তিন দফা দাবিতে দেশজুড়ে তিন দিনের পূর্ণদিবস কর্মবিরতিতে নেমেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের ঘোষণা অনুযায়ী মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) শুরু হওয়া এ কর্মবিরতি চলবে বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) পর্যন্ত।
সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেরা বেগম সোমবার (২৪ নভেম্বর) রাতে জানান, বহুদিন ধরে সরকারের সঙ্গে আলোচনার পরও সহকারী শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়নে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। তিনি বলেন, সহকারী শিক্ষক পদকে এন্ট্রি পদ ধরে ১১তম গ্রেড প্রদান, শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি এবং ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড নিশ্চিত—এই তিন দফা দাবিই তাদের আন্দোলনের মূল বিষয়। আশ্বাস পেলেও কার্যকর কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় শিক্ষকরা বাধ্য হয়েই পূর্ণদিবস কর্মবিরতিতে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, তিন দিনের কর্মবিরতিতে সমাধান না এলে পরবর্তী ধাপে আরও কঠোর আন্দোলনে যেতে প্রস্তুত শিক্ষকরা। ১১ ডিসেম্বর থেকে লাগাতার অনশনে যাওয়ার ঘোষণা ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে। বার্ষিক পরীক্ষা বর্জনেরও হুঁশিয়ারি রয়েছে।
রাতে প্রকাশিত আরেক বিবৃতিতে ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক শাহীনূর আকতার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য দাবিগুলো উপেক্ষিত হওয়ায় শিক্ষকরা গভীর হতাশায় ভুগছেন। তিনি বলেন, ১ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলনে সরকারকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনো উদ্যোগ বা নির্দেশনা না থাকায় আন্দোলন জোরদার ছাড়া আর কোনো পথ নেই। সারা দেশের সহকারী শিক্ষকদের প্রতি তিনি ঘোষিত কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানান।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৬৫ হাজার ৫৬৭টি এবং এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার। গত ২৪ এপ্রিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১১তম থেকে ১০তম গ্রেডে এবং ১৩তম গ্রেডের শিক্ষকদের ১২তম গ্রেডে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এই সমন্বয়ে সহকারী শিক্ষকরা নিজেদের অবহেলিত মনে করছেন।
তাদের অভিযোগ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, নার্স, কৃষি কর্মকর্তা, পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর এবং সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা স্নাতক ডিগ্রি নিয়েই ১০ম গ্রেড পাচ্ছেন। অথচ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা স্নাতক ডিগ্রির পাশাপাশি সিএনএড, বিপিএড বা বিটিপিটি কোর্স সম্পন্ন করেও এখনো ১৩তম গ্রেডেই সীমাবদ্ধ। ফলে দীর্ঘদিনের বৈষম্য দূর করতে তারা দ্রুত সরকারি উদ্যোগের অপেক্ষায় রয়েছেন।
সাননিউজ/এও