ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি সাদিক কায়েমকে সংযত হতে বলেছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল। শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়কে কেন্দ্র করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০১ শিক্ষকের বিবৃতি, এবং সেই প্রসঙ্গে সাদিক কায়েমের ‘উত্তেজিত’ মন্তব্য নিয়ে তিনি কড়া সমালোচনা করেছেন।
শনিবার ঢাকা থেকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় মাসুদ কামাল বলেন, হঠাৎ করে বিপ্লবী হওয়ার ভান না করে সাদিক কায়েমের উচিত নিজের আচরণে সংযত হওয়া। তাঁর ভাষায়, “দুইটা ভোট পেয়ে মাথা খারাপ হয়ে গেছে মনে হচ্ছে। এ রকম শত লোক দেখেছি—ভোট পেয়ে হারিয়ে গেছে। যে সুনামের কথা শুনেছিলাম, সেটা ধরে রাখার চেষ্টা করুন।”
তিনি আরও বলেন, ‘বিনয়ীর অভিনয় বেশিদিন করা যায় না। প্রকৃত চেহারা বের হয়েই যায়। যে চেহারাটা আপনার ভেতরে আছে, সেটাকে আড়াল না করে চরিত্র দিয়ে বদলান। না হলে বেশি দিন ঢেকে রাখতে পারবেন না।’
মাসুদ কামাল সাদিক কায়েমের সাম্প্রতিক বক্তব্য—যেসব শিক্ষক শেখ হাসিনার পক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন, তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ে “থাকতে দেওয়া হবে না”—এই মন্তব্যকে দায়িত্বজ্ঞানহীন ও বিপজ্জনক বলে উল্লেখ করেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আপনি কে একজন শিক্ষককে বের করে দেওয়ার? ডাকসুর মেয়াদ শেষ হলে আপনি সাধারণ মানুষ। ভিন্নমত প্রকাশ করলেই তাকে তাড়িয়ে দেবেন—কার অধিকার নিয়ে?”
শিক্ষকদের ওপর ‘ফ্যাসিবাদের পক্ষে স্বাক্ষর’ করার অভিযোগ তোলার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “আপনার সাধারণ সম্পাদকও তো ছাত্রলীগের কমিটিতে ছিল। কারো ওপর চাপ ছিল কি না, কেন স্বাক্ষর করেছে—এসব না জেনে কাউকে দেশ থেকে বের করে দেওয়ার কথা বলা অশোভন।”
এ প্রসঙ্গে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দায়িত্বশীল আচরণের পরামর্শ দেন এবং শিক্ষার্থীদের উত্তেজনা নয়, যুক্তি ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে মতপ্রকাশের আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ১৭ নভেম্বর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই রায়ের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০১ জন শিক্ষক যৌথ বিবৃতি দেন। তাদের ওই অবস্থানকে ‘খুনির পক্ষে সাফাই’ আখ্যা দিয়ে সাদিক কায়েম বলেন, “বাংলাদেশে এমন শিক্ষকদের রাখা যাবে না, নির্মূল করাই আমাদের রাজনীতি।”
এ বক্তব্যই বর্তমানে রাজনৈতিক অঙ্গন, বিশ্ববিদ্যালয় মহল এবং নাগরিক সমাজে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
সাননিউজ/এও