নিজস্ব প্রতিনিধি, পিরোজপুর: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার পশ্চিম সেনের টিকিকাটা গ্রামের জাকির হোসেনের স্ত্রী হলেন মরিয়ম বেগম (৩৮)। স্বামী জাকির হোসেন চালাকি করে ব্যবসার নামে স্ত্রীকে জামিনদার রেখে মঠবাড়িয়া ব্র্যাক ব্যাংক থেকে ২০ লাখ টাকা ঋণ নেন। এরপর কৌশলে আরও বিভিন্ন এনজিও থেকে ৩০ লাখ টাকা নেন। পরে গোপনে নিজের সব জমি বিক্রি করে দেন।
২০১৫ সালে দ্বিতীয় বিয়ে করে মঠবাড়িয়া থেকে পালিয়ে যান। পরে জাকির ও তার প্রথম স্ত্রী মরিয়মের বিরুদ্ধে পিরোজপুরে অর্থ ঋণ আদালতে এনজিওর পক্ষ থেকে মামলা করা হয়। এ ঘটনায় স্বামী দীর্ঘদিন ধরে পলাতক থাকলেও মরিয়ম বেগম ছিলেন এলাকাতেই।
সোমবার (৩০ আগস্ট) মঠবাড়িয়া থানার সহকারী পুলিশ পরিদর্শক জনাত আলী, উপ-সহকারী পুলিশ পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম ও লাবনী আক্তার আসামি মরিয়ম বেগমের বাড়িতে যান। পরে মরিয়মকে গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় মরিয়মের সন্তানরা কান্নারত অবস্থায় বলতে থাকেন, ‘আমরা এখন কীভাবে থাকবো, খাবো কী? ঘরেতো খাওয়ার কিছুই নেই। আমাদের মাকে ছেড়ে দেন। মা কিছু করে নাই।’
মরিয়ম বেগমের সংসারের করুণ অবস্থা দেখে এএসআই জাহিদুল ইসলাম জাহিদের খারাপ লাগে।
এ ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) ফের মরিয়মের বাড়িতে যান এএসআই জাহিদুল ইসলাম। এবার আসামি গ্রেফতার করতে নয়, ওই পরিবারটিকে খাদ্য সহায়তা দিতে যান তিনি। ওই সময় এক মাসের চাল, ডাল, তেল, আলু, লবণ, সাবান, পেঁয়াজ, মরিচ, হলুদ, চিনি, চাসহ বিভিন্ন খাদ্য সহায়তা দেয়া হয় পরিবারটিকে।
জানা গেছে, মরিয়ম বেগম মাথা গোঁজার শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে তিন সন্তান নিয়ে নানা বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে থেকে অন্য মানুষের বাড়িতে কাজ করে ও কাঁথা সেলাই করে সংসার চালাতে থাকেন। বেশিরভাগ দিনই তাদের না খেয়ে থাকতে হয়।
এএসআই জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, ‘আদালতের আদেশ মেনে মরিয়ম বেগমকে গ্রেফতার করতে হয়েছে। কিন্তু মরিয়ম বেগম খুবই অসহায়। তার অবর্তমানে এই সংসারের আহার জোগার করা কঠিন হয়ে পড়বে। তাই যতদিন মরিয়ম কারাগারে থাকবেন, ততদিন আমার রেশন দিয়ে এই পরিবারকে সহায়তা করে যাবো।’
সান নিউজ/ এমবি