বাগেরহাটের ৪টি সংসদীয় আসনই বহাল রাখার দাবিতে জেলা সদরসহ ৯টি উপজেলার সর্বত্র চলছে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টায় শুরু হওয়া এ হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।
জানা যায়, আজ সোমবার ভোর থেকে বাগেরহাটের মোংলা-খুলনা মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে টায়ার জ্বালিয়ে ও বেরিক্যাড দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালন করছে বাগেরহাটের সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। এ ছাড়া বাগেরহাট জেলা বিএনপির সমন্বয়ক এম, এ সালামের নেতৃত্বে জেলার কোর্ট, নির্বাচন অফিস, নওয়াপাড়া মোড় ও কাটাখালী মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হরতালের কারণে বাগেরহাটের সব উপজেলায় নদী পারাপার, যান চলাচল, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, স্কুল-কলেজ, দোকানপাট সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। দলমত ও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব শ্রেণি পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ হরতাল পালন করছে। তবে এর আগে বিগত কোনো রাজনৈতিক সরকারের আমলে এমন কঠোর হরতাল পালন হয়নি বাগেরহাটে। এদিকে এ দাবিতে আজ সকালে বাগেরহাট জেলা নির্বাচন অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
এদিকে, বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবিতে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির ডাকা কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফকিরহাট উপজেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে। হরতালকে কেন্দ্র করে সব দোকান-পাট বন্ধ দেখা গেছে।
আজ সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে হরতাল সমর্থনকারী ফকিরহাট উপজেলা নির্বাচন অফিসের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ কর্মসূচিতে বিএনপি, জামায়াত ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
জরুরী প্রয়োজনে কিছু ফার্মেসীর দোকান খোলা দেখা গেছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
এদিন সকাল থেকে ফকিরহাট সড়ক মহাসড়কে দূরপাল্লার কোনো পরিবহন যাতায়াত করতে দেখা যায়নি। সকাল থেকে ফকিরহাট বিশ্বরোড় মোড়, কাটাখালী চত্ত্বরসহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, দূরপাল্লার বাস চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। তবে গ্রামাঞ্চল দিয়ে সীমিত আকারে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক, ও ভ্যান চলতে দেখা গেছে।
হরতাল সমর্থনে এবং চারটি আসন বহাল রাখার দাবিতে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল করে হরতাল সমর্থনকারীরা। টায়ার চালিয়ে ও কাঠের গুড়ি ফেলে সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে রাখে। তবে অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরী পরিবহনগুলো ছেড়ে দিতে দেখা গেছে।
গত ৩০ জুলাই ইসি বাগেরহাট জেলার ৪টি আসন থেকে ১টি আসন কেটে গাজীপুরে আরো ১টি আসন বাড়ানোর সিদ্ধান্তের খসড়া প্রকাশ করে। তাতে আপত্তি জানিয়ে ৪টি আসনই বহালের দাবিতে তখন কমিশনে লিখিত আপত্তি জানান বাগেরহাটবাসী। এরপর সেই আপত্তির প্রেক্ষিতে ৪ সেপ্টেম্বর চুড়ান্ত গেজেটে ইসি শুধু সীমানা বিভাজনে নতুনত্ব আনে। কিন্তু ইসির গেজেটে আসন বিলুপ্তি বহাল থাকে। যার প্রেক্ষিতে আবার ৪টি আসন বহাল রাখার দাবিতে হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি।