আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেন ও বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি রাশিয়ার মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের দুটি অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের ঘোষণা দিয়ে সেখানে সেনা পাঠিয়েছেন। তাতেই বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে।
বিবিসি ও রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই জ্বালানি তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছে। বৈশ্বিক শেয়ারবাজারেও গতকাল থেকে সূচক পড়ছে। তেল সরবরাহে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে এমন আশঙ্কায় তেলের দাম বাড়ছে।
আন্তর্জাতিক বাজারের আগাম কেনাবেচায় আজ এরই মধ্যে ব্রেন্ট ক্রুড জ্বালানি তেলের প্রতি ব্যারেলের (৪২ মার্কিন গ্যালন বা ১৫৯ ব্রিটিশ লিটার) দাম বেড়ে ৯৮ দশমিক ২১ মার্কিন ডলারে উঠে গেছে, যা বিগত ৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
আর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুড অয়েলের দামও প্রতি ব্যারেল ৯৬ দশমিক ৮২ ডলারে উন্নীত হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন ইমরান খান
ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার আরও সেনা পাঠানোর নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা মিত্র দেশগুলো রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছে। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক বাজারে দ্বিতীয় বৃহত্তম জ্বালানি তেল রপ্তানিকারক রাশিয়াও পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে বিশ্ববাজারে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানিতে রাশ টানতে পারে।
ম্যানুলাইফ ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্টের সু ট্রিন রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে তারা তখন আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দিতে পারে, যা ‘বিশ্ব অর্থনীতিতে যথেষ্ট প্রভাব ফেলবে’।
এদিকে, রাশিয়ার পাঁচটি ব্যাংক ও তিনজন বিত্তবান ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের লুহানেস্ক ও ডোনেস্ককে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায় এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যে পাঁচটি ব্যাংককে যুক্তরাজ্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সেগুলো হলো, রসিয়া, আইএস ব্যাংক, জেনারেল ব্যাংক, প্রোমসাভায়াজব্যাংক এবং ব্ল্যাক সি ব্যাংক।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্য যে তিন ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন গেনাডি তিমচেনকো। তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছের লোক। এ নিষেধাজ্ঞার ফলে যুক্তরাজ্যে থাকা এসব ব্যাংকের টাকা ও তিন ব্যক্তির সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার ওপর যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা
প্রসঙ্গত, ইউক্রেন সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরেই প্রায় এক লাখ সেনাসদস্য মোতায়েন রেখেছে প্রতিবেশী রাশিয়া। এর মধ্যে ট্যাংক ও কামানসহ যুদ্ধবিমানের বহরও ইউক্রেন সীমান্তে পাঠিয়েছে দেশটি। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। যদিও ইউক্রেনে হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বরাবরই দাবি করে আসছে মস্কো।
তবে যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই বলছে যে, যেকোনো মুহূর্তে ইউক্রেনে হামলা করে বসতে পারে রাশিয়া। একই আশঙ্কা প্রকাশ করছে ওয়াশিংটনের অন্যান্য মিত্র দেশগুলোও। এমনকি হামলার জন্য মিথ্যা অজুহাতও রাশিয়া দাঁড় করাতে পারে বলে পরিষ্কারভাবেই বলে আসছিল পশ্চিমা দেশগুলো।
সান নিউজ/এনকে