দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে সম্প্রতি ঘটে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। নবজাতক কন্যা শিশুটি নিজের মা-বাবার কাছ থেকে পৃথক হয়ে হাসপাতালের বেডে ফেলে আসা হলো, সাথে রাখা হয়েছিল বাজারের ব্যাগে চিরকুট। চিরকুটে লেখা ছিল, “আমি মুসলিম। আমি একজন হতোভাগী। পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে বাচ্চা রেখে গেলাম। দয়া করে কেউ নিয়ে যাবেন।”
গত বৃহস্পতিবার (০৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শিশুটি পাওয়া যায়। হাসপাতালে ভর্তি করা হয় শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায়। হাসপাতালের ভর্তি রেজিস্ট্রারে শিশুর মায়ের নাম উল্লেখ করা হয়েছে—ইনছুয়ারা, বাবার নাম শাহিনুর, ঠিকানা আলাদিপুর, ফুলবাড়ী। শিশুটিকে প্রথম হাসপাতাল আনার সময় উপস্থিত পঞ্চাশোর্ধ্ব দম্পতি নিজেদের নানা-নানি হিসেবে পরিচয় দেন। মায়ের খোঁজ করতে চাইলে তারা বলেন, মা নিচে আছেন এবং এরপর দ্রুত চলে যান।
শিশুটির বিছানার পাশে রাখা বাজারের ব্যাগে ছিল শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় কিছু ওষুধ, ডায়াপার, জামা-কাপড় এবং জন্মতারিখ উল্লেখ করা চিরকুট। হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক গোলাম আহাদ জানান, “শিশুটি স্বাভাবিক প্রসবের সময়ের আগে জন্ম নিয়েছে, তবে সুস্থ। বর্তমানে ফটোথেরাপি দেওয়া হয়েছে, ওয়ার্মারে রাখা হয়েছে, এবং অন্য মায়েদের কাছ থেকে বুকের দুধ খাওয়ানো হচ্ছে।”
শিশুটিকে হাসপাতালের পক্ষ থেকে নিরাপদ রাখা হয়েছে এবং ইতিমধ্যে অনেকেই দত্তক নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করেছেন। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরবর্তী সময়ে সকলের সঙ্গে কথা বলে সুষ্ঠু সিদ্ধান্ত নেবে।
এ ঘটনাটি স্থানীয় ও সামাজিক মাধ্যমে বিস্তৃত আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। অনেকেই শিশুটির প্রতি সহমর্মিতা জানাচ্ছেন এবং ভবিষ্যতে তার নিরাপদ ও সুরক্ষিত জীবন নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এবং এই ছোট্ট প্রাণের প্রতি যত্ন, ভালোবাসা ও মানবিক সহানুভূতির জন্য হাসপাতালের কর্মী ও স্থানীয়রা এখন সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছেন।
সাননিউজ/এও