সান নিউজ ডেস্ক: পাঁচ হাজার টাকার অতি সাধারণ দুর্নীতির পেছনে জনগণের লাখ লাখ টাকা ব্যয় না করে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তদন্ত করতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: এ বছর সীমান্তে হত্যা কম
আদালত রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমের তালিকায় ১ থেকে ২৫ নম্বরে থাকা (উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তি) সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ থাকলে তা আগে অনুসন্ধান ও তদন্ত করতে বলেছেন।
বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ গত বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) এ রায় দেন। শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আশেক মোমেন বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: ৩০ ডিসেম্বর বিএনপির গণমিছিল
৫ হাজার টাকার ঘুষ গ্রহণের মামলায় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির টেকনিশিয়ান আব্দুর রহিমকে দেওয়া সাজার রায় বাতিল করে হাইকোর্ট এ নির্দেশনা দেন।
আদালত বলেছেন, সার্বিক পরিস্থিতিতে এটি অত্র আদালতের কাছে স্পষ্ট প্রতীয়মান যে, দুদক হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে ৫শ’/৫ হাজার টাকার অতি সাধারণ দুর্নীতির পেছনে জনগণের লাখ লাখ টাকা ব্যয় করছে। পত্র-পত্রিকায় এটি দেখা যাচ্ছে যে, ৫ হাজার টাকার একটি মোকদ্দমার জন্য দুদকের ৫ লাখ টাকা থেকে শুরু করে ২০ লাখ টাকার মতো খরচ হয়। জনগণের কষ্টের টাকায় এই ৫ হাজার টাকার দুর্নীতি প্রতিরোধ, মামলা দায়ের থেকে আপিল বিভাগ পর্যন্ত ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা ব্যয় করা, কতটুকু সমীচীন?
আদালত বলেন, পত্র-পত্রিকা এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা দেখি হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হচ্ছে এবং হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হচ্ছে। সুতরাং দুর্নীতি দমন কমিশনকে এই মর্মে নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে যে, আজ থেকে দুর্নীতি দমন কমিশন শুধুমাত্র ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’-এর ১ থেকে ২৫ পর্যন্ত পদধারী কর্মকর্তা বা এই ধরনের সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আগে অনুসন্ধান ও তদন্ত করবেন। এরপর ব্যাংক পরিচালক, ব্যাংকের মালিক, ব্যাংকের এমডি, ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং ব্যাংকের সিইও- এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধান করবেন। এবং বড় আন্তর্জাতিক ক্রয় আদেশসহ রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ খাত, হাজার হাজার কোটি টাকা যেখানে সম্পৃক্ত, সেসব মামলা মোকদ্দমা প্রথম বিবেচনায় নিয়ে আজ থেকে দুদক তদন্ত করবে।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ ছাড়লেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি
এসব ক্ষেত্রে যখন আর কোনো অভিযোগ কিংবা দুর্নীতির আলামত না থাকবে তখন কেবল দুদক এই ধরনের লোকের (ক্ষুদ্র কর্মচারী) বিরুদ্ধে মামলা মোকদ্দমা গ্রহণ এবং দায়ের করবে। উপরের নির্দেশনা দুদক এখন থেকে অনুসরণ করতে হবে।
রায়ে সরকারকে পরামর্শ দিয়ে হাইকোর্ট বলেছেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের মতো জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠানে অবশ্যই ক্যাডার সার্ভিসের মাধ্যমে নিয়োগ হওয়া উচিত।
সরকারকে দ্রুততম সময়ে বিচার বিভাগে যে প্রক্রিয়ায় বিচারক নিয়োগ হয় সে প্রক্রিয়ায় দুদকের সব অফিসার নিয়োগ প্রদানের মাধ্যমে একটি নিয়মতান্ত্রিক ক্যাডার সার্ভিসে পরিণত করার পরামর্শ দিয়েছেন আদালত।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে আরও ২ জনের মৃত্যু
দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান এবং সদস্য হিসেবে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের সুনাম ও দক্ষতাসম্পন্ন প্রাক্তন বিচারপতিগণদের মধ্য থেকে নিয়োগ দেওয়ার পরামর্শ দেন হাইকোর্ট।
সান নিউজ/এনকে