নিজস্ব প্রতিবেদক: হাসিনা আক্তার ও হাসিনা বেগম একই আসামি নন- চট্টগ্রাম কারা কর্তৃপক্ষের এই প্রতিবেদন পাওয়ার পর এক হাসিনার সাজা ভোগ করা অন্য হাসিনাকে মুক্তির আদেশ দিয়েছে আদালত। সংশ্লিষ্ট মামলার আসামি না হয়েও নামের একাংশ ও স্বামীর নামে মিল থাকায় ১ বছর সাড়ে চার মাস ধরে কারাগারে সাজা খেটে আসছেন হাসিনা বেগম।
চট্টগ্রাম মহানগর চতুর্থ অতিরিক্ত দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁইয়ার আদালত ভার্চুয়াল শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (৪ মে) এই আদেশ দেন। গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসিনা বেগমের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ।
আইনজীবী বলেন, আদালতের আদেশে চট্টগ্রাম কারা কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে কারা কর্তৃপক্ষ বলেন, হাসিনা আক্তার ও হাসিনা বেগম একই আসামি নন। আদালত শুনানি শেষে সাজা খাটা হাসিনা বেগমকে মুক্তির আদেশ দেন।
আইনজীবী আরও বলেন, মাদকের মামলায় ৬ বছর সাজার আদেশ হয়েছিল হাসিনা আক্তারের। তার নামের সঙ্গে মিল থাকায় ১ বছর ৪ মাস ২০ দিন ধরে সাজা খাটছেন হাসিনা বেগম। বিষয়টি গত মার্চে চট্টগ্রামের একটি আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ। তখন আদালত বিষয়টি তদন্ত করে পুলিশকে একটি প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছিলেন। আজ কারা কর্তৃপক্ষ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর আদালত আদেশ দিয়েছে।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের কর্ণফুলি এলাকা থেকে ২০ হাজার ইয়াবা নিয়ে স্বামীসহ আটক হন টেকনাফের চৌধুরীপাড়ার হাসিনা আক্তার নামে এক নারী। ৯ মাস কারাভোগ শেষে জামিনে বের হয়ে যান তিনি। ২০১৯ সালের জুলাইয়ে সেই মামলার রায়ে তাকে দেওয়া হয় ৬ বছরের কারাদণ্ড, তখন তিনি পলাতক ছিলেন।
এরপর ২০১৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর টেকনাফ থানা পুলিশ আটক করে একই এলাকার হাসিনা বেগম নামে আরেক নারীকে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে পাঠানো হয় কারাগারে। এরপর থেকে তিনি কারাভোগ করছেন প্রায় দেড় বছর ধরে।
আইনজীবী মুরাদ বলেছিলেন, কারাগারে থাকা হাসিনা বেগমের অপরাধীর তালিকায় নাম নেই। তবু তাকে জেল খাটতে হচ্ছে নিজের নামের একাংশ ও স্বামীর নামের মিল থাকার কারণে।
কারাগারে থাকা হাসিনা বেগমের বাড়ি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরী পাড়ায়। তিনি হামিদ হোসেনের স্ত্রী। সাজাপ্রাপ্ত আসামি হাসিনা আক্তার একই এলাকার ইসমাইল হাজি বাড়ির হামিদ হোসেনের স্ত্রী।
সম্প্রতি ঘটনার তদন্ত করে আদালতে জমা দেওয়া পুলিশ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে কারাগারে থাকা হাসিনা বেগম আগে গ্রেফতার হওয়া আসামি নন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যায়। এছাড়া হাসিনা বেগমের বয়স ৪০ বছর, কিন্তু হাসিনা আক্তারের বয়স ৩০। বর্তমান কারাগারে থাকা হাসিনা বেগমের স্বামী পলাতক থাকায় পূর্ণাঙ্গভাবে তদন্ত করা যায়নি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ঘটনার সময় গ্রেফতার হাসিনা আক্তার ও বর্তমানে কারাগারে থাকা হাসিনা বেগমের ছবির মিল পাওয়া যায়নি। হাসিনা আক্তার চার বছরের ছেলে ও দুই বছরের মেয়েসহ গ্রেফতার হন। কিন্তু হাসিনা বেগমের সন্তান তিন জন বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
সান নিউজ/আরএস/আরআই