নিজস্ব প্রতিবেদক: জমাকৃত টাকার ওপর মাসিক মুনাফা দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের ১৭ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান মুফতি রাগীব আহসান ও তার সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড আ্যকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে র্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের উপ-পরিচালক মেজর রইসুল আজম গ্রেফতারের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, পিরোজপুরের এহসান রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড বিল্ডার্স লিমিটেডের বিরুদ্ধে লক্ষাধিক গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করার অভিযোগ উঠে। গ্রুপটির বিরুদ্ধে ১৭ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছে গ্রাহকরা।
এর আগে পিরোজপুরের এহসান গ্রুপের এমডি রাগীব আহসান গ্রাহকদের পাওনা টাকা নিয়ে বিদেশে পালিয়ে গিয়েছেন এমন অভিযোগ করেছিলেন ভুক্তভোগীরা। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, এহসান গ্রুপ পিরোজপুর ও আশপাশের প্রায় লক্ষাধিক গ্রাহক ও মাঠকর্মীর ১৭ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
জানা যায়, মুফতি রাগীব আহসান এলাকার মানুষের সঞ্চয়ী হিসাব চালু করেন। জমা করা টাকার ওপর মাসিক মুনাফা দেওয়ার কথা বলে পাস বইসহ বিভিন্ন ডকুমেন্ট দিয়ে টাকা জমা নেন। এলাকার মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কয়েকমাস মাসিক মুনাফা দেওয়ার পর বন্ধ করে দেন। এরপর নানা কথায় সময় পার করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকরা টাকা ফেরত চাইলে নানা অজুহাতে টালবাহানা শুরু করে। এভাবে প্রায় তিন বছর চলার পর টাকা-পয়সা না দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয়।
এসব অভিযোগের ভিত্তিতে এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান মুফতি রাগীব আহসান ও তার সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ বিষয়ে শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও জানান মেজর রইসুল আজম।
প্রসঙ্গত, গত রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী মাওলানা হারুনার রশীদ বলেন, এহসান রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড বিল্ডার্স লিমিটেডের মাঠকর্মী আনুমানিক ১ হাজার ২০০ জন এবং সদস্য সংখ্যা এক লাখের বেশি। তারা দুই হাজার কোটি টাকা এবং পিরোজপুর, গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট, ঝালকাঠীসহ অন্যান্য জেলার লোকজন ব্যক্তি উদ্যেগে সরাসরি এই প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা জমা রাখেন। গ্রাহকের টাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠানের নামে জমি ক্রয় না করে রাগীব আহসান এবং তার আত্মীয়স্বজনের নামে জমি ক্রয় করেন। সেসব জমির ৯০ শতাংশ গোপনে বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেন। এহসান গ্রুপের ১৭টি প্রতিষ্ঠানের ১৬টিই উধাও হয়ে গেছে।
তারা (ভুক্তভোগী) জানান, ২০১৯ সালে রাতের আঁধারে শের-ই-বাংলা পাবলিক লাইব্রেরির ৪র্থ তলায় এহসান গ্রুপের প্রধান অফিস তালাবন্ধ করে দেয়। পরে জানা যায়, অফিস বন্ধের আগেই তারা অফিসের সব ডকুমেন্ট সরিয়ে ফেলেন। অফিস সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সান নিউজ/এফএইচপি/এমকেএইচ