জাতীয় ঐকমত্য গড়তে দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা শেষে আজ (মঙ্গলবার) জুলাই জাতীয় সনদের চূড়ান্ত অনুলিপি ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে পাঠাবে ঐকমত্য কমিশন। তবে এই অনুলিপিতে সংস্কার বাস্তবায়নের উপায় বা পদ্ধতি সম্পর্কে কোনো সুপারিশ থাকছে না। এসব সুপারিশ পরে অন্তর্বর্তী সরকার ও দলগুলোর কাছে আলাদা করে দেওয়া হবে, এবং তা সনদের অংশ নয়।
কমিশন জানিয়েছে, আগামী শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। এই অনুষ্ঠানে প্রায় তিন হাজার অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ ও বিচার বিভাগ—এই ছয়টি খাতে সংস্কারের প্রস্তাব নিয়েই তৈরি হয়েছে এই সনদ। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত দুই দফা আলোচনায় ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরি হয়, যা সনদের মূল ভিত্তি।
জুলাই সনদের তিনটি অংশ রয়েছে:
১. পটভূমির ব্যাখ্যা,
২. ঐকমত্য হওয়া ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব,
৩. ৭ দফা বাস্তবায়ন অঙ্গীকার।
কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগেই দলগুলোর মতামত নেওয়া হয়েছিল। এবার শুধু ভাষা সংশোধন করে সনদের চূড়ান্ত কপি পাঠানো হচ্ছে। তাই নতুন করে মতামত চাওয়া হচ্ছে না।
সংবিধানের ৪ক অনুচ্ছেদ (যা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি প্রদর্শনের বিষয়) বাতিলের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ থাকায় বিষয়টি সনদে রাখা হয়নি। এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ভবিষ্যতের সংসদ।
তবে, সনদ বাস্তবায়নে গণভোট আয়োজনের ব্যাপারে আলোচনা হলেও, ভোট আয়োজনের সময়, পদ্ধতি ও কাঠামো নিয়ে কিছু রাজনৈতিক দলের—বিশেষ করে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)—মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে।
কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, তারা আশা করছেন, শুক্রবারের অনুষ্ঠানের আগেই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে সরকারের কাছে সুপারিশ পাঠানো সম্ভব হবে।
সাননিউজ/এও