দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে মাঠের পর মাঠ সবুজে বিস্তৃত হয়ে গেছে।
বাংলাদেশের প্রধান ফসল ধান। এটি দেশের অর্থনীতির ভিত্তিস্বরূপ। দেশের শ্রমশক্তির মোট ৪০.৬০ শতাংশ কৃষি খাতে নিয়োজিত। এছাড়া রপ্তানি আয়েও কৃষি খাতের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। তাই দেশের অর্থনীতি অনেকাংশে কৃষির ওপর নির্ভরশীল।
ফুলবাড়ীতে আমন মৌসুমের ধান উৎপাদনে বন্যা, মধ্যম খরা প্রবণতা, আকস্মিক বন্যা, তীব্র ঠান্ডা এসব দিক লক্ষ্য করে তিনটি পর্যায়ে ধান চাষ হয় — যেমন মাঝারি উঁচু, মাঝারি নিচু ও নিচু জমি। এখানে ব্রি ধান ২৮, ৫৮, ২৯, ৬৯ এবং ব্রি হাইব্রিড ধান ৩, ৫ ইত্যাদি ধানে মাঠ সবুজে ভরপুর হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার ফুলবাড়ী উপজেলায় প্রায় ১৮,১৪৭ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। তবে একজন প্রান্তিক কৃষক শিবনগর ইউনিয়নের মিজানুর রহমান মিজান প্রায় ৫ একর জমিতে ধান চাষ করেছেন।
তিনি বলেন, “আমার জমিতে গত বারের তুলনায় এবার ফলন অধিক হওয়ার অপার সম্ভাবনা আছে, কারণ সঠিক বীজ, সেচ, রাসায়নিক সার, বালাইনাশক উপযুক্ত সময়ে প্রদান করেছি। তবে আবহাওয়া ভালো থাকলে আগামীদিনে স্বপ্নের সোনালি ফলন ঘরে তুলবো।”
উপজেলার আলাদীপুর ইউনিয়নের আবেদ আলীও উচ্চ ফলনশীল আগাম জাতের ধান উৎপাদন করেছেন। তিনি জানান, “আবহাওয়া ভালো থাকায় কালবৈশাখী ঝড় কিংবা বন্যা কম থাকায় জমিতে এখন পর্যন্ত কোনো পানি জমে না। ফলে এবার ফলন নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম।”
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবীদ সাইফ আব্দুল্লাহ মোস্তাফিন বলেন, “ফুলবাড়ী বরাবরই ভালো ফলনের নিশ্চয়তা দিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বিভিন্ন পরামর্শ যেমন, চলতি আমন মৌসুমে ধানে বাদামী গাছ ফড়িং (বিপিএইচ) লাগার পূর্বে পর্যাপ্ত সেচ ও আলোক ফাঁদ ব্যবহার করা, জৈব বালাইনাশক ব্যবহার এবং ধান ৮০ ভাগ পাকলে কর্তন করা যাতে প্রাকৃতিকভাবে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ না হন। প্রত্যেক ইউনিয়নে কৃষি উপসহকারীরা মাঠের ফসল ঠিক রাখতে নিরলসভাবে কাজ করছে।” তবে চলতি বছর প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে প্রায় ৪৪ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছে।
সাননিউজ/আরপি