সুন্দরবনের উপকূলে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে মাঠে মাঠে সবুজের সমারোহ। মোরেলগঞ্জ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার প্রান্তিক চাষিরা শীতের আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
মাঠ ঘুরে দেখা যায়, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, করলা, বেগুন, লাউ, পটল, বরবটি, পালংশাক, লালশাকসহ বিভিন্ন আগাম শীতকালীন সবজি মাঠে চাষ হচ্ছে। ইতোমধ্যে এসব সবজি বাজারের অনেকটা চাহিদা পূরণ করতে শুরু করেছে। এ অঞ্চলের মাঠে সারা বছরই সবজি চাষ হয়ে থাকে। এ কারণে মোরেলগঞ্জকে “সবজির নগরী” বলা হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে মোরেলগঞ্জে আগাম শীতকালীন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যে ১,৫০০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে মূলা ১১০ হেক্টর, ফুলকপি ২১৫ হেক্টর, বাঁধাকপি ২১৫ হেক্টর, করলা ২৪০ হেক্টর, লালশাক ১৫ হেক্টর, পালংশাক ৫ হেক্টর, টমেটো ৩ হেক্টর, লাউ ৪০ হেক্টর, বরবটি ৫ হেক্টর, শিম ৩৫ হেক্টর, মিষ্টি কুমড়া ১৩০ হেক্টর, বেগুন ১০৮ হেক্টর, ধনিয়াপাতা ২৯৩ হেক্টর এবং ৬৭ হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষ করা হয়েছে।
হেক্টরপ্রতি ফলন ধরা হয়েছে সাড়ে ২৭ টন। প্রতি কেজির গড় মূল্য ৫০ থেকে ৫৫ টাকা ধরলে, এবার মোরেলগঞ্জে ৩০০ কোটিরও বেশি টাকার শীতকালীন সবজি উৎপাদন হবে।
মোরেলগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটি সভাপতি এস. এম. সাইফুল ইসলাম কবির বলেন, কৃষককে সার, বীজ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে বিভিন্ন সময় সহযোগিতা করে কৃষি বিভাগ। বিভিন্ন সিড কোম্পানির পক্ষ থেকেও মাঝে মাঝে সার ও বীজ দিয়ে গরিব কৃষকদের সহযোগিতা করতে হবে। একসময় লবণাক্ততার কারণে ইউনিয়নে ধান চাষাবাদ ছাড়া অন্য কোনো ফসল হতো না। এখন ওয়াপদা ভেড়িবাঁধের কারণে মিষ্টি পানিতে কৃষক নতুন নতুন ফসল ফলিয়ে কৃষি বিপ্লব ঘটিয়েছেন।
সরকারিভাবে অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ ও বিনা সুদে ঋণ দেওয়া হলে এ ক্ষেত্রে কৃষকদের আগ্রহ আরও বাড়বে বলে তিনি মনে করেন। এতে কিছুটা ঝুঁকি থাকলেও আগাম সবজি চাষে কৃষকরা আগ্রহী হচ্ছেন। আগামী দিনে কৃষকরা যেন আগাম সবজি চাষে আরও আগ্রহী হয়, সে ব্যাপারে আমাদের মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। আশা করছি, আগামীতে এই সবজি চাষ আরও বৃদ্ধি পাবে।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, মোরেলগঞ্জ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় এ বছর ১,৫০০ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন ও শীতকালীন সবজি চাষ হচ্ছে। এসব সবজির মধ্যে রয়েছে শিম, লাউ, মূলা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি। বাজারে আগাম শীতকালীন সবজির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সেগুলো বেশি দামে বিক্রিও করতে পারছেন কৃষকরা। এতে কিছুটা ঝুঁকি থাকলেও আগাম সবজি চাষে কৃষকরা আগ্রহী হচ্ছেন। আগামী দিনে কৃষকরা যেন আগাম সবজি চাষে আরও আগ্রহী হয়, সে ব্যাপারে আমাদের মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। আশা করছি, আগামীতে এই সবজি চাষ আরও বৃদ্ধি পাবে।
সাননিউজ/আরপি