সুন্দরবনের উপকূলের বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে অতিরিক্ত জোয়ারে জলাবদ্ধতা ও প্রবল বর্ষণে মাঠে পানি জমে আমন বীজপাতা নষ্ট হয়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক। দুই মাস পরে আমন বীজপাতা কিনে মাঠে রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। কৃষক বলছেন পার্শ্ববর্তী গ্রাম থেকে দুই হাজার থেকে সর্বনিম্ন ৬ টাকা দরে আমন বীজপাতা ক্রয় করে মাঠে এনে রোপন করছেন তারা।
সংশ্লিষ্ট কৃষি দপ্তর কৃষকদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় কৃষকদের। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কৃষি নির্ভরশীল উপকূলীয় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার নিম্নঅঞ্চলগুলো গত ২ মাস পূর্বে জলাবদ্ধতায় আমন বীজপাতা পচন ধরে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে সাধারণ কৃষকেরা। চাষিরা তাদের ফসলী মাঠে ঘুরে দাড়াতে নতুন করে গত এক সপ্তাহ ধরে চড়া দামে বিভিন্ন স্থান থেকে আমন বীজপাতা কিনে এনে বপন করছেন। সদর ইউনিয়নের পশ্চিম বিশারীঘাটা ষাটই খানা কৃষক রুস্তুম আলী শেখ, মোস্তফা ফরাজী, পল্লীমঙ্গল গ্রামের জব্বার শেখ, ধানসাগর গ্রামের আবু হানিফসহ একাধিক কৃষকরা বলেন, বণ্যায় পানির চাপে বীজপাতা নষ্ট হয়ে গেছে। নতুন করে ফসল ফলানোর জন্য বীজপাতা পার্শ্ববর্তী নিশানবাড়িয়া গ্রাম থেকে ২ হাজার টাকা পোন কিনে এনে মাঠে রোপন করতে হচ্ছে। খারইখালী গ্রামের জাফর আলী খান বলেন, তার সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের ব্রি-১১, ২২ ও ২৩ বীজপাতা সম্পূর্ন নষ্ট হয়ে গেছে। নতুন করে ৭শ’ টাকা পোন বীজ কিনে এনে রোপন করছেন। একই গ্রামের মুছা ফরাজী বীজপাতা কিনে এনে রোপন করছেন। কৃষক জলিল শেখ বলেন, তার ১৬ বিঘা জমির ২১ বস্তা বীজ সম্পূর্ন নষ্ট হয়ে গেছে। নতুন করে ১৪ বস্তা বীজ ফেলেছেন। এ রকম কৃষক মোহাম্মদ আলী তার ১৪ বিঘা জমির বীজপাতা নষ্ট হওয়ায় নতুন করে বীজপাতা ক্রয় করতে পারেননি। এদিকে কৃষি দপ্তর বলছেন আমন বীজপাতা সংকট নেই অতিরিক্ত রয়েছে। অথচ মাঠ পর্যায়ের চিত্র ভিন্ন। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় এ বছর উচ্চ ফলনশীল আমন ধান মাঠে রোপন হয়েছে ৪ হাজার ৫শ’ ২৫ হেক্টর জমিতে এবং স্থানীয় জাতের আবাদ করা হয়েছে ৪ হাজার ২শ’ ৮৫ হেক্টর জমিতে। প্রবল বর্ষণ ও জলাবদ্ধতায় আমন বীজতলা ০.২ হেক্টর জমির আমন বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পঞ্চকরণ ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, প্রবল বর্ষণ ও জলাবদ্ধতায় দেবরাজ, পঞ্চকরণ ও খারইখালীর কিছু অংশে পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আমন বীজতলার কিছুটা ক্ষতি হয়েছে।
তবে, অন্য সব বছরের চেয়ে ৩গুন বীজপাতা হয়েছে অনেক স্থানে সেখান থেকে আমন বীজপাতা এনে রোপন করতে পারছেন কৃষক। তেমন একটা সমস্যা হবে না। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, কৃষকদের আমন বীজপাতার সংকট নেই। জলাবদ্ধতায় উপজেলায় ২ হেক্টর জমি প্রাথমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে, পানি নেমে যাওয়ার পরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে অন্যসব বছরের চেয়ে আমন বীজপাতা অনেক বেশী হয়েছে। যে কারনে কৃষক এ বীজপাতা বিক্রিও করতে পারবে না
সান নিউজ/আরএ
 
                                     
                                 
                                         
                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                     
                            