভরাডোবা এলাকায় রাস্তার পাশে ফেলে যায়।

একই রাতে পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড গ্যাস অফিস মোড়ে অবস্থিত আসাদুজ্জামান পাপ্পুর গ্যারেজ থেকে তালা কেটে দু’টি অটোরিকশা চুরি করে নিয়ে যায় একটি সঙ্ঘবদ্ধ চোরের দল। এ ছাড়া ১৮ জুলাই রাতে পৌরসদরের মুচিভিটা বিল্লালের গ্যারেজ থেকে ধীতপুর গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে সোহাগ মিয়ার একটি অটোরিকশা চুরি হয়ে যায়। এসব ঘটনায় থানায় পৃথকভাবে অভিযোগ দায়ের করা হলেও এ পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার বা মালামাল উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

গত ৮ জুলাই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের নিশিন্দা নামক স্থানে চালক ও এক ডিম ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডিমভর্তি ট্রাক ছিনতাই করে নিয়ে যায় সঙ্ঘবদ্ধ ছিনতাইকারী দল। এ ঘটনায় ভালুকা মডেল থানায় মামলা হলে ময়মনসিংহ ডিবি পুলিশ পাঁচ ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করে।

অপরদিকে মাদকের ছড়াছড়ি পৌরশহর সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিন বসছে বিভিন্ন এলাকায় গাঁজা, হেরোইন সহ বিভিন্ন মাদকের জমজমাট ব্যবসা।

সচেতন মহল মনে করেন, উপজেলায় মাদকের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় চুরি ডাকাতি আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। মাদক বিক্রিতে কোনো প্রকার বাধা না থাকায় এবং দ্রুত অনেক টাকার মালিক হওয়ার লোভে আজ ঘরে ঘরে মাদক ব্যবসায়ী তৈরি হচ্ছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এ বিষয়ে প্রশাসন একেবারেই নির্বিকার।

ভালুকা মডেল থানার ওসি কামাল হোসেন বলেন, ভালুকার কোথায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি আছে, ভালুকায় কোন আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয় নাই। আমরা পর্যাপ্ত পুলিশ মতায়োন করে নিরাপত্তা জোরদার করার চেষ্টা করছি, যাতে কোন ধরনের আইনশৃঙ্খলার অবনতি না ঘটে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার বিষয়ে আমি কিছু্ই বলতে পারবো না কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকার কারণে এই আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে।

সান নিউজ/এনকে

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

জনকল্যাণমুখী কার্যক্রমে দেশ আজ এগিয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, প্রধানম...

আবেদনময়ী লুকে নুসরাত

বিনোদন ডেস্ক: ঢাকাই চলচ্চিত্র চিত্রনায়িকা নুসরাত...

খাগড়াছড়িতে শাশুড়ি হত্যায় জামাতা আটক

আবু রাসেল সুমন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি : খাগড়াছড়িতে জুয়া খেলতে...

৬ তারিখে বাজেট প্রস্তাবন

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করেছেন, ৬...

গণতন্ত্র শেখ হাসিনার হাতেই সুরক্ষিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকামী মান...

বাক-বিতণ্ডার জেরে নিহত ১

উপজেলা প্রতিনিধি: সাভার জেলার আশু...

হিমাগারে মজুত ১ লাখ ডিম

জেলা প্রতিনিধি: বগুড়া সদরে &lsquo...

নিখোঁজ ছাত্রের লাশ উদ্ধার

জেলা প্রতিনিধি : চাঁদপুরে নিখোঁজ হওয়ার পর ডাকাতিয়া নদী থেকে...

কিরিগিজস্তানে শিক্ষার্থীদের বাইরে যাওয়া নিষেধ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কিরগিজস্তানের রাজধানী বিশকেকে বাংলাদেশি,...

ঘূর্ণিঝড়ের সবশেষ তথ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক: সারাদেশে চলমান...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা